জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎসের নিরাপত্তা বলয় ভেদ করে এবং তাকে জড়িয়ে ধরার ঘটনায় এক মাদকাসক্ত ব্যক্তিকে ৪ হাজার ৫০০ ইউরো (প্রায় ৬ লাখ টাকা) জরিমানা করা হয়েছে। একই সঙ্গে তার ড্রাইভিং লাইসেন্স দুই বছর ছয় মাসের জন্য বাতিল করা হয়েছে।
রাশিয়া টুডেতে বুধবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের মে মাসে ফ্রাঙ্কফুর্টে ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ২৫তম বার্ষিকী উদযাপনের পর শলৎস যখন বার্লিনে ফিরছিলেন তখন এই ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত ব্যক্তি, যার নাম প্রকাশ করা হয়নি- একটি কালো রঙের অডি গাড়ি চালিয়ে শলৎসের গাড়িবহরে অনুপ্রবেশ করেন। ফ্রাঙ্কফুর্ট বিমানবন্দরে পৌঁছে তিনি গাড়ি থেকে নেমে শলৎসের সঙ্গে করমর্দন করেন এবং তাকে আলিঙ্গন করেন। সঙ্গে সঙ্গেই পুলিশ তাকে আটক করে।
আদালতে অভিযুক্ত ব্যক্তি দাবি করেন, তিনি ভুলে চ্যান্সেলরের গাড়িবহরে যোগ দিয়েছিলেন। এ ঘটনার সময় তিনি কোকেইনের প্রভাবে ছিলেন। এর আগে টানা দুই দিন তিনি পার্টি করেছিলেন। আদালত তাকে মাদকাসক্ত অবস্থায় গাড়ি চালানো এবং চ্যান্সেলরের গাড়িবহরে অনধিকার প্রবেশের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করেছে।
শলৎস এই ঘটনার পর বলেন, “মানুষের শুভেচ্ছা জানানো আমার জন্য নতুন কিছু নয়। আমি এই ঘটনাকে নাটকীয় মনে করিনি।”
চ্যান্সেলরের মুখপাত্র ওল্ফগ্যাং বুশনারও জানান, ঘটনাটির সময় শলৎস নিজেকে হুমকির মুখে মনে করেননি।
তবে এই নিরাপত্তা ভেদ ঘটনার পর জার্মান রাজনীতিতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিশেষ করে সাম্প্রতিক সময়ে রাজনীতিবিদদের ওপর হামলার প্রেক্ষাপটে।
২০২৪ সালে, বার্লিনের অর্থনীতি বিষয়ক মন্ত্রী ও সাবেক মেয়র ফ্রান্সিসকা গিফাই একটি লাইব্রেরিতে এক ব্যক্তির দ্বারা হামলার শিকার হন। ৭৪ বছর বয়সী হামলাকারী তাকে পেছন থেকে একটি ভারী বস্তু ভর্তি ব্যাগ দিয়ে আঘাত করেন। গিফাই হালকা আঘাত পান এবং হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নেন। হামলাকারী মানসিক রোগে আক্রান্ত এবং বর্তমানে একটি মানসিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
একই বছর, ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্য ম্যাথিয়াস একে জার্মানির ড্রেসডেনে নির্বাচনী পোস্টার লাগানোর সময় চারজন তরুণের দ্বারা হামলার শিকার হয়ে গুরুতর আহত হন। তার অস্ত্রোপচারেরও প্রয়োজন হয়েছিল।
এছাড়া, গ্রিন পার্টির রাজনীতিবিদ ইয়ভোন মোসলার ড্রেসডেনে নির্বাচনী প্রচারণার সময় দুই ব্যক্তির দ্বারা ধাক্কা খাওয়ার এবং থুতু নিক্ষেপের শিকার হন।
জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস এই হামলাগুলোকে গণতন্ত্রের প্রতি হুমকি বলে অভিহিত করেছেন এবং বলেছেন, “এই ধরনের সহিংসতা কখনোই মেনে নেওয়া যায় না।"
ঘটনার প্রেক্ষিতে, জার্মান রাজনীতিতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করার আহ্বান জানানো হয়েছে। বিশেষ করে নির্বাচনী প্রচারণার সময় রাজনীতিবিদদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরও সক্রিয় ভূমিকা পালনের তাগিদ দেওয়া হয়েছে।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
বিষয় : জার্মানি মাদকাসক্ত চ্যান্সেলর
© 2025 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh