মৃত ব্যক্তির ট্যাটু সংগ্রহ ও সংরক্ষণে সিদ্ধহস্ত যে সংস্থা

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ০৪ নভেম্বর ২০২২, ২২:৫৫

সেভ মাই ইঙ্ক ফরেভার সংস্থাটির সংরক্ষণ করা মৃত ব্যক্তির ট্যাটু। ছবি- সংগৃহীত
মরণোত্তর অঙ্গ প্রত্যঙ্গ দানের অংশ হিসেবে মৃত ব্যক্তির চোখ কিংবা বিভিন্ন অংশ সংরক্ষণ করার প্রথা বেশ প্রচলিত। কিন্তু মৃত মানুষের ট্যাটু ট্যাটু সংরক্ষণের কথা হয়ত আগে তেমন কেউ শোনেননি। কিন্তু সেভ মাই ইঙ্ক ফরেভার নামের একটি সংস্থা দীর্ঘদিন ধরেই এ কাজটি করে আসছে।
ওডিটিসেন্ট্রাল নামের এক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, সেভ মাই ইঙ্ক ফরেভার নামের ক্লিভল্যান্ড-ভিত্তিক সংস্থাটি শিল্পকর্ম হিসেবেই মৃত ব্যক্তির ট্যাটু সংগ্রহ এবং সংরক্ষণের সুযোগ করে দেয়। এমনকি সংস্থাটির দাবি, বিশ্বের মধ্যে একমাত্র তারাই সঠিক প্রক্রিয়ায় ট্যাটু সংরক্ষণ করে থাকে।
কয়েক বছর আগে যখন কিছু বন্ধুদের সাথে কিছু পানীয় পান করার সময়ে তৃতীয় প্রজন্মের মর্টিশিয়ান মাইকেল শেরউড এবং তার ছেলে কাইলের মনে প্রথমবারের মতো সেভ মাই ইঙ্ক ফরেভারের ধারণাটি আসে। বন্ধুদের মধ্যে একজন মৃত্যুর পর নিজের ট্যাটু সংরক্ষণ করার ইচ্ছের প্রসঙ্গ তুলে শেরউডসের কাছে উপায় জানতে চেয়েছিলেন। প্রথমে তারা ওই প্রশ্ন শুনে হাসলেও বন্ধুটি হাল না ছাড়ায় পরবর্তীতে তারা বিষয়টি ভাবতে বাধ্য হয়।
যারা শরীরে ট্যাটু করায়, তাদের প্রত্যেকের কাছেই ব্যাপারটি গুরুত্বপূর্ণ, এমনকি ওই ব্যক্তির পরিবারের সদস্যদের কাছেও। তাই তাদের জন্য মৃত্যুর পর ট্যাটু সংগ্রহের বিষয়টি অর্থবহ। এরপর মৃত্যুর পর মৃত ব্যক্তিদের শরীরের ট্যাটু সংরক্ষণের কৌশল তৈরি করার পর সেভ মাই ইঙ্ক ফরেভার নামক সংস্থার যাত্রা শুরু হয়।
কাইল শেরউড বলেন, “আমরা সম্ভাব্য সেরা পদ্ধতিতে এটি (মৃত্যুর পর মৃত ব্যক্তিদের শরীরের ট্যাটু সংরক্ষণ) করার চেষ্টা করছি। মানুষের কাছে ট্যাটুগুলো শিল্পের পরিচায়ক। পরিবারের সদস্যদের কাছে মৃত ব্যক্তির শেষ স্মৃতি রাখার অংশ হিসেবে এতটুকু আমরা করতেই পারি।
মৃত্যুর পর মৃত ব্যক্তিদের শরীরের ট্যাটু সংরক্ষণের প্রক্রিয়া সম্পর্কে তিনি অবশ্য বিস্তারিত কিছু জানাননি। তবে পুরো প্রক্রিয়াটি বেশ জটিল এবং ৩-৪ মাস সময়সাপেক্ষ। পুরো প্রক্রিয়া যথাযথভাবে শেষ হয়ে গেলে পার্চমেন্টের মতো শিল্পকর্মের আদলে গ্রাহকদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়। পরবর্তীত এটির আলদা কোনো রক্ষণাবেক্ষণের দরকার পড়ে না।
যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে গ্রাহকদের সন্তুষ্ট করতে সেভ মাই ইঙ্ক ফরেভার পুরো দেশের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার কাজ করা প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে সম্মিলিত হয়ে কাজ করে। অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার কাজ করা প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে মৃত ব্যক্তিদের শরীরের ট্যাটু সরানোর কিটসহ ট্যাটু সরানোর উপায় সম্পর্কিত ভিডিও টিউটোরিয়াল পাঠায়৷ এরপর চামড়াগুলো ক্লিভল্যান্ডে পাঠিয়ে গোপন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সংরক্ষণ করা হয়।
সেভ মাই ইঙ্ক ফরেভার সংস্থাটির কাছে সংরক্ষিত ট্যাটুগুলোকে বইয়ের কভার বা ল্যাম্পশেডে পরিণত করার জন্যও অনেকে অনুরোধ করেছেন। তবে এ প্রসঙ্গে শেরউডসের দাবি, তারা মৃত ব্যক্তিদের পরিবারের শেষ ইচ্ছা পূরণের চেষ্টা করছে, কোনো ধরনের ফ্রিকশো তৈরি করছে না।
২০১৮ সালেসেভ মাই ইঙ্ক ফরএভারের কাছে প্রায় ১০০টি ট্যাটু সংরক্ষিত ছিল। কিন্তু তারপর থেকে অনলাইনে ট্যাটুগুলো অনেক বেশি প্রকাশ্যে আসছে। তাই সামনের দিনে এই সংখ্যা আরও বেড়ে যেতে পারে।