যদি কখনো শোনেন গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম উঠেছে কোনো ইঁদুরের, তাহলে একটুও অবাক লাগবে না! কিন্তু এমনই এক ঘটনা ঘটেছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ কম্বোডিয়ায়।
ইঁদুরটির নাম রোনিন। এটি একটি ভূমি মাইন শনাক্তকারী ইঁদুর। আর ভূমি মাইন হচ্ছে এমন একটি বিস্ফোরক, যেটি মাটির নিচে পুঁতে রাখা হয় এবং মানুষের পা পড়লেই বিস্ফোরিত হয়।
কম্বোডিয়ায় অনেক বছর ধরে গৃহযুদ্ধ চলছিল। যুদ্ধের পরবর্তী ফলাফল হিসেবে দেশটিতে অনেক ভূমি মাইন পড়ে ছিল। এতে ছিল যেকোনো সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা।
এখনো দেশটির অন্তত এক হাজার বর্গকিলোমিটার ভূমি মাইন দিয়ে ভর্তি, আর হাজার হাজার মানুষ আহত বা অঙ্গহানি হয়েছে এসব মাইনের কারণে।
আর বিশেষ এক ধরনের প্রশিক্ষিত ইঁদুরকে এ ধরনের মাইন শনাক্তকরণ অর্থাৎ খুঁজে বের করতে ব্যবহার করা হয়। রোনিন এমই একটি আফ্রিকান জায়ান্ট পাউচড র্যাট।
২০২১ সাল থেকে রোনিন ১০৯টি ভূমি মাইন এবং ১৫টি অন্য ধরনের বিস্ফোরক খুঁজে বের করেছে। বিশ্বের প্রথম ইঁদুর হিসেবে সে একশর বেশি মাইন খুঁজে বের করে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসেও ঠাঁই পেয়েছে।
গিনেস বুক একটি অফিশিয়াল বিবৃতিতে বলেছে, রোনিন খুবই পরিশ্রমী, বন্ধুত্বপূর্ণ এবং শান্ত একটি ইঁদুর। কাজের প্রতি তার মনোযোগ ও ভালোবাসা অসাধারণ। সে মাইন খুঁজে বের করা অনেকটা খেলার মতো মনে করে। প্রতিদিন সে ৩০ মিনিট কাজ করে এবং কাজটি তার কাছে খুব উপভোগ্য।
রোনিনের প্রশিক্ষক ফ্যানি বলেন, ‘রোনিনের এ সফলতা ইঁদুরদের এক বিশেষ ক্ষমতার প্রমাণ। সে শুধু আমাদের সাহায্য করে না, সে আমাদের সত্যিকারের সহকর্মী।’
এ ছাড়া রোনিনের আগে ম্যাগাওয়া নামের আরেকটি ইঁদুর ছিল যে ৭১টি মাইন এবং ৩৮টি বিস্ফোরক শনাক্ত করেছিল। ম্যাগাওয়া অনেক খ্যাতি পেয়েছিল এবং তাকে সাহসিকতার জন্য পদকও দেওয়া হয়েছিল। তবে ২০২২ সালে সে বার্ধক্যজনিত কারণে মারা যায়।
রোনিন এখন কম্বোডিয়ার মানুষের কাছে এক নায়ক। তার কাজের জন্য অনেক মানুষ আজ নিরাপদ জীবন কাটাচ্ছে।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
© 2025 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh