
ফাইল ছবি
ক্ষত
এমন
দাওয়াই দিলেন
আঘাত
দ্রুত নিরাময়ের পরিবর্তে
ক্ষত
সৃষ্টি হলো আরও!.
মৃত্যুর
আগে মৃত্যুর অভিজ্ঞতা নিয়ে
ব্যথার
নিগড়ে অকেজো আমি;
প্লাস্টিকের
খোলসে মুড়ে আমার লাশ
বহন
করলেন রাজপথ থেকে গোরস্থান;
লাল
বৃক্ষের চারা করে বুনে দিলেন
অনিয়ন্ত্রিত
রক্তপাত!
চিত্রকল্পগুলো
ভীষন অমসৃন,বিকৃত!
আলোহীন
চিরযাত্রার আমরা অসহায় পথিক।
এই
কল্পনা আপনার ভুল;
দীর্ঘশ্বাসের
প্রজাপতি এক বিন্দুতে থেকে
অন্য
বিন্দুতে পরস্পর ছেদ করে ;
সে
কথা বলার সাধ্য নেই আমার!..
তবে
তরুনের আছে!
ক্ষত!
সৃষ্টি সুঘ্রাণে সুবাসিত হোক।
আমি
তো কেবল আপনার তৈরিকৃত
ওয়ার্ডরোবে
এক ঝুলন্ত পুরনো কাপড় মাত্র!
: ১৭ জুলাই, ২০২৪
স্ফুলিঙ্গ হৃদয়
ওরা
কেউ কেউ বাড়ি ফিরে এসেছিল
ওদের
প্রিয় ক্যাম্পাস ছাঁড়তে বাধ্য হয়েছিল;
ওদের
মধ্যে যে একটু বড়সড় দেখতে ,
চুলগুলো
নিপাট, সোজা সাপটা
ঝড়ঝড়ে,মাঝখানে
সিথি করে,
আশ্রয়
দাতার শার্ট ও পকেটে
জমানো মুক্তিযোদ্ধা বাবার
হাতঘড়িখানা
পরে সে সাজলো সরকারি অফিসার;
হাসপাতালে
যে ছেলেটার আশ্রয় হয়েছিল,
সিস্টার
ওদের এপ্রোন স্টেটিথকোপ দিয়েছিল,
সাথে
ওর বন্ধু ; যে হলো ওর এ্যাস্সিট্যান্ট!
অঙ্কিতা,মৃদলা
ও বিপাশা কেউ বোরখা পরে
হাউজওয়াইফ,
কেউবা সরকারি অফিসারের
বউ
অথবা বাসার বুয়া ;
নেতৃত্বদেয়া
ছেলেটির হৃদয়
সবচেয়ে
বেশি স্পন্দিত ছিল;
আবেগ
ওকে তৈরি করেছিল হতবাক,
ইস্পাতের
মতো কঠিন।
সে
আশ্রিত ছিল গ্যারেজে।
হাঁতুড়ি,
প্লাস নিয়ে গ্যারেজ কর্মী ছদ্মবেশে
অবশেষে
সেও বাড়ি ফিরেছিল;
ফিরেছিলো
ওরা ভোরের বাড়ি;
ভোর
কুসুম আলো ছড়িয়েছিল আকাশে;
ভোরের
আকাশ ওদের ফিসফিসিয়ে বলেছিল,
হয়তো
পূর্ণ স্বাধীনতা নিয়ে আজকের সূর্য উঠবে,
বাড়ি
ফিরে ওরা কাউকে কিছু বলেনি;
কেউ
কেউ হয়তো পোষাক পাল্টে ক্লান্তিতে ঘুমিয়ে পড়েছিল।
"স্পন্দিত
হৃদয়" কালিঝুলি মাখানো
গ্যারেজকর্মী
পোষাক পরেই শুয়ে পড়লো;
কম্বলটা
টেনে নিলো মাথার ওপর;
অন্ধকার
আশ্রয়ে শরীরে তাপ ও
উত্তাপ
বাড়তেই ও ভাবতে লাগলো
আগামীকাল
সে শ্লোগান দিবে
"
কেউ পাবে তো কেউ পাবে না
পাকিস্তানের
কুলিন কোটা
বাংলাদেশে
ঠাঁই পাবে না!
চাইতে
গেলাম অধিকার
করে
দিলে রাজাকার"
ছায়াপথ,
কক্ষপথ অতিক্রমের ভারসাম্য হারিয়ে ,
তাপের
উত্তাপে জড়িয়ে
একসময়
নিজেকে গুটিয়ে, কুঁকড়ে ওঠা স্পন্দিত হৃদয়"
ঘুমের
অপারে নিজেকে খুঁজতে লাগলো।
ওরা
অবশ্য কেউ কেউ বাড়ি ফিরেছিল
স্পন্দিত
হৃদয়ের
স্পন্দনের
বাড়ি ফেরা হলো না।
অবশ্য
আগামীকালের সংবাদে আমাকে পড়া যাবে না'
"স্পন্দিত
হৃদয়টি দুষ্কৃতকারীর ছিল;
কাছাকাছি
থাকা স্ফুলিঙ্গ হৃদয়গুলোর
ইঞ্জিন
নষ্ট করেছিলো কতগুলি সন্ত্রাসনামী দল;
ওরা
আসলে ছাত্রই ছিলো না"
কিন্তু
আমিই এই সংবাদটিই পড়বো!
: ২০ জুলাই
২০২৪
তারিখটা ১৫
জুলাই
এটা
ছিলো ক্ষনস্থায়ী মৃত্যু।
কিন্তু
যখন আমি বেঁচেছিলাম
মূলত
তখন মৃত ছিলাম।
একের
পর এক ছাত্র হত্যার সংবাদ
আমার
বেঁচে থাকার সকল
স্মৃতিকে
শূন্য করে দিয়েছিল!
তারিখটা
ছিল ১৫ জুলাই ২০২৪
যেটা
আজ সকলের কাছে এক
অপরিচিত
অচেনা তারিখ;
সেদিন
থেকে ও তারও অতীত
থেকে
চারপাশে ছিল অপরাধ
পৌর
সভার ময়লার স্তুপের গন্ধ ছাপিয়ে
চেতনামাফিয়াদের
পুলিশ -
বিজিবির
ছোঁড়া বুলেটের গন্ধ,
নাক
থেকে হৃদযন্ত্র হয়ে মস্তিষ্কের নিউরোন
পেরিয়ে
আমার শ্বাসরোধ করেছিল;
দিগন্ত
পেরিয়ে সূর্যের গনগনে আচরন,
রক্তের
মতো লাল আকাশ বলে দিয়েছিল;
একটা
পতাকা পাবার পরও
আমি
পরাধীন ছিলাম।
খাচ্ছিলাম,শ্বাস
নিচ্ছিলাম
হাঁটছিলাম
;
কিন্তু
বেঁচে ছিলাম না।
: ২০ জুলাই, ২০২৪
বিস্মরণ
২২
জুলাই মধ্যরাত
নৃশংস
ছাত্র হত্যার সপ্তম দিন
ঝুম
বৃষ্টিতে হত্যার দূর্গন্ধ,
জীবন্ত
মৃত্যুর ঘ্রাণ ভেসে যেতেই
যারা
বেঁচে আছে তাদের
এক
জরুরি সভা বসলো সেই রাতে;
তাদের
মানবিক চোখ প্রসারিত সুদূরের দিকে-
এখানে
সাতদিনের পঁচা লাশ, কষ্টের অভিযোগ!
ঘৃণার
অন্ধকার, বিদীর্ণ রক্ত
শৃঙ্খলিত
ভয়-
পূতিগন্ধময়
আগুনের নিশ্বাস
পেরিয়ে
এই সিদ্ধান্তে উপনীত হলো;
ভুলে
যাওয়া অসুখ থেকে নিজেদের আগে বাঁচাতে হবে!.
এলজাইমার
আক্রান্ত বাংলাদেশী হিসেবে
ইস্যু
ভুলে যাওয়ার তকমা থেকে
মুক্ত
করতে হবে মস্তিষ্কের কোষÑ
অনিয়ন্ত্রিত
রক্তপাতের বিস্মরণ না হোক,
অন্তত
বৃষ্টির জলে প্রিয়জনের কান্না তো ধুয়ে যায় না ।
: ২২ জুলাই, ২০২৪
নীরবতার আর্তনাদ
এখানে
প্রতিটি শব্দ রাজনৈতিক।
প্রতিটি
ধ্বনি ও প্রতিধ্বনি মৃত্যুদন্ড।
নীরবতার
মানে জমাট
হয়ে থাকা অনেক শব্দ।
এখানে
চাঁদের আলো জমে
বরফ হয় না;
অশ্রু
জমে বরফ তৈরি হয়
চারদেয়ালে
বন্দি রেখে
যোগাযোগ
শুন্য করে
যে
অন্ধকার সৃষ্টি হয়
সেই
রাতের আঁধারে জন্ম
হয় আঘাত করার
প্রতিঘাত!
রক্তেমোড়া
মুকুট দীর্ঘস্থায়ী করতে
সোনালী
ঘুম থেকে জেগে
নাশতার
টেবিলে ছাত্রের কাটা আঙ্গুল
চিবোতে
চিবোতে আলোচনার প্রস্তাব
বড়
হাস্যকর!
সদ্য
বিবাহিত মেয়েটির মেহেদি রাঙা হাতের কসম
মর্গে
পড়ে থাকা স্বামী গুম হবার আগেই
দূর্বার
হয়ে উঠেছে জনতা;
ক্রোধ
ও সংগ্রামে গুড়িয়ে পরেছে
আপনার পোষা জেদ ও ফালতু অহংকার
মৃত্যু
অবধি বেঁচে থাকার সংগ্রামে
অন্তত
হত্যা মেনে নেয়া যায় না!..
হে
মহামান্য অন্ধ করে দিলেই
বন্ধ
হয় না নীরবতার চিৎকার।
অতএব
প্রস্তুত হন।
: ২১ জুলাই, ২৪ রবিবার
নির্যাতনের ধরণ রদলবদল হয়নি
পরিবর্তনই
অপরিবর্তনীয়
বলেছিলো
সিনিয়র বন্ধু
নাসির;
সম্ভবত
বেশি বেশি মার্কস পড়ে
এমনটি
বলতো সে!
শরীরের
যন্ত্রণা ধরে রাখার অভ্যাসের পরিবর্তন হয়নি;
যেমন
পরিবর্তন হয়নি কোনো জালিমের নির্যাতন!
বিস্ময়কর
দাঁত, নখগুলোর আঁচড় ও
কামড়ে
ধরার আচারণ পরিবর্তন হয়নি!
নির্যাতন
যেমন ছিলো তেমনই আছে।
কেবল
ছোট হয়ে গেছে পৃথিবী!
রোম,এথেন্স,কিউবা,ফিলিস্তিন,
জাপান,জার্মান,বৃটিশ,
পাকিস্তান
আজকের
বাংলাদেশ সব মনে হচ্ছে
আমার
মুলি বাঁশের ওইপারে।
১৫০
কোটি সংখ্যার পাশে
সাতশ
কোটি মানুষ কেবলইবাড়তি সংখ্যা।
পুরোনো
অপরাধের পাশে যুক্ত হয়েছে
আধুনিক প্রযুক্তির অপব্যবহার;
হিরোশিমার
বোমার আওয়াজ থেকে
উত্তরণ
ঘটেছে সাইলেন্স প্রুফ পারমাণবিক বোমা।
নির্যাতন
পরিবর্তন হয়নি।
দখলদারিত্ব
ও দাসত্বের উত্তরে
আর্তনাদের
ধরন পরিবর্তন হয়নি ;
পরিবর্তন
হয়নি নিদোর্ষের চিৎকার!
নাচগান,পোষাক,ভাষার
অঙ্গভঙ্গি বদলালেও
নীপিড়কের
অহংকারের পরিবর্তন হয়নি।
রক্তের
লালা লেহনের স্বাদ বদলায়নি
অস্তিত্ব
টিকে রাখার প্রেরণা বদলেছে
নির্যাতনের ধরণ রদলবদল হয়নি
: ২০ জুলাই, ২০২৪