
ভলতেয়ার।
ফ্রঁসোয়া-মারি আরুয়ে নিজের আসল নামের চেয়ে ভলতেয়ার ছদ্মনামেই বেশি পরিচিত ছিলেন। সাত বছর বয়সে মা হারানো ভলতেয়ার বেড়ে ওঠেন অ্যাবে ডি চ্যাটেয়াওনিয়ফ নামক এক পাদ্রির কাছে। মজার ঘটনা হলো, ফরাসি আলোকময় যুগের এই লেখক, প্রাবন্ধিক ও দার্শনিকের জন্মের খবর এক অজ্ঞাত কারণে চাপা দিয়ে রেখেছিলেন বাবা ফ্রাঁসোয়া এবং মা মারি আরোয়েত। এ সম্পর্কে পরবর্তী সময়ে ভলতেয়ার তার স্মৃতিকথায় নিজেই বলেন, ‘আমার প্রকৃত পিতার (জন্মদাতার) নাম ছিল রোচেব্রুয়েঁ। তিনি ছিলেন একজন গীতিকার। আমার সামাজিক আইনসঙ্গত পিতা ফ্রঁসোয়ার প্রতি আমার কোনো ভালোবাসা কিংবা শ্রদ্ধাবোধ ছিল না। আর সে কারণেই আমি পিতার কাছে বেশিদিন থাকিনি।’
ভলতেয়ারের মৃত্যুর এক দশক পর অর্থাৎ ১৭৯০ সালে ফরাসি বিপ্লবের সূচনা লগ্নে তার জনপ্রিয়তা হয় আকাশচুম্বী। যে ভলতেয়ারের মৃতদেহ একদা অবহেলায় শহরতলির নির্জন পরিবেশে সমাধিস্থ করা হয়েছিল, সেই দেহাবশেষই তার লাখো ভক্ত মিলে বিশাল শোভাযাত্রা করে তুলে নিয়ে আসে শহরের কেন্দ্রস্থলে। সেদিন তার দেহাবশেষ বহনকারী কাফেলাটিকে বিপুল জনতা পথের দুপাশে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে থেকে জানিয়েছিল প্রাণঢালা শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা। তার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে গার্ড অব অনার দান করেছিল ছয় লক্ষ সৈন্য। তার শববাহী শকটের ওপর লেখা ছিল ‘এই মহামানব দিয়ে গেছেন মহান প্রেরণা, করেছেন আমাদের মহামুক্তির পথ উন্মোচন।’