
প্রতীকী ছবি
পত্রিকার ফিচার পাতা নিয়ে পাঠকের সব সময় অন্যরকম আগ্রহ থাকে। কারণ সংবাদ ও ফিচারের মধ্যে মৌলিক পার্থক্য আছে। একটি দীর্ঘ সংবাদ পাঠকের পড়তে বিরক্তি লাগতে পারে, কিন্তু ফিচার সেখানে ব্যতিক্রম। ফিচার পড়তে পড়তে পাঠক লেখার মধ্যে আটকে যায়, পাঠের মধ্যে ডুবে যায়। তাই ফিচারের ভাষা সহজ ও সাবলীল হতে হবে। তাতে থাকতে হবে সাহিত্য রস।
প্রশ্ন হলো-কেন ফিচারে সাহিত্য রস থাকতে হবে? উত্তর হলো-ফিচার শুধু ঘটনা নিয়ে লেখা নয়, বরং এটা একটি শিল্প। আর প্রত্যেক শিল্পের আলাদা ঢং থাকে, গতি থাকে। সেই পথেই শিল্প এগিয়ে যায়। সহজভাবে বললে প্রত্যেক শিল্পের একটি নিজস্বতা থাকে। ফিচারও তেমন একটি শিল্প। সুতরাং একটি ফিচারে-শিল্পরস থাকবে, তাতে একটি দৃশ্যকল্প থাকবে, একটু গল্পের আবহ থাকবে। যা পাঠককে ভাসিয়ে নিয়ে যাবে জানার জগতে, কখনো নিয়ে যাবে কল্পনার জগতে।
ফিচারে থাকতে হবে শব্দের চমৎকার গাঁথুনি, একটু আবেগ এবং ঘটনার আখ্যান। যে আখ্যান পাঠকের পড়ার আগ্রহকে বাড়াবে এবং পাঠ শেষে তৃপ্তি দেবে। তবে সব ফিচারে সাহিত্য রস থাকবে, আবেগ থাকবে, আখ্যান থাকবে-ব্যাপারটা মোটেও তা নয়। কোন ধরনের ফিচার লেখা হচ্ছে তার ওপর ভিত্তি করে কাঠামো ঠিক করতে হয়। যেমন-লাইফস্টাইল, স্বাস্থ্য, আইটি-এসব ফিচার হয় তথ্যবহুল, সেখানে সাহিত্য রস খুব একটা দরকার হয় না। কিন্তু ভ্রমণ নিয়ে ফিচার লিখলে সেখানে সাহিত্যের ছোঁয়া থাকলে পাঠক তৃপ্ত হবেন। সেখানে একটু অ্যাডভেঞ্চার থাকলে লেখাটার স্বাদই বদলে যাবে। সব মিলিয়ে ফিচারের ভাষাতে সাহিত্যের ছোঁয়া থাকাটা মন্দ কিছু নয়। বরং কিছু কিছু ক্ষেত্রে তা খুবই প্রাসঙ্গিক।
যদি খেয়াল করা হয় দেখা যাবে, আধুনিক সময়ে এসে সংবাদপত্র ফিচারের দিকে ঝুঁকেছে। সপ্তাহের প্রতিদিন কোনো না কোনো ফিচার আয়োজন থাকছেই। এর মূল কারণ পাঠকের আগ্রহ। সব সংবাদপত্র এখন চেষ্টা করছে ভিন্নধর্মী কিছু ফিচার আয়োজন রাখার। বর্তমানে অনলাইন বা প্রিন্ট যে কোনো ধরনের গণমাধ্যমের বড় একটি অংশ থাকে এই ফিচার।
আবার ভুলে গেলে চলবে না, একটি ফিচার লেখা মানে নিছক তথ্য বিনিময় নয়, সেখানে পাঠককে গল্পের আদলে অনেক কিছুই বলা হয়। তাতে থাকে অনেক তথ্য দিয়ে একটি ঘটনার বর্ণনা। তাই তথ্য বিনিময় করা হলেও ফিচারে থাকতে হয় লেখকের মুনশিয়ানা। তবেই একটি ফিচার পাঠপ্রিয় হয়ে ওঠে।