
বেক্সিমকো । ছবি: সংগৃহীত
বেক্সিমকো লিমিটেডের গাজীপুর ইউনিটেডের চারটি কারখানায় ‘লে-অফ’ ঘোষণা করা হয়েছে। মঙ্গলবার গাজীপুরের সারাব এলাকায় মাইকিং করে এবং নোটিশ দিয়ে বিষয়টি জানায় কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ। এছাড়া ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত এ কোম্পানির ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ বুধবার থেকে এসব কারখানার উৎপাদন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
লে-অফ ঘোষণা করা হয়েছে গাজিপুরের বেক্সিমকো ইন্ডস্ট্রিয়াল পার্কে বেক্সিমকো লিমিটেডের ইয়ার্ন ইউনিট-২, টেক্সটাইল, ডেনিম ও নিটিং ডিভিশনে।
এর আগে, তৈরি পোশাক রপ্তানির ক্রয়াদেশ না থাকা ও কাঁচামাল আমদানির জন্য ঋণপত্র খুলতে না পারায় ১৫ ডিসেম্বর থেকে বেক্সিমকো শিল্পপার্কের ১২টি কারখানা লে-অফ বা বন্ধ ঘোষণা করেছে বেক্সিমকো গ্রুপ কর্তৃপক্ষ।
শ্রমিক অসন্তোষের মধ্যে এর আগে বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের ১২ কারখানায় লে-অফ ঘোষণা করা হয়েছিল। এর মধ্যে ১১টি বস্ত্র ও পোশাক খাতের কারখানাও রয়েছে। এরপর কারখানা এখনো খোলা হয়নি।
গত ২৮ জানুয়ারি সচিবালয়ে উপদেষ্টা কমিটির এক বৈঠকে লে-অফ থাকা বেক্সিমকোর ১২টি কারখানা একেবারে বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
তবে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, শাইনপুকুর সিরামিকস ও বেক্সিমকো লিমিটেডের কোনো কারখানা এতদিন লে-অফ করা হয়নি।
কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের দেয়া নোটিশে বলা হয়েছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে কারখানায় পর্যাপ্ত কাজ না থাকার কারণে সরকার কর্তৃক গঠিত বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর শ্রম ও ব্যবসায় পরিস্থিতি পর্যালোচনা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির ১৫ ডিসেম্বরের সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের বাংলাদেশ এক্সপোর্ট ইমপোর্ট কোম্পানি লিমিটেডে (বেক্সিমকো লিমিটেড-ইয়ান-২, টেক্সটাইল, ডেনিম ও নিটিং), কর্মরত সব কর্মকর্তা–কর্মচারী ও শ্রমিকদের বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬–এর সংশ্লিষ্ট ধারা মোতাবেক লে-অফের সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো। এই সিদ্ধান্ত ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে কার্যকর হবে। লে-অফ চলাকালে লে-অফকৃত কর্মকর্তা–কর্মচারী ও শ্রমিকদের আইন অনুযায়ী মজুরি বা বেতন দেওয়া হবে। লে-অফ থাকাকালে লে-অফকৃত কর্মকর্তা–কর্মচারী ও শ্রমিকের সশরীর কারখানায় এসে হাজিরা দেওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই।
ওই ঘোষণার পর বুধবার সকাল থেকে কোনো শ্রমিক কারখানা এলাকায় আসেননি। এলাকায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিরাজ করছে। তবে শিল্প পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা বেক্সিমকোসহ আশপাশের কারখানা এলাকায় মোতায়েন রয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে বেক্সিমকো গ্রুপের কোম্পানিগুলোতে অস্থিরতা চলছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস-চেয়ারম্যান। ১৩ আগস্ট গ্রেপ্তার হন সালমান এফ রহমান। তিনি বর্তমানে কারাগারে আছেন।