Logo
×

Follow Us

শিল্প-সাহিত্য

ভাষাশহীদ আবুল বরকত স্মৃতি জাদুঘর ও সংগ্রহশালা

Icon

গাজী মুনছুর আজিজ

প্রকাশ: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১০:৪৭

ভাষাশহীদ আবুল বরকত স্মৃতি জাদুঘর ও সংগ্রহশালা

ভাষাশহীদ আবুল বরকত স্মৃতি জাদুঘর ও সংগ্রহশালা। ছবি: গাজী মুনছুর আজিজ

ভাষা আন্দোলনে শহীদ হয়েছিলেন আবুল বরকত। তিনি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র। তার নামেই গড়ে তোলা হয়েছে ‘ভাষা শহীদ আবুল বরকত স্মৃতি জাদুঘর ও সংগ্রহশালা’। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পলাশীর মোড়ে শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের ভেতরে এ জাদুঘর স্থাপিত।

বরকতের দুর্লভ চিঠিপত্র, বরকতের রক্তমাখা জামা-কাপড় ও ভাষা আন্দোলনের নানা ছবি ও স্মৃতি এখানে সংরক্ষণ করা আছে। পাশাপাশি আছে একটি পাঠাগার। ২০১২ সালের ২৫ মার্চ এ জাদুঘর ও সংগ্রহশালার উদ্বোধন করেন ভাষাসৈনিক ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বিচারপতি হাবিবুর রহমান।

এ স্মৃতি জাদুঘর ও সংগ্রহশালা ঘুরে দেখলে ভাষা আন্দোলনের নানা ইতিহাস জানা যাবে। ভাষা আন্দোলনের প্রকৃত ইতিহাস মানুষকে জানাতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে এ জাদুঘর ও সংগ্রহশালা স্থাপন করা হয়েছে।

জাদুঘরটিতে আছে ভাষা আন্দোলনের বেশ কিছু দুর্লভ আলোকচিত্র, ভাষাশহীদ আবুল বরকতের বিভিন্ন সময়ে আলোকচিত্র, তার মা হাসিনা বিবি, বড় বোন শামসুন্নাহার, ছোট ভাই আবুল হাসনাত, মেজো বোন নুরুন্নাহারসহ পারিবারিক বিভিন্ন আলোকচিত্র। আছে ১৯৪৮ সালের ২ সেপ্টেম্বর ও ১৯৪৯ সালের ২ জুলাই বাবাকে লেখা আবুল বরকতের দুটি চিঠি। এ ছাড়া তার ব্যবহৃত তিনটি কাপ ও ছোটবেলার একটি খেলনা রয়েছে। রয়েছে আবুল বরকতের মরণোত্তর একুশে পদক, বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রির সনদ ও মার্কশিট।

জাদুঘরে প্রবেশ করলে দেখা যাবে দেওয়ালে সাঁটানো ভাষা আন্দোলনের বিভিন্ন পত্রিকার অংশবিশেষ, বিভিন্ন সময়ের আন্দোলনভিত্তিক নানা আলোকচিত্র। এ ছাড়া জাদুঘরটির শোকেসে দেখা যাবে ভাষা আন্দোলন ও বরকতের বিভিন্ন নিদর্শন। জাদুঘরটির দোতলায় রয়েছে একটি পাঠাগার। ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধসহ নানা বই দিয়ে সাজানো এ পাঠাগার।

ভাষাশহীদ আবুল বরকত ১৯২৭ সালে মুর্শিদাবাদ জেলার ভরতপুর থানার বাবলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার ডাক নাম আবাই। তিনি ১৯৪৫ সালে তালিবপুর হাইস্কুল থেকে ম্যাট্রিক ও ১৯৪৭ সালে বহরমপুর কৃষ্ণনাথ কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাস করেন। দেশ বিভাগের পর ১৯৪৮ সালে তিনি ঢাকায় আসেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন।

১৯৫১ সালে তিনি একই বিভাগ থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে স্নাতক (সম্মান) ডিগ্রি লাভ করেন। বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি বিকেলে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হোস্টেল প্রাঙ্গণে বিক্ষোভরত ছাত্র-জনতার ওপর পুলিশ গুলিবর্ষণ করে।

আবুল বরকত গুলিবিদ্ধ হয়ে ঐ রাতে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের অপারেশন থিয়েটারে শাহাদত বরণ করেন। তাকে আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হয়। মাতৃভাষা বাংলার জন্য আত্মোৎসর্গের স্বীকৃতি স্বরূপ তাকে ২০০০ সালে একুশে পদকে (মরণোত্তর) ভূষিত করা হয়।

জাদুঘরটি শনিবার থেকে বুধবার সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত খোলা থাকে। দুপুর ১টা থেকে ২টা পর্যন্ত বিরতি থাকে। শুক্রবার ও সরকারি ছুটির দিন বন্ধ থাকে। ছবি: লেখক

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫