ইউক্রেনে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় নিহত ৩২

ইউক্রেনের উত্তরাঞ্চলের সুমি শহরের জনসমাগমপূর্ণ এলাকায় রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত ৩২ জন নিহত হয়েছেন। রবিবার সকালের এই হামলায় আহত হয়েছেন ৮০ জনেরও বেশি। একে চলতি বছরের সবচয়ে মারাত্মক হামলাগুলোর একটি হিসেবে অভিহিত করা হচ্ছে।

বার্তাসংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি হামলার নিন্দা জানিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি এই ঘটনা কঠোর আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

জেলেনস্কি বলেন, “শুধু বদমাশরাই এই ধরনের কাজ করতে পারে। সাধারণ মানুষের জীবন কেড়ে নিচ্ছে তারা। এমন দিনে হামলা চালানো হয়েছে যখন লোকেরা গির্জায় যায়। যেদিন পাম সানডে, জেরুজালেমে প্রভুর প্রবেশের উৎসব।”

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, মাটিতে মরদেহ পড়ে আছে ও রাস্তায় মাঝখানে পুড়ে যাওয়া বাস ও অন্যান্য গাড়ি।

ইউক্রেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্লাইমেনকো বলেন, “হামলার সময় নিহতরা রাস্তায়, যানবাহনে, গণপরিবহনে এবং ভবনে ছিলেন। একটি গুরুত্বপূর্ণ গির্জার উৎসবের দিনে বেসামরিক নাগরিকদের ইচ্ছাকৃতভাবে মেরে ফেলা হয়েছে। রাশিয়া যতটা সম্ভব বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করার জন্য এটি করছে।”

ইউক্রেনের সেন্টার ফর কাউন্টারিং ডিসইনফর্মেশন পরিচালনাকারী একজন নিরাপত্তা কর্মকর্তা আন্দ্রি কোভালেনকো উল্লেখ করেছেন, মার্কিন রাষ্ট্রদূত স্টিভ উইটকফের মস্কো সফরের পর এই হামলা চালানো হয়েছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ইউক্রেনের জন্য বিশেষ দূত উইটকফ শুক্রবার সেন্ট পিটার্সবার্গে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সাথে ইউক্রেন শান্তি চুক্তির সন্ধানে আলোচনা করেছেন, কারণ ট্রাম্প রাশিয়াকে ‘নড়াচড়া শুরু করতে’ বলেছিলেন।

রবিবারের হামলার পর জেলেনস্কি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে কঠোর হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, “রাশিয়া ঠিক এই ধরনের সন্ত্রাস চায় এবং এই যুদ্ধকে টেনে আনছে। আক্রমণকারীর ওপর চাপ না দিলে শান্তি অসম্ভব। আলোচনা কখনও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র এবং বিমান বোমা থামাতে পারেনি।”

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেনে পূর্ণ মাত্রার আক্রমণ শুরু করে। বর্তমানে পূর্ব ও দক্ষিণে দেশটির প্রায় ২০ শতাংশ ভূখণ্ড তাদের দখলে রয়েছে। রাশিয়ান বাহিনী সম্প্রতি পূর্বে ধীরে ধীরে অগ্রসর হচ্ছে, যদিও ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন হামলা এখন যুদ্ধে প্রাধান্য পাচ্ছে।

শনিবার রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে ইউক্রেন আগের দিনে রাশিয়ার জ্বালানি অবকাঠামোতে পাঁচটি আক্রমণ চালিয়েছে। একে তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় এই ধরনের হামলার ওপর স্থগিতাদেশের লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেছে।

ইউক্রেন এবং রাশিয়া গত মাসে একে অপরের জ্বালানি স্থাপনাগুলিতে হামলা বন্ধ করতে সম্মত হয়েছিল। তবে উভয় পক্ষই বারবার একে অপরের বিরুদ্ধে স্থগিতাদেশ ভাঙার অভিযোগ করেছে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2025 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh