
গাজায় আরও শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত। ছবি: সংগৃহীত
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় একের পর এক আক্রমণ চালিয়েই যাচ্ছে ইসরায়েল। গতকাল বুধবার (২৩ জুলাই) ইসরায়েলের হামলায় গাজায় আরও ১২৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও শতাধিক মানুষ। উদ্ধারকর্মীরা যেতে না পারায় অনেক মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় আটকা পড়ে আছেন।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজার দক্ষিণ খান ইউনিসে ইসরায়েলের হামলায় নতুন করে আরও ১২৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। তাদের নিয়ে গত নয় মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা হামলায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৯ হাজার ১৪৫ জনে। এর মধ্যে শিশুর সংখ্যাই ১৬ হাজারের বেশি। আর আহত হয়েছেন ৯০ হাজার ২৫৭ জন।
হামলার পর বিভিন্ন ভবনের ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়া অনেকেই নিখোঁজ হয়েছেন। তারা মারা গেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ মনে করছে, গাজা উপত্যকাজুড়ে ধ্বংস হওয়া বাড়ির ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও ১০ হাজারেরও বেশি লোক নিখোঁজ রয়েছেন।
এদিকে, গাজা উপত্যকার নিরাপদ ঘোষিত এলাকা খান ইউনিস থেকে সাধারণ লোকজনকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ইসরাইলি বাহিনী। সোমবার তারা এই নির্দেশ দেয়। বলা হয়েছে, খান ইউনিসের পূর্বাঞ্চলে তারা বড় ধরনের অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
এক বিবৃতিতে ইসরাইলি বাহিনী বলেছে, তাদের ঘোষিত নিরাপদ অঞ্চলের পূর্ব দিকে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক রকেট হামলা হচ্ছে। ফলে ওই এলাকায় বাসিন্দাদের অবস্থান করাটা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘শিগগিরই তারা সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে যাচ্ছে। তাই খান ইউনিসের পূর্ব দিকে অবস্থানকারী লোকজনকে আল-মাওয়াসির মানবিক অঞ্চলে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।’ এর আগে দফায় দফায় বাস্তুচ্যুত হয়েছে গাজাবাসী। এখন ইসরাইলি বাহিনীর নতুন নির্দেশের পর আরেক দফা বাস্তুচ্যুত হচ্ছে।
জাতিসংঘের মতে, ইসরাইলের বর্বর আক্রমণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আর খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজার সবাই এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে ঢুকে গাজার শাসক দল হামাসের প্রাণঘাতী হামলার জবাবে উপত্যকায় প্রায় বিরামহীন হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। হামাসের ওই হামলায় নিহত হয় ১২ শর মতো ইসরায়েলি। ওইদিন দুই শতাধিক ইসরায়েলিকে বন্দি করে গাজায় নিয়ে আসেন সশস্ত্র ফিলিস্তিনিরা।
ওই হামলার প্রতিক্রিয়ায় গাজায় নির্বিচার হামলা শুরু দখলদার দেশ ইসরায়েল। তাদের হামলা থেকে রেহাই পায়নি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, মসজিদ কিংবা গির্জার মতো বেসামরিক স্থাপনা।