-66586e7535d71-66686a204e7b4-66815a49e1e55.jpg)
প্রতীকী ছবি
ইশকুল ছুটি হয়
বাড়ি ফিরতে ফিরতে গোধূলি হয়ে যায়
আব্বা অফিস থেকে ফিরলে প্রচণ্ড দুপুরও
গড়িয়ে গড়িয়ে গোধূলি হয়ে যায়
কত দিন হয়ে গেল আব্বার অপেক্ষায়!
আব্বা এখন আর বাড়ি ফেরেন না
অবসর নিতে নিতে আব্বার পায়ে
গোধূলি লুটিয়ে পড়েছিল
এক গোধূলি পেরোনো সন্ধ্যায় আব্বাও
লুটিয়ে পড়েন গোধূলির বুকে
গোধূলি আব্বাকে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে ফেলে
আব্বা আমাদের আর আমরা আব্বার ঠিকানা হারিয়ে ফেলি
গোধূলি হলেই ক্ষুধার্ত ক্লান্ত আব্বার
বাড়ি ফেরার কথা মনে পড়ে যায়
অভুক্ত আম্মা না খেয়ে চেয়ে থাকেন ভাত বেড়ে
ভাত ঠান্ডা হয়ে যায়
তবু আম্মা খান না
ক্লান্ত মানুষটা বাড়ি ফিরলে
আম্মা খাওয়ার মতো সুখ পেয়ে যান
আমরা আব্বার পথ চেয়ে থাকি খেলতে যাওয়ার
অনুমতির অপেক্ষায়-
খেলার মাঠ থেকে ফিরতে আমাদের গোধূলি পেরিয়ে যায়
আব্বা আর যান না মাস্টারি করতে
আমি যাই-
আমার অপেক্ষায় থাকে আমার সন্তানরা
ফিরে আসি তাদের কাছে
গোধূলি হয়ে যায়
ইদানীং বাজার থেকে ফিরতেও
গোধূলি হয়ে যায়
আড্ডায় গেলে গোধূলির লগ্ন আসে দ্রুত
ভোরের অপেক্ষায় রাত শেষ হতেই
আমরা গোধূলির দিকে এগিয়ে যাই
গোধূলি আমাদের দিকে এগিয়ে আসে
গোধূলির গোলকে আটকে থাকা
মানেই জীবনে সন্ধ্যার আগমন
সন্ধ্যায় অস্তমিত সূর্য যতই দ্রুত রাতকে
ভোরের দিকে নিয়ে যায়
গোধূলি আমার দিকে এগিয়ে আসে
গোধূলি আনন্দ-বিকেলের কথা বলে না
গোধূলি যৌবন-জোয়ারের কথা বলে না
গোধূলি বলে, আঁতকা এক শূন্যতার কথা
আব্বার চোখের নির্লিপ্ত আলোর কথা
আব্বার জীবনালো থেমে যাওয়া শেষ হলে
গোধূলি বেলায় আমি দেখি এক সব হারানো
বালকের দিগ্বিদিক ছোটাছুটি
শূন্যতা বয়ে চলে শুকনো ঝরনারেখার দিকে
বেদনাক্লান্ত গোধূলি শান্ত স্নিগ্ধ মরণের কথা বলে।