Logo
×

Follow Us

শিল্প-সাহিত্য

জুঁই ফুল

Icon

অলোক আচার্য

প্রকাশ: ১২ মে ২০২৪, ২১:০৮

জুঁই ফুল

প্রতীকী ছবি

জুঁই, অ্যাই জুঁই? খেতে আয়।

টেবিলে নাশতা সাজাতে সাজাতে জুঁইয়ের মা ডাকে। মেয়েটা এই কয়েক দিনে যে এতটা বদলে গেছে সেটাই স্বস্তির। আর কয়েক দিন পরেই মেয়েটার বিয়ে। মেয়েটাকে নিয়ে তার চিন্তার শেষ নেই। সকাল নটার আগে ঘুম থেকে উঠত না। ঘরের কোনো কাজকর্মে গা লাগাত না। অথচ বিয়ে ঠিকঠাক হওয়ার পর থেকেই যেন মেয়েটা বদলে গেল।

এখন মাঝে মাঝে এবেলা-ওবেলার রান্নাবান্নাও করে। যদিও এই হঠাৎ বদলে যাওয়া নিয়ে জুঁইয়ের মায়ের মনে কিছুটা সন্দেহও আছে। কারণ মেয়েটা তো আর দশটা মেয়ের মতো না। এসএসসি পরীক্ষার আগে যখন মেয়েটা দিন-রাত লেখাপড়া নিয়ে ব্যস্ত থাকত তখনো এ রকম হয়েছিল। সারা বছর লেখাপড়ায় গা-ছাড়া ভাব আর পরীক্ষার কয়েক দিন আগে থেকে একেবারে বইয়ে মুখ গুঁজে থাকত। শেষে পরীক্ষার আগে দেখা গেল সবার প্রবেশপত্র এসেছে। শুধু জুঁইয়েরটা আসেনি। ও ফরম ফিল-আপই করেনি! সেদিন ওর বাবা যে কী মারটাই না দিয়েছিল! এখন আর নিশ্চয়ই মেয়েটা আগের মতো নেই। 

হাত-মুখ ধুয়ে জুঁই নাশতার টেবিলে আসে। মেয়েটার মুখ আজ থমথমে মনে হচ্ছে। রাতে মনে হয় কেঁদেছে। বিয়ের আগে মেয়েরা একটু কাঁদেই! বিয়ে নিয়ে তো টেনশনের কিছু নেই। ছেলে বিসিএস অফিসার। দেখতে শুনতেও ভালো। কাঁদুক, অন্তত পরিবারের জন্য মায়া-মমতা আছে। 

মা, আজ দুপুরে আমি রান্না করব।

কেন? সামনেই তোর বিয়ে। এখন রান্নাটান্না করার দরকার নেই। তার চেয়ে মেকাপটেকাপ কর। ফিটফাট থাক। 

তোমার বিসিএস জামাই কি আমাকে রান্না করতে দেবে না? বসে বসে খাওয়াবে? আর শোন মা, আমি একটু বাইরে যাচ্ছি। 

কেন?

ভালো কিছু মেকাপ কিনতে হবে। বিসিএস জামাইয়ের সঙ্গে তো আর যা-তা মেকাপ নিয়ে যাওয়া যায় না। আজ সন্ধ্যায় তো দেখা করার কথা আছে।

বলেই দ্রুত নাশতা শেষ করে জুঁই বেরিয়ে যায়। ওদিকে জুয়েল অপেক্ষায় আছে। তার কাছে ট্রেনের দুটো টিকিট কাটা আছে। ওরা আজই বিয়ে করে পালিয়ে যাবে। ফুড়ুত করে উড়াল দেবে! জুয়েল জানতে চেয়েছিল, বিয়ের পর তুমি আমার কাছে কী চাও? জুঁই বলেছিল, জুঁই ফুল। সেই ফুল হাতে সে অপেক্ষায় আছে। একটা উবারে চড়ে জুঁই দ্রুত রওনা হয়। 

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫