Logo
×

Follow Us

প্রবাস

লিবিয়ায় অপহরণ শিকার নাটোরের ৪ যুবক, স্বজনদের আহাজারি

Icon

নাটোর প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৭ জুন ২০২৪, ১২:১৪

লিবিয়ায় অপহরণ শিকার নাটোরের ৪ যুবক, স্বজনদের আহাজারি

অপহরণের শিকার চার যুবক। ছবি: নাটোর প্রতিনিধি

নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার সংসারে সচ্ছলতা ফেরাতে দুই বছর আগে লিবিয়ায় পাড়ি জমান চার যুবক। লিবিয়া যেতে নিজেদের শেষ সম্বল জমি, গরু-ছাগল বিক্রি করে এমন কি বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে বিদেশে পাঠান তাদের পরিবার।

দুই বছর যেতে না যেতেই যেন সব স্বপ্ন ভেঙ্গে গেল। গত কয়েক দিন আগে লিবিয়ায় অপহরণের শিকার হন ওই চার যুবক। তাদের জিম্মি করে পরিবারের কাছ থেকে চাওয়া হচ্ছে ৪০ লাখ টাকা মুক্তিপণ। এমনকি জিম্মি যুবকদের শারীরিক নির্যাতনের ভিডিও পাঠানো হচ্ছে পরিবারের কাছে। মুক্তিপণের টাকা না দিলে তাদের হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। এমন খবরে জিম্মি যুবকদের বাড়িতে চলছে স্বজনদের আহাজারি। কান্না আর দুচিন্তায় ভেঙ্গে পড়েছেন অসহায় পরিবারগুলো।

জিম্মি ৪ যুবক হলেন- নাটোর জেলার গুরুদাসপুর উপজেলার বিয়াঘাট ইউনিয়নের চরপাড়া গ্রামের শাজাহান প্রামাণিকের ছেলে সোহান প্রামাণিক (২০), তয়জাল শেখের ছেলে সাগর হোসেন (২৪), মৃত শুকুর আলীর ছেলে নাজিম আলী (৩২) এবং ইনামুল ইসলামের ছেলে বিদ্যুৎ হোসেন (২৬)।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, দুই বছর আগে নিজ দেশ ছেড়ে প্রবাস জীবনে পাড়ি দেন তারা। প্রবাসে গিয়ে শ্রমিকের কাজ শুরু করেন। প্রতিমাসে ১৫/২০ হাজার টাকা দেশে পরিবারকে পাঠান। কিন্তু গত ২ জুন লিবিয়া থেকে চার প্রবাসীর পরিবারের কাছে ইমো নম্বরে কল আসে। রিসিভ করতেই বাংলা ভাষায় চার যুবককে অপহরণের কথা জানিয়ে ৪০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন অপহরণকারীরা। এ মুক্তিপণ না দেওয়া হলে চারজনকে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়। এ খবরের পর থেকে তাদের পরিবার কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। জিম্মিদের শারীরিক নির্যাতনের ভিডিও পরিবারের ইমো নাম্বারে পাঠায়। টাকা দিতে না পারলে নির্যাতনের মাত্রা প্রতিদিন বাড়তে থাকবে বলে জানিয়েছেন অপহরণকারীরা।

জিম্মির কথা স্বীকার করে সোহানের বাবা শাজাহান প্রামাণিক বলেন, কয়েক দিন আগে তার ইমো নম্বরে লিবিয়া থেকে কল আসে। ছেলে সোহান বলেন, আমাকে অপহরণ করে নিয়ে আসছে। ১০ লাখ টাকা দিতে হবে, না দিলে মেরে ফেলবে আমাকে। সোহানকে একটি কক্ষে বেঁধে রেখে মারধর করে ভিডিও পাঠায় আমাদের কাছে। ৪ লাখ টাকা খরচে লিবিয়ায় পাঠিয়েছিলাম। এখনো সেই ঋণ শোধ করতে পারেননি। মুক্তিপণের টাকা কোথায় থেকে দেব।

জিম্মি আরেক যুবক নাজিমের স্ত্রী নাদিরা বেগম বলেন, সংসারে সচ্ছলতা ফেরানোর জন্য স্বামীকে ৪/৫ লাখ টাকা ঋণ করে লিবিয়া পাঠায়। সেই ঋণের টাকাই শোধ করতে পারিনি। এখন কি করে মুক্তিপণের এত টাকা জোগার করবো।

বিয়াঘাট ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান সুজা জানান, লিবিয়ায় তার গ্রামের চার যুবককে অপহরণ করা হয়েছে বলে জেনেছি। যুবকরা যেন দেশে ফিরতে পারেন সেজন্য সরকারের সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি।

গুরুদাসপুর থানার কর্মকর্তা (ওসি) মো. উজ্জ্বল হোসেন বলেন, লিবিয়ায় অপহরণের শিকার চার যুবকের কথা শুনে আমরা তাদের বাড়িতে যাই। বাড়িতে স্বজনরা আহাজারি করছেন। ইতিমধ্য আমরা বিষয়টি আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫