যুক্তরাষ্ট্রে ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভ: অর্ধশত শিক্ষক গ্রেপ্তার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৩ মে ২০২৪, ১১:২৮

অধ্যাপক ক্যারলিন ফলিনকে মাটিতে ফেলে হাঁটু দিয়ে চেপে ধরে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ছবি: সংগৃৃহীত
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভ চলছে। এই বিক্ষোভ ঠেকাতে পুলিশ শিক্ষার্থীদের উপর লাঠিচার্জ, টিয়ার্সসেল নিক্ষেপসহ বহু শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করেছে। শিক্ষার্থীদের এই বিক্ষোভে সমর্থণ দেয়া ৫০ শিক্ষককেও গ্রেপ্তার করেছে দেশটির পুলিশ।
সিএনএনেন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিক্ষোভের ভিডিও চিত্র ধারণ করার কারণে শিক্ষকদের গ্রেপ্তার করার ঘটনা ঘটেছে। গ্রেপ্তারকৃত শিক্ষকদের কেউ কেউ পুলিশের মারধর, হয়রানি ও হেনস্তার শিকারও হয়েছেন।
সিএনএন জানিয়েছে, এক শিক্ষার্থীকে আটক করতে গেলে পুলিশকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন আটলান্টার ইমোরি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক ক্যারলিন ফলিন। এ সময় পুলিশের পাল্টা বাধার মুখে পড়েন তিনি। ভিডিও চিত্রে দেখা যায়, ওই নারী অধ্যাপককে মাটিতে ফেলে হাঁটু দিয়ে চেপে ধরেছে এক পুলিশ সদস্য। আটকের পর এই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।
বিক্ষোভের ভিডিও ধারণ করছিলেন ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক স্টিভ তামারি। এ সময় তাকে শারীরিকভাবে হেনস্তার পর গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পুলিশের মারধরে তাঁর পাঁজর ও ডান হাত ভেঙে গেছে।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সম্প্রতি বিক্ষোভে যোগ দেন ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫ অধ্যাপক। সেই অধ্যাপকদের একজন গ্রায়েম ব্লেয়ার। গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, গ্রেপ্তার হওয়ার শঙ্কা নিয়েই বিক্ষোভে যোগ দেন তিনি ও তার সহকর্মীরা। সেদিন তিনি গ্রেপ্তার না হলেও তার অন্তত চার সহকর্মী অধ্যাপককে ধরে নিয়ে যায় পুলিশ। এ সময় পুলিশ সদস্যরা তাদের শারীরিকভাবে হেনস্তাও করেন।
মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের একটি সংগঠন আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন অব ইউনিভার্সিটি প্রফেসরস। সংগঠনটির সেন্টার ফর দ্য ডিফেন্স অব একাডেমিক ফ্রিডমের পরিচালক আইজ্যাক কামোলা গণমাধ্যমকে বলেন, অধ্যাপকদের হাতকড়া পরিয়ে ধরে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা অনেকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।
প্রসঙ্গত, গত ১৭ এপ্রিল নিউ ইয়র্কের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এই বিক্ষোভের সূচনা করেন। বিক্ষোভ থেকে তারা গাজায় যুদ্ধ বন্ধ, ইসরায়েল সরকার ও ইসরায়েলি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পর্ক ছিন্নসহ বেশ কিছু দাবি জানান।
পরে এই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে দেশটির দেড় শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। এছাড়া ইউরোপের অন্তত ১২টি দেশেও বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। এই সময়ে আমেরিকায় আড়াই হাজারের বেশি ও ইউরোপে তিন শতাধিক শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।