Logo
×

Follow Us

Unknown

হে আল্লাহ তুমি আমাদের দোয়া কবুল করো

Icon

মাহমুদ সালেহীন খান

প্রকাশ: ০৭ মে ২০২০, ০৯:৫৬

হে আল্লাহ তুমি আমাদের দোয়া কবুল করো

দোয়া কবুলের কয়েকটি শর্ত রয়েছে। যে শর্তগুলো পূরণ না হলে দোয়া কবুল হবে না।  

অনেক মানুষ রয়েছে যারা নিজেদের মাঝে ও আল্লাহর মাঝে মৃত ব্যক্তিদেরকে মাধ্যম বানিয়ে তাদেরকে ডাকে। তাদের ধারণা যেহেতু তারা পাপী ও গুনাহগার, আল্লাহর কাছে তাদের কোনো মর্যাদা নেই; তাই এসব নেককার লোকেরা তাদেরকে আল্লাহর নৈকট্য হাছিল করিয়ে দেবে এবং তাদের মাঝে ও আল্লাহর মাঝে মধ্যস্থতা করবে। 

এ বিশ্বাসের কারণে তারা এদের মধ্যস্থতা ধরে ও আল্লাহর পরিবর্তে এ মৃত ব্যক্তিদেরকে ডাকে। অথচ আল্লাহ বলেছেন, ‘আর আমার বান্দারা যখন আপনাকে আমার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে (তখন আপনি বলে দিন) নিশ্চয় আমি নিকটবর্তী। দোয়াকারী যখন আমাকে ডাকে তখন আমি ডাকে সাড়া দিই।’( বাকারা, আয়াত: ১৮৬)

দোয়া কবুলের প্রধান শর্ত হচ্ছে আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে না ডাকা। রাসূল (সা:) ইবনে আব্বাস (রা.) কে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘যখন প্রার্থনা করবে তখন শুধু আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করবে এবং যখন সাহায্য চাইবে তখন শুধু আল্লাহর কাছে সাহায্য চাইবে।’(সুনানে তিরমিযি (২৫১৬)

আল্লাহ কোরআনে বলেন, ‘আর নিশ্চয় মসজিদসমূহ আল্লাহরই জন্য। কাজেই তোমরা আল্লাহর সাথে অন্য কাউকে ডেকো না।’ (জিন : ১৮] 

আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসুল (সা.) কে বলতে শুনেছি, মহান আল্লাহ বলেন, ‘হে আদম সন্তান! তুমি যত দিন পর্যন্ত আমার কাছে দোয়া করতে থাকবে ও ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাকবে, আমি তত দিন তোমার গুনাহ মাফ করতে থাকব, তুমি যা-ই করে থাকো আমি সেদিকে ভ্রুক্ষেপ করব না। হে আদম সন্তান! তোমার গুনাহ যদি আকাশের উচ্চতা পর্যন্তও পৌঁছে যায়, অতঃপর তুমি আমার কাছে ক্ষমা চাও, তবু আমি তোমাকে ক্ষমা করব, আমি সেদিকে ভ্রুক্ষেপ করব না। হে আদম সন্তান! তুমি যদি পৃথিবী পরিমাণ গুনাহ নিয়ে আমার কাছে আসো ও আমার সাথে কোনো কিছুকে শরিক না করে থাকো, তাহলে আমিও সমপরিমাণ ক্ষমা নিয়ে তোমার কাছে আসব।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ৩৫৪০)

দোয়া কবুলের কয়েকটি শর্তের কথা আলোচনা করবো। যে শর্তগুলো পূরণ করে মহান আল্লাহর কাছে দোয়া করলে নিশ্চয়ই আল্লাহ দোয়া কবুল করবেন।

দুই হাত তুলে দোয়া করা 

রাসূল (সা.) বলেছেন, নিঃসন্দেহে আল্লাহ তা’আলা অতি মহানুভব ও লজ্জাশীল। বান্দা যদি দুইহাত তুলে তাঁর নিকট প্রার্থনা করে তবে শুন্যহাতে তাকে ফিরিয়ে দিতে তিনি লজ্জাবোধ করেন। (তিরমিজী, আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ, ইমাম আলবানী রহ. হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন। সহীহুল জামে, ১/১৭৫৭, আত তারগীব ওয়াত তারহীব,২/ ২৭২)। রাসূল (সা.) বৃষ্টির সময় ও বদরের প্রান্তরে হাত তুলে দোয়া করেছেন।

দৃঢ় বিশ্বাস নিয়ে দোয়া করা

আল্লাহর প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস ও ভাল ধারণা নিয়ে দোয়া করতে হবে। আল্লাহ বান্দার দোয়া ফিরিয়ে দিবেন না।  রাসূল (সা.) বলেছেন, “আল্লাহ বলেন, ‘আমার বান্দা আমার প্রতি যেমন ধারণা করে আমি তেমন।” (বুখারী :৭৪০৫) (মুসলিম ৪৬৭৫)

আবু হুরায়রা (রাঃ) এর বর্ণনায় এসেছে, রাসূল (সা.) বলেন, তোমরা দোয়া কবুল হওয়ার দৃঢ় বিশ্বাস (একীন) নিয়ে আল্লাহর কাছে দোয়া কর। (তিরমিযি, ২৪৫) 

যে ব্যক্তি আল্লাহর প্রতি ভাল ধারণা পোষণ করে আল্লাহ তার উপর সব কল্যাণ ঢেলে দেন, তাকে উত্তম অনুগ্রহে ভূষিত করেন, উত্তম অনুকম্পাও তার উপর ছড়িয়ে দেন।

পানাহার ও পোশাক-পরিচ্ছদ হালাল উপার্জন থেকে হওয়া

খাদ্য-পানীয় ও পোশাক-পরিচ্ছদ হালাল ও পবিত্র উপার্জন থেকে হওয়া দোয়া কবুল হওয়ার অন্যতম শর্ত। এই কারণে রাসূল (সা.) বলেছেন, কিভাবে তার দোআ কবুল হবে? তার খাদ্য হারাম, পানীয় হারাম, পরিধেয় বস্ত্র হারাম? (সহীহ মুসলিম, হা/১০১৫, আবু হুরাইরা রা. হতে বর্ণিত)

দোয়াতে মনোযোগ থাকা

দোয়াকালে দোয়াকারীর মনোযোগ থাকবে ও যাঁর কাছে প্রার্থনা করা হচ্ছে তাঁর মহত্ত্ব ও বড়ত্ব অন্তরে জাগ্রত রাখবে।  রাসুল (সা.) বলেন, তোমরা জেনে রাখ, আল্লাহ কোনো উদাসীন অন্তরের দোয়া কবুল করেন না। (তিরমিযি (৩৪৭৯), সহিহুল জামে (২৪৫)।

সীমা লঙ্ঘন না করা

দোয়ার ক্ষেত্রে কোনো সীমা লঙ্ঘন না করা। কেননা আল্লাহ তাআলা দোয়ার মধ্যে সীমালঙ্ঘন করাটা অপছন্দ করেন। আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা বিনীতভাবে ও গোপনে তোমাদের রবকে ডাক; নিশ্চয় তিনি সীমালঙ্ঘনকারীদের পছন্দ করেন না।’ (আরাফ, আয়াত: ৫৫] ।

আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারীর দোয়া কবুল হয় না

সহিহ মুসলিমে (২৭৩৬) আরো এসেছে, বান্দার দোয়া ততক্ষণ পর্যন্ত কবুল করা হয় যতক্ষণ পর্যন্ত না বান্দা কোন পাপ নিয়ে কিংবা আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করা নিয়ে দোয়া করে। 


Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫