ইউরোপে রেকর্ড সংখ্যক আশ্রয় চাওয়ার আবেদন করেছে বাংলাদেশিরা। শুধু গত মার্চ মাসেই আবেদন জমা পড়েছে চার হাজারের বেশি। যা গত এক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। বর্তমানে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশি আশ্রয়প্রার্থীদের ২২ হাজারেরও বেশি আবেদন নিষ্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) অ্যাসাইলাম আবেদন তদারককারী প্রতিষ্ঠানের এক প্রতিবেদনে সম্প্রতি এসব তথ্য উঠে এসেছে।
ইউরোপের কাছের দেশ না হয়েও আশ্রয়প্রার্থীদের শীর্ষ ১০ দেশের তালিকায় বেশ কয়েক বছর ধরেই আছে বাংলাদেশ। সূত্র বলছে, মূলত আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ ঘুরে অবৈধভাবে ইউরোপে ঢোকেন এসব আশ্রয়প্রার্থীরা। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাগর পাড়ি দিয়ে বা বিপজ্জনক পথ পেরিয়ে তারা ইউরোপে প্রবেশ করেন। এরপর আশ্রয়ের আবেদন করেন। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তাদের জন্য ইউরোপে আশ্রয় পাওয়ার যৌক্তিকতা প্রমাণ করা কঠিন হয়।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত মার্চে বাংলাদেশি আবেদনকারীদের মধ্যে ৫১ শতাংশই ইতালিতে আশ্রয় চেয়েছেন। ২৩ শতাংশ আশ্রয় চেয়েছেন ফ্রান্সে। এ ছাড়া ১৪ শতাংশ রুমানিয়ায়, ৬ শতাংশ অস্ট্রিয়ায় এবং ২ শতাংশ গ্রিসে আশ্রয় চেয়েছেন।
গত এক বছরে বাংলাদেশি আবেদনকারীদের যেসব আবেদন নিষ্পত্তি হয়েছে তার মধ্যে মাত্র ৩ শতাংশ ইউরোপে আশ্রয় পেয়েছেন। অর্থাৎ আবেদনকারীদের ৯৭ শতাংশই ইউরোপে থাকার অধিকার বা প্রয়োজনীয়তা প্রমাণ করতে পারছেন না। এ ক্ষেত্রে ইইউয়ের নীতি হলো যাদের বৈধভাবে থাকার অধিকার নেই তাদের নিজ দেশে ফিরে যেতে হবে।
ইইউ অ্যাসাইলাম আবেদন তদারককারী প্রতিষ্ঠানের তথ্য কর্মকর্তা অ্যান্ড্রু ম্যাককিনালি বলেন, কোনো ব্যক্তি কী কারণে আশ্রয়ের আবেদন করছেন, তা স্বাধীনভাবে যাচাইয়ের ক্ষমতা আমাদের প্রতিষ্ঠানের নেই। আবেদনকারীরা যে দেশে আশ্রয়ের আবেদন করবেন, সেই দেশের কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব তা খতিয়ে দেখা।
ইইউ’র তথ্যানুযায়ী, ২০২২ সালের এপ্রিল থেকে এ বছরের মার্চ পর্যন্ত ১২ মাসে ইইউ প্লাস অঞ্চলে আশ্রয়ের আবেদনের সংখ্যা ২০১৫-১৬ সালের শরণার্থী সংকটের পর থেকে সর্বোচ্চ। গত মার্চে প্রায় ৯২ হাজার আবেদন জমা পড়েছে। সবচেয়ে বেশি আবেদন করেছেন সিরিয়া, আফগানিস্তান, ভেনিজুয়েলা, কলম্বিয়া ও তুর্কির নাগরিকরা।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
© 2023 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh