
গ্রাফিক্স: সাম্প্রতিক দেশকাল
মামুনের ছোটবেলা থেকে আমেরিকা যাওয়ার খুব ইচ্ছা। শৈশব থেকেই এই স্বপ্নটা তার বুকের ভিতর বড় হতে থাকে। পড়ালেখা শেষ, তার বন্ধুরা সবাই চাকরির চেষ্টা করছে। মামুনের চেষ্টা আমেরিকা যাওয়ার। হঠাৎ আমেরিকান সরকার ডিভি লটারি চালু করল। মামুন ডিভি লটারিতে আবেদন করে উষ্ণ হয়ে বসে রইল। কিন্তু কোনো ফল পেল না।
নতুন বছরে আবার ডিভি লটারি আবেদন করার সময় এলো। মামুন এবার ডিভি লটারি সম্পর্কে বিস্তারিত খোঁজখবর নিয়ে নিজেই এজেন্ট হয়ে গেল। মহল্লার সবাই এখন ওর মাধ্যমে ডিভি লটারিতে আবেদন করে। মামুনের মধ্যে আমেরিকাপ্রীতি এতটাই প্রবল যে, চোখ বন্ধ করলে তার দৃশ্যকাব্যে ভেসে ওঠে নায়াগ্রা জলপ্রপাত, ম্যানহাটনের অপার সৌন্দর্য।
ঢাকা শহরের একটি ফোন-ফ্যাক্সের দোকানে সারাদিন সে কম্পিউটারে ডিভি ফরম পূরণ করে। হঠাৎ তার কাছে এক প্রেমিকযুগল আসে ডিভি ফরম পূরণ করতে। ফরমের নমিনীর ঘরে তারা একে অপরের নাম ব্যবহার করল। এটা নাকি তাদের ভালোবাসার পরীক্ষা। এই বিষয়টি মামুনকে খানিকটা নাড়িয়ে দিল। মুহূর্তে তার মাথায় বুদ্ধি খেলে গেল। সে আর সময় নষ্ট না করে সোজা পাশের মহিলা কলেজে গিয়ে উপস্থিত হলো। অধ্যক্ষের নিকট থেকে অনুমতি নিয়ে সকল ছাত্রীর ফ্রি ডিভি লটারি পূরণ আরম্ভ করল। মজার বিষয় হলো ডিভি ফরমে সকল ছাত্রীকে সে বিবাহিত বলে চিহ্নিত করল এবং নমিনীর স্থানে নিজের নাম বসিয়ে দিল। প্রায় চার হাজার ছাত্রীর স্বামী এ.কে.এম. মামুন হোসাইন। ঠিক এক বছর পর ডিভি লটারির ফল প্রকাশ হলে দেখা গেল চার হাজার ছাত্রীর মধ্য থেকে একজনের লটারি বেঁধে গেছে।
মামুন সেই মেয়েটির বাসায় গিয়ে মেয়েটি ও তার পরিবারকে আমেরিকা যাবার সুযোগের কথা খুলে বলল। মেয়েটি এবং তার পরিবার মামুনের কথা শুনে আনন্দে উত্তেজিত হয়ে উঠল। মেয়েটির সঙ্গে মামুনের বিয়ে হলো এবং বিয়ের সকল কাগজপত্র তারা আমেরিকান এম্বাসিতে পাঠিয়ে দিল।
মামুন এখন আমেরিকা প্রবাসী। গ্রীষ্মের ছুটিতে নিয়মিত বৌকে নিয়ে নায়াগ্রা জলপ্রতাত দেখতে যায়।