
কবিতা। প্রতীকী ছবি
ঘোষণা
আসলে শেষ মুহূর্ত চলে এসেছে
আমি কোনো শেষ-উইল রেখে যাচ্ছি না
শুধু কলমটা, আমার মায়ের কাছে
বীর নই আমি,
বীরহীন এই যুগে
নেহাতই মানুষ হতে চাই আমি
স্থির দিগন্ত
জীবিত ও মৃতদের দুই সারিতে ভাগ করছে
আমি শুধু আকাশকেই বেছে নিতে পারি
মাটিতে হাঁটু গেড়ে নতজানু হবো না আমি
যাতে জল্লাদকে লম্বা না দেখায়
ভালো বরং স্বাধীন-বাতাসটুকু আঁকড়ে ধরা
নক্ষত্রের মতো ক্ষত থেকে গড়িয়ে পড়বে
রক্ত-লাল ভোর
মৃতদের জন্য সমবেত প্রার্থনা
চার জুনের শিকার হওয়া মানুষদের জন্য
জীবিতরা নয়, শুধু মৃতরা
কেয়ামতের-লাল-আকাশের নিচ দিয়ে
যাচ্ছে দলে দলে ভাগ হয়ে
দুর্ভোগ শুধু দুর্ভোগেরই পথ দেখায়
ঘৃণার অবশেষে থাকে শুধু ঘৃণাই
শুকিয়ে কাঠ ঝরনা, অগ্নিকাÐ ছড়াচ্ছে দাউ দাউ করে
পেছনে ফেলে আসা পথ আরও বেশি দূরে
দেবতা নয়, শুধু শিশুরা
অগণন হেলমেটের ঠোকাঠুকির মাঝে
প্রার্থনামন্ত্র জপছে তাদের
মায়েরা আলোর জননী
অন্ধকার জন্ম দেয় মায়েদের
পাথর গড়ায়, উল্টো দিকে ছোটে ঘড়ির কাঁটা
এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেছে সূর্য গ্রহণ
তোমাদের দেহ নয়, শুধু তোমাদের আত্মা
ভাগ করে নেবে প্রতিবছর একই জন্মদিন
সমান বয়সী তোমরা সবাই
সমস্ত মৃতের জন্য প্রেম গড়ে তুলেছে
চিরকালীন এক বন্ধন
পরস্পরকে তোমরা কী গভীর করে জড়িয়ে ধরেছো বুকে
অগণন মৃতের ওই তালিকায়
স্থান
গোল হয়ে বসে আছে শিশুরা
ঘুরে ঘুরে নামা উপত্যকার মাথায়
কী আছে নিচে না জেনেই
এক স্মরণ-স্তম্ভ
শহরের চত্বরে
কালো বৃষ্টি
রাস্তা জনহীন
নর্দমা পথ দেখাচ্ছে
আরেক শহরের
গোল হয়ে বসে আছি আমরা
মৃত এক উনুন ঘিরে
কী আছে এর ওপরে না জেনেই
উজ্জ্বল আরশি
মদে চুর মধ্যরাতে
ক্ষেপে ওঠে সত্য-শিখা
ফিরে তাকানোর জায়গা একটা
যার বাড়ি নেই
কেন এত ঊর্ধ্বে ভেসে ওঠে জানালাগুলো
মৃত্যু নিয়ে ক্লান্ত তুমি
জীবন নিয়ে ক্লান্ত পথ
অগ্নি-শিখার মতো লাল ওই সময়ে
দাবা খেলতে খেলতে একটি জাতির সঙ্গে
কেউ একজন দিনে ঘুমায় আর রাতে ছুটে বেড়ায়
এ-ই সব নয়
তোমার ঘুম খুঁড়ে খুঁড়ে লোকজন
নীল হয়ে যায়
সকালটা ক্লান্ত তোমাকে নিয়ে
কথা নিয়ে ক্লান্ত উজ্জ্বল আরশিটা
ভাবো প্রেমের কথা
আর তুমি কোনো না কোনো বীরের মতো
যেখানে আসমান কাঁপে আর জমিন কাঁপে থরথর করে
মনে মনে বলে ওঠো তুমি
কী ঠান্ডা