গলছে হিমবাহ, বন্যা-খরায় অসহায় কাশ্মিরের কৃষকরা

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ০৯ নভেম্বর ২০২২, ২১:৩৬

চলতি বছরে বন্যায় কাশ্মিরের বহু এলাকা ডুবে যায়/ফাইল ছবি
হিমালয় পর্বত থেকে আসা পানিতে গত বসন্তে যখন কাশ্মিরের কৃষক গোলাম হাসানের ক্ষেতের ফসল ডুবে গিয়েছিল, তখনও সে আশায় বুক বেঁধেছিল গ্রীষ্মে ধানে হয়তো সেই ক্ষতি পুষিয়ে যাবে।
“তবে গ্রীষ্মকালে তিনি দেখতে পান জমির মাটি শুকিয়ে যাচ্ছে, আর তাতে সেচের জন্য পানি পাওয়া যাচ্ছে না। তৃষ্ণায় মারা যায় ধানের চারা। পরে ভুট্টা ও মটরশুটি রোপণ করলেও তারও একই অবস্থা দাঁড়ায়।”
ভারত-শাসিত কাশ্মীরের দক্ষিণ অঞ্চলের কৃষক গোলাম হাসান বলেন, “আমার সকল জমি পানিতে তলিয়ে ছিল। কিন্তু এখন পানিই নেই। খরায় এই জমিতে আর কিছুই করা যাচ্ছে না।”
বিজ্ঞানীরা বহুদিন ধরেই সতর্কতা জারি করে বলেছেন, “জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে যুক্ত উষ্ণায়নে তাপমাত্রায় বিশ্বজুড়ে হিমবাহ ও বরফ গলছে। ফলে একদিকে বাড়ছে সমুদ্রের উচ্চতা। এতে হচ্ছে বন্যা ও বৃষ্টি। আবার গ্রীষ্মে বাড়ছে খরা।”
কাশ্মীরের প্রায় ৭০% জনসংখ্যা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কৃষিকাজের মাধ্যমে আয় করে। পাহাড়ি সম্প্রদায়গুলো তাদের ফসলে সেচ দেওয়ার জন্য মৌসুমী তুষারপাতের জন্য অপেক্ষা করে। তবে সাম্প্রতিক বছরে এই অবস্থা বদলে গেছে। এতে কখনও অপ্রত্যাশিত বৃষ্টিপাত আবার কখনও হিমবাহ বইছে।
গত ফেব্রুয়ারিতে নেচার জিওসায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়, বিশ্বের হিমবাহে এখন আগের ধারণার চেয়ে অনেক কম বরফ রয়েছে। “২০০০ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত অন্তত ৫.৪ ট্রিলিয়ন বরফ গলে হারিয়ে গেছে।”
শের-ই-কাশ্মীর ইউনিভার্সিটি অফ এগ্রিকালচারাল সায়েন্সেস অ্যান্ড টেকনোলজির (এসকেইউএএসটি) কৃষি অর্থনীতিবিদ ফারহাত শাহীন বলেন, “পাহাড়ে তুষার গলনের ধরণে কাশ্মিরের কৃষকরা খাপ খাইয়ে নিতে পারে কি না সেটি বড় প্রশ্ন।”
“তবে এটি অর্থনীতির সব খাতে এবং বিশেষ করে কৃষিকে প্রভাবিত করবে।"
“যদিও চরম জলবায়ু ঘটনার জন্য কাশ্মীরের কৃষি শিল্প কতটা হারিয়েছে তার কোনও নির্ভরযোগ্য পরিসংখ্যান নেই।”
শাহিন জানান, “তিনি এই অঞ্চলের দক্ষিণের কৃষকদের সাথে কথা বলেছেন। এদের অনেকেই বন্যা ও খরায় একাধিকবার ৭০% ফসল হারিয়েছেন।”