
ক্ষমতাসীন বিজেপির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানোর পরে এলাহাবাদে এক মুসলিম নেতার বাড়ি ভেঙে দেওয়া হয়। ছবি- সংগৃহীত
যেকোনো আইন লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে ভারতের সরকার মুসলমানদের অপমানজনক শাস্তি দিচ্ছে বলে জানিয়েছে বেসরকারী মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ।
গুজরাটের খেদা জেলায় খুঁটিতে বেঁধে মুসলিম পুরুষদের মারধর করার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশের তিন দিন পরে সংস্থাটি শুক্রবার (৭ অক্টোবর) এক বিবৃতিতে এ কথা জানায়।
গত ৩ অক্টোবর নবরাত্রির উৎসবের সময় একটি গারবা সাইটে ঢিল ছোঁড়ার অভিযোগে ওই মুসলিমদের নির্যাতন করা হয়।
নির্যাতনের ভিডিওতে দেখা যায়, অভিযুক্তদের জনসাধারণের কাছে ক্ষমা চাইতে বলা হচ্ছে। এরপর খেদা পুলিশের বাসে মারতে মারতে তাদের নিয়ে যাওয়া হয়।
খেদার পুলিশ সুপার রাজেশ গাধিয়া জানান, তিনি মামলার তদন্তের নির্দেশ পেয়েছেন। তবে পুলিশ এই ঘটনায় তাদের কর্মকর্তাদের ভূমিকা স্বীকার করেছে কিনা তা তাৎক্ষণিকভাবে স্পষ্ট নয়।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ অভিযোগ করে জানায়, ওই ঘটনার ভিডিও সরকার সমর্থক কিছু টেলিভিশনের সংবাদে প্রকাশ করা হয়।
এদিকে ভিডিওগুলো সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশের পর সমালোচনা সৃষ্টি হলে পুলিশ বিষয়টির তদন্তের নির্দেশ দেয়।
সংস্থার দক্ষিণ এশিয়ার পরিচালক মীনাক্ষী গাঙ্গুলী বলেন, আধিকারিকরা স্পষ্টতই আইনের শাসনকে উপেক্ষা করে জনসাধারণের কাছে একটি বার্তা পাঠাচ্ছেন যে মুসলমানদের প্রতি বৈষম্য ও আক্রমণ করা যেতে পারে।
মানবাধিকার গোষ্ঠীটি ভারতীয় জনতা পার্টি শাসিত রাজ্যগুলোতে অভিযুক্ত মুসলমানদের বাড়িঘর ও সম্পত্তি ধ্বংসের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
এতে বলা হয়, কর্তৃপক্ষ ভবনগুলোকে অবৈধ বলে দাবি করে ধ্বংসের ন্যায্যতা প্রমাণ করতে চেয়েছিল। কিন্তু তাদের ক্রিয়াকলাপ ও বিবৃতি নির্দেশ করে যে ধ্বংসটির উদ্দেশ্য ছিল মুসলমানদের জন্য সম্মিলিত শাস্তি।
সংগঠনটি দিল্লি, মধ্যপ্রদেশের খারগোন শহর ও গুজরাটের আনন্দ ও সবরকাঁথা জেলায় এই ধরনের ধ্বংসযজ্ঞের কথা তুলে ধরে।
গাঙ্গুলি বলেন, ভারতীয় কর্তৃপক্ষ ক্রমবর্ধমানভাবে এমন আচরণ করছে যেন সংক্ষিপ্ত শাস্তি একটি রাষ্ট্রীয় নীতিতে পরিণত হয়েছে।
যদি ভারত সরকার সংখ্যালঘুদের লক্ষ্য করে বৈষম্যমূলক আইন, নীতি এবং পদক্ষেপগুলি ফিরিয়ে আনার জন্য অবিলম্বে পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে আইনের শাসন বুলডোজার ও লাঠি দ্বারা প্রতিস্থাপিত হবে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলেছে, মুসলিম সম্প্রদায়ের বাড়িঘর ও কাঠামো ভেঙে ফেলার ঘটনা নারী, শিশু, বয়স্ক ব্যক্তি এবং সেখানে বসবাসকারী প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের দুর্বলতা বাড়িয়ে দিয়েছে।