
প্রতীকী ছবি।
পোস্টকার্ড- ছোট কাগজের আদলে একটি বুদ্ধিবৃত্তিক সমাজতাত্ত্বিক পত্রিকার পরিকাঠামোয় তৈরিকৃত কাগজ। নিয়মিত প্রকাশনার এটি দ্বাদশতম সংখ্যা। ডা. তন্ময় স্যানালের সম্পাদনায় প্রকাশিত বর্তমান সংখ্যাটির প্রচ্ছদ করেছেন- এমদাদ হোসেন। প্রিন্টার্স লাইনে ঠিকানাবিহীন ১৩২ পৃষ্ঠার এ কাগজটির মূল্য রাখা হয়েছে ১০০ টাকা।
সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে- গাঙ্গেয় সমভূমির জনপদের পূর্বতন পরিচিতির নাম উল্লেখ করে- সে সময়ের অধঃপতিত সমাজে রাজ্য-গোত্র প্রধানদের মধ্যে ক্ষমতার বদলের খেলা ছিলো আর এই ক্ষমতা বদলের বলি হতো সমাজের সাধারণ মানুষ। যারা ছিলো ভূমিহীন, মজুদদার, নিম্নবিত্ত শ্রেণির মানুষ। ক্ষমতাসীনরা সর্বদাই ছিলো সমাজে নানাভাবে নানা উপায়ে, নানা উপলক্ষ তৈরি করে। সম্পাদক এমন কিছু সমাজ দর্শনের কথা জানাতে চেয়েছেন নিজ ভাষায়।
সম্পাদকীয় দৃষ্টিভঙ্গিকে সামনে রেখে বর্তমান সংখ্যার লেখাগুলোর দিকে দৃষ্টিপাত করে দেখি- একটি সাক্ষাৎকারসহ মোট ১১টি লেখা প্রকাশ পেয়েছে। প্রতিটি লেখার দিকে দৃষ্টি দিলে- ঘুরে ফিরে সমাজতন্ত্র দৃষ্টিকোণ থেকে প্রতিটি রচনার একেকটি বিশেষ ব্যাখ্যা দাবি করে। তবুও স্থান সংকুলানের কথা ভেবেই সার্বিক আলোচনার ইতি টানতে হয়। সর্বহারার মহান নেতা জোসেফ স্তালিন; সমাজতন্ত্র, পুঁজিবাদ : উত্থান- পতন; ‘সমাজতান্ত্রিক বুদ্ধিজীবী সংঘ’ পুনর্গঠন এবং তার সমালোচনা প্রসঙ্গে, জাতিসমূহের সম্পদের প্রকৃতি ও কারণ অনুসন্ধান: অ্যাডাম স্মিথ চতুর্থ পুস্তক: রাজনৈতিক অর্থনীতির প্রণালি প্রসঙ্গে অনুবাদটিসহ মুজাহিদুল ইসলাম সেলিমের সাক্ষাৎকারটি গুরুত্বপূর্ণ।
সমাজ ও মানুষের জীবন গঠনের নবরূপ এবং পার্টি প্রক্রিয়া নিয়ে ভাবনাগুলো পাঠককে নতুন করে ভাবাতে পারে। চিন্তাশীল পাঠক এ কাগজে সাহিত্যবিষয়ক আরও কয়েকটি লেখা পাবেন যারা নিয়মিত সমাজ রূপান্তরের ভাবনা-চিন্তার মধ্যে যাপন করেন, মার্ক্সীয় দর্শনকে লালন করেন তাদের প্রিয় হয়ে উঠতে পারে কাগজটি। এ ধরনের বিষয়ভিত্তিক কাগজ সহসা দেখা মেলে না, সেইক্ষেত্রে সংখ্যায় আরও কিছু নতুন কাগজ হওয়া উচিত। সমাজে এ ধরনের কাগজ সংখ্যায় যত বৃদ্ধি পাবে ততটাই সমৃদ্ধ হতে থাকবে- মানুষ ও মানুষের সমাজ। যে সুন্দর সমাজের জন্য মার্ক্স ভেবেছিলেন- শোষণহীন মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাজ। পরিশেষে, পোস্টকার্ড প্রকাশনাকে কাগজটি নিয়মিত প্রকাশের জন্য সাধুবাদ জানাই।