Logo
×

Follow Us

শিল্প-সাহিত্য

অতি অল্প হইল

Icon

শোয়াইব আহম্মেদ

প্রকাশ: ২৮ জুলাই ২০২৩, ১২:৫৭

অতি অল্প হইল

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর।

উনিশ শতকের বাংলার অন্যতম ঋজু মানুষ ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। তিনি পণ্ডিত, শিক্ষাবিদ, সমাজ সংস্কারক। বর্ণপরিচয়ের স্রষ্টা। যিনি দানবীর এবং দয়ার সাগরও বটে। আজও বাঙালিজীবনের মিথ হয়ে আছে তার বিদ্যার্জনের গল্প, মায়ের ডাকে সাঁতরে নদী পার হওয়ার কাহিনি। চালচলনে, পোশাকে-আশাকে কোনো বাহুল্য ছিল না। ‘যশুরে কৈ’ ঈশ্বরচন্দ্রের রসবোধ ছিল প্রবল। ঈশ্বরচন্দ্রের রসবোধের দুটি কাহিনি জানাচ্ছেন- শোয়াইব আহম্মেদ

এক
ঘটনাটা ইংরেজ আমলের, তখন হিন্দু কলেজের প্রিন্সিপাল ছিলেন ওয়াল্টার স্কট সেটন কার। একবার এক প্রয়োজনে কার সাহেবের অফিসে যেতে হয় বিদ্যাসাগরকে। গিয়ে দেখেন নিজের টেবিলে তখন পা তুলে বসে আছেন কার সাহেব। বিদ্যাসাগরকে দেখেও পা নামানোর সৌজন্যটুকুও দেখালেন না। সেদিনকার মতো কাজ মিটল; কিন্তু এই অসৌজন্যটুকু মনে রাখলেন বিদ্যাসাগর। 

এর বেশ কিছুদিন পর জরুরি কাজে বিদ্যাসাগরের অফিসে আসেন কার সাহেব। দরজা খুলে তো তিনি অবাক। টেবিলের ওপারে বসে আছেন বিদ্যাসাগর। আর তার খড়মসুদ্ধ পা দুটো টেবিলের ওপর ঠিক কার সাহেবের মুখোমুখি। সেদিন ওভাবেই সাহেবকে অপমানের জবাব ফিরিয়ে দিয়েছিলেন ঋজু শিরদাঁড়ার মানুষটা।

দুই
১৮৭৩ সাল। সে সময় বিদ্যাসাগরের বহুবিবাহ-নিরোধ আন্দোলনের বিরোধিতায় মাঠে নেমেছিলেন পণ্ডিত তারানাথ বাচস্পতি। বহু বিবাহের সমর্থনে ‘বহুবিবাহবাদ’ নামক একটি গ্রন্থও রচনা করেন তারানাথ। সে গ্রন্থে বহু সংস্কৃত শ্লোকের ভুল ব্যাখ্যা করেন তিনি। একে তো তর্কযুদ্ধ তার ওপর ভুলে ভরা সংস্কৃত ভাষা; এ সুযোগ হাতছাড়া করলেন না বিদ্যাসাগর। বাচস্পতির সংস্কৃতজ্ঞানকে ব্যঙ্গ করে রচনা করে ফেললেন পাল্টা একটা গ্রন্থ- ‘অতি অল্প হইল’। বিদ্যাসাগরের যুক্তির জাল কাটতে রেগেমেগে আরও কিছু কুযুক্তি দিয়ে বসলেন তারানাথ বাচস্পতি। ফলস্বরূপ বিদ্যাসাগর লিখলেন আরও একটি গ্রন্থ, ‘আবার অতি অল্প হইল’। এই গ্রন্থ দুটি বিদ্যাসাগরের রসিকতার যেমন উজ্জ্বল স্তম্ভ, তেমনি বাংলা সাহিত্যে এমন গ্রন্থ আজও বিরল।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫