
বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস সংক্রমণের মধ্যেও কলকারখানা চালু রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে পরিবর্তিত পরিস্থিস্থিতে তা পরে বিবেচনায় নেয়া হবে।
রাজধানীর বিজয়নগরে শ্রম ভবনের সম্মেলন কক্ষে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ানের সভাপতিত্বে সরকার, মালিক ও শ্রমিক ত্রিপক্ষীয় সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়।
গতকাল শনিবার অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় শ্রমিকদের করোনাভাইরাস সম্পর্কে আরো সচেতনতা বৃদ্ধির উপর জোর দেয়া হয়। সভায় সরকার মালিক-শ্রমিক সবাইকে বৈশ্বিক এই মহামারি মোকাবিলায় নিজ নিজ অবস্থান থেকে উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানানো হয়। বিশেষ করে কারখানায় শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি সরবরাহ করার জন্য মালিকপক্ষকে অনুরোধ করা হয়।
সভায় মালিকপক্ষ থেকে জানানো হয় বৈশ্বিক অবস্থা বিবেচনায় ক্রেতারা ইতোমধ্যে অনেক ক্রয়াদেশ বাতিল করেছেন। এতে উৎপাদন ও রফতানিতে বিরূপ প্রভাব পড়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকের আহ্বানের দাবি জানান।
কারখানা পর্যায়ে শ্রমিকদের মাঝে করোনাভাইরাস সংক্রমণের কোনো লক্ষণ এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি বলে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদফতর থেকে সভায় তথ্য উপস্থাপন করা হয় এবং সারাদেশের কারখানা পর্যায়ে এক লাখ পোস্টার ও লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে বলে জানানো হয়।
পরবর্তীতে পরিস্থিতি বিবেচনায় সার্বিক বিষয়ে সরকার মালিক-শ্রমিক আলোচনা অব্যাহত রাখবে বলে সভায় সিদ্ধান্ত হয়।
সভায় বিকেএমইএ’র সভাপতি এ কে এম সেলিম ওসমান, আবদুস সালাম মুর্শিদী, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. জাফর উদ্দীন, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব কে. এম. আলী আজম, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব লোকমান হোসেন মিয়া, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদফতরের মহাপরিদর্শক শিবনাথ রায়, শ্রম অধিদফতরের মহাপরিচালক এ কে এম মিজানুর রহমান, বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের সভাপতি কামরান টি রহমান, বিজিএমইএ’র সভাপতি ড. রুবানা হক, এফবিসিসিআইয়ের সহ-সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান, বাংলাদেশ লেদার গুডস ম্যানুফ্যাকচারার অ্যান্ড ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সাইফুল ইসলাম ও জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি ফজলুল হক মন্টুসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দফতরের পদস্থ কর্মকর্তা এবং মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
কভিড-১৯ সংক্রমণ রোধে ইতোমধ্যে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদফতর থেকে সব কারখানায় কর্মীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পত্র প্রেরণ করা হয়েছে।
কর্মক্ষেত্রে নিয়মিত বিরতিতে হাত ধোয়া, আইইডিসিআর কর্তৃক নির্দেশিত পন্থায় হাঁচি-কাশি দেয়া, করমর্দন বা কোলাকুলি থেকে বিরত থাকা, জনসমাগম পরিহার করা সর্বোপরি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকার বিষয়ে কর্মীগণকে উৎসাহিত করা এবং এ বিষয়ে সহযোগিতা প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে অনুরোধ জানানো হয়।- বাসস