Logo
×

Follow Us

শিল্প-সাহিত্য

হারিয়ে যাচ্ছে ওঁরাও আদিবাসীর কারাম উৎসব

Icon

সঞ্জয় সরকার

প্রকাশ: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৫:২০

হারিয়ে যাচ্ছে ওঁরাও আদিবাসীর কারাম উৎসব

ওরাওঁদের কারাম উৎসব। ছবি: সংগৃহীত

ওরাওঁ নামক ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে তবে উত্তর বাংলার জেলাগুলোতেই এদের বসবাস সর্বাধিক রাজশাহী রংপুর বিভাগের সমতল ভূমির এই আদিবাসীরা নেহাৎ সংখ্যায় একেবারেই কম নয় উত্তরাঞ্চলে ভিন্ন ভিন্ন গোষ্ঠীরবৈচিত্র্যময় আদিবাসীর দেখা মেলে বাংলাদেশে আদিবাসী বলতে আমরা যেভাবে পাহাড়ী জনগোষ্ঠীকে বুঝি তার অন্যতম কারণ হলো সমতল ভূমির আদিবাসীদের নিয়ে আলোচনার স্বল্পতা উত্তরবঙ্গে আদিবাসীদের মধ্যে সাঁওতাল সংখ্যায় সবচেয়ে বেশি এরপরই ওরাওঁদের স্থান

ওরাওঁরা নিজেদের কুঁড়ুখ হিসেবেও পরিচয় দেয় তাদের ধারণা তারা আদিতে কুঁড়ুখ নামেই পরিচিত ছিলো অনেকে মনেকরেন ওরাওঁ শব্দউরণথেকে এসেছে যার অর্থ অপব্যয়কারী উড়নচণ্ডী স্বভাবের কারণে এই ধারণা করা হয়েছে ওরাওঁ নাম নিয়ে আরও কিছু জনশ্রুতি প্রচলিত আছে


ওরাওঁদের প্রধান ভাষা দুইটি কুঁড়ুখ শাদরী দ্রাবিড় গোষ্ঠীর এই ভাষার মধ্যে কুঁড়ুখ তাদের আদি ভাষা এবং তা অবিমিশ্র অন্যদিকে শাদরী মিশ্র ভাষা এর সাথে বাংলা, হিন্দি, উর্দু, ওড়িয়া, ফার্সি মিশে গেছে কুঁড়ুখ মানে মানুষ শাদরী ওরাওঁদের কথোপকথনের ভাষা বলা হয়ে থাকে কাড়াখ নামের কোনো রাজার নামানুসারে কুঁড়ুখ ভাষার নামকরণ করা হয়েছে মুণ্ডাদের সংমিশ্রণে এসে ওরাওঁরা শাদরী ভাষা শিখেছে কুঁড়ুখ এবং শাদরী কোনো ভাষারই লিখিত রূপ নেই ওরাওঁদের ভাষার লিখিত রূপ না থাকায় মাতৃভাষায় শিক্ষাগ্রহণের ব্যবস্থাও নেই তাদের তবে ওরাওঁরা মনেকরে তাদের ভাষার লিখিতরূপ ছিল যাযাবরের মতো দেশ বিদেশ ঘুরে সেসব হারিয়ে গেছে


গল্প প্রচলিত আছে যে প্রথম দিকে ওরাওঁদের কোনো গোত্র ছিল না পরে তাদের গোত্র প্রচলিত হয় যেমন কেউ কচ্ছপ শিকার করে এনেছে ফলে তার গোত্র এক্কা কুঁড়ুখ ভাষায় এক্কা মানে কচ্ছপ আবার কুজুর গোত্র নিয়ে ভিন্ন গল্পও প্রচলিত আছেÑ‘একজন উরাঁও লোক কুজুর গাছের তলায় ঘুমিয়ে পড়েছিল তাকে হিংস্র জন্তুর খপ্পর থেকে রক্ষা করার জন্য কুজুর গাছের একটা লতা ঘুমন্ত লোকটিকে পেঁচিয়ে ধরে রক্ষা করল সেই থেকে কুজুর গাছ সে ব্যক্তির গোষ্ঠীর প্রতীক হয়ে রইল তার বংশধরগণ আজ পর্যন্ত কুজুর গোষ্ঠী নামে পরিচিতএসব ঘটনা থেকে বোঝা যায় ওরাওঁরা মূলত প্রকৃতির সাথে ঘনিষ্ঠভাবে বসবাস করত কৃষি শিকার তাদের অন্যতম পেশা ছিল


রাম মূলত ওরাওঁদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব এটি মূলত কৃষিভিত্তিক ধর্মীয় পর্ব কারাম পর্বের সাথে বৃক্ষপূজার সম্পর্ক গভীর একদিক থেকে বলতে গেলে কারাম আসলে বৃক্ষেরই পূজা ভাদ্র মাসের সংক্রান্তিতে এই পূজা হয় বলে এর আর এক নাম ভাদাই এবার ২০২৪ সালে ঐতিবাহী পঞ্জিকা অনুযায়ী ভাদ্র সংক্রান্তি পড়েছে ১৬ সেপ্টেম্বর পঞ্জিকা মতে ওরাওঁরা এবার ১৬ সেপ্টেম্বর কারাম উৎসব পালন করবে এই উৎসব ভাতাই নামেও পরিচিত এই দিন সকলে নতুন পোশাক পড়ে যারা উপবাস থাকে তাদের মধ্যে কেউ একজন কারাম গাছের ডাল কাটার জন্য নির্ধারিত হয় সকলে মিলে মাদল বাজিয়ে ধুপ নিয়ে কারাম গাছের নিচে একত্রিত হয়


গাছের গোড়ায় জল দিয়ে লেপে সিঁদুর দেয়া হয় সুতা দিয়ে গাছকে পাঁচ প্যাঁচে জড়িয়ে দেয়া হয় একে বলা হয় গাছের কাপড় পরিধান তারপর গাছকে প্রণাম করে তার কাছে ডাল কাটার অনুমতি নিয়ে নির্দিষ্ট ব্যক্তি গাছে ওঠে ডাল কেটে তিনজন উপবাসী কুমারী মেয়েকে তিনটি ডাল দেয়া হয় ডাল কাটার পর তা মাথায় নিয়ে বাড়ি বাড়ি ঘুরে ফেরে সকলে এরপর গান গেয়ে অনুষ্ঠানের স্থানে ডাল পুঁতে দেয়া হয় সেখানেও ফুল, দুধ, তেল, সিঁদুর লেপে আর সুতা দিয়ে গাছকে ঘিরে দেয়া হয় যারা এই পর্বে অংশগ্রহণ করে তাদের অনেকের হাতে ডালি থাকে ডালি ভর্তি থাকে ফলমূল যারা উপবাসী কেবল তাদের পিতামাতা এই ফলমূল পূজা শেষে ভক্ষণ করার অধিকারী হয়ে থাকে


গ্রামের অন্যতম অভিজ্ঞ বৃদ্ধ কারাম বেদির সম্মুখে বসে কারাম গাছের কাহিনি বর্ণনা করেন এছাড়া কারাম বৃক্ষ থেকে ডাল কাটতে যাওয়ার সময়, ডাল কেটে আনার সময় নির্দিষ্ট গান গাওয়া হয় ডাল পুঁতে দেয়ার সময়ও মাদল বাজিয়ে গান গাওয়া হয় শুধু কারামের গল্প বলার সময় গান বন্ধ থাকে যেসময় গল্প বলা হয় সেসময় শ্রোতাদের হাতে আতপ চাল দেয়া থাকে তিনপর্বে কারাম ডালে আতপ চাল ছিটানো হয় যখন গল্পকথক বলেনÑ Ôছিটারে গাওয়া ভাইয়া’, তখন সকলে কারাম ডালে আতপ চাল, গম ডালের চারা এবং দূর্বা ঘাস ছিটিয়ে দেয়কারাম ডাল কাটা ডাল বিসর্জন একই ব্যক্তি করে থাকেন যতক্ষণ বিসর্জন না হয় ততক্ষণ সেই ব্যক্তি খাদ্য গ্রহণ করেন না


পূজার মাঝে সকলে কারাম ডালে দুধ, জল হাড়িয়া ঢেলে দিয়ে প্রণাম করে এই দিন ঘরে ঘরে চলে পিঠা বানানোর আয়োজন আগে থেকেই তৈরি করা থাকে হাড়িয়া যেই সেদিন অনুষ্ঠান দেখতে যাক পিঠা হাড়িয়া দিয়ে আপ্যায়ন করা সেদিনকার রীতি যদিও বর্তমানে ওরাওঁ সমাজের সকলে হাড়িয়া পানে সমান ইচ্ছুক নন কারাম ডালকে ঘিরে হাত ধরাধরি করে নারী পুরুষ সকলে মাদলের তালে তালে ঘুরে ঘুরে নাচতে থাকে পর্বের দশ থেকে বা পাঁচ থেকে সাত দিন আগেই ঘরে ঘরে অড়হরের ডাল গমের বীজ বালির ওপর রেখে তাতে জল ছিটিয়ে বীজ থেকে গাছ করা হয় সেই সকল গাছকে ওরাওঁরা কারাম ফুল বলে থাকে এটি যে মূলত কৃষিজীবী ওরাওঁদের অনুষ্ঠান এর মধ্য দিয়ে সেটাই বোঝা যায় সাথে সাথে বোঝা যায় এটি বর্ষারও অনুষ্ঠান কারণ কারামের গানে বর্ষা-বন্দনা খুব ঘনিষ্ঠভাবে জড়িয়ে আছে


টানা সারারাত গান বাজনা চলতে থাকে দুপুর বারোটা হতে হতে বিদায়ের সুর শোনা যায় গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে তখন করুণ মাদলের ধ্বনি ভেসে আসে কারাম পর্বের শুরুর দিকের মাদলের শব্দ আর শেষ শব্দের তাল ভিন্ন রকম উভয় সময়ের গানও পাল্টে যায় পর্বের সময় নারীরা খোঁপায় ডাল গমের চারা ফুলের মতো ধারণ করে পুরুষরা ধারণ করে কানে শেষদিকে উৎসবের আঙিনায় জল ঢেলে কাদা করা হয় পরস্পর পরস্পরের গায়ে কাদা মেখে দেয় বিদায়ের পূর্ব মুহূর্তে গানের সুরে সকলে গলাধরে কান্নাকাটি করতে থাকে কুড়ুখ ভাষায় কারামের একটি গান এমনÑ

 

ইউল্যাতো রাস্কি কারাম

যোখায় পেল্যায় শায়েল মায়েল

নান্জিকি, যোখায় পেল্যায়

ইন্নাতো কালোয় কারাম

যোখায় পেল্যায় জানাম টুআর

নান্জিকি

ইউল্যাতো রাস্কি কারাম

যোখায় পেল্যায় শায়েল মায়েল

নান্জিকি, যোখায় পেল্যায়

আইজেতো আইলে কারাম

দিয়া বারবার বাতি কারাম

কাইলেতো আইলে কারাম

শার শামুদার নাদি কিরানে যাবে

বাবুরে Ôকানুরামতোর মোরালি সামাদায়

তোর মোরালি সামাদায়

বাইনিগে Ôপাচোলাবাইনি

তোর খোপাভার সামাদায়

কারাম খোপাভার সামাদায়

বাবুরে Ôকানুরামতোর পাগোড়ি সামাদায়

তোর পাগোড়ি সামাদায়

 

সরল বাংলা : এতদিন যে ছিলে কারাম ছেলেমেয়ে নেচে গেয়ে আনন্দ করেছে ছেলেমেয়ে ... আজকেতো যাবে কারাম ছেলেমেয়ে, এবারের মতো বিদায় দিচ্ছি আজকেই মাত্র আসলে কারাম দিয়া জ্বালাইলাম, বাতি জ্বালাইলাম কালকেই তো মাত্র আসলে কারাম সাত সমুদ্র নদীর কিনারে যাবে বাবু Ôকানুরাম’ (ব্যক্তিকে সম্বোধন করে) তোমার বাঁশি সামলাও, তোমার বাঁশি সামলাও বোন ওগো Ôপাচালি’(ব্যক্তিকে সম্বোধন করে) বোন, তোমার খোপারভার সামলাও কারাম খোপারভার সামলাও

 

ওরাওঁরা পূর্বে ছিলো ক্ষত্রিয় কিন্তু সেই ক্ষত্রিয়দের সম্মান কেড়ে নিয়ে অন্যদের দিতে চেয়েছিলেন পরশুরাম পাশাপাশি পরশুরাম নিরক্ষত্রিয় করা শুরু করলে ওরাওঁ সম্প্রদায় বনে আশ্রয় গ্রহণ করে বনে কারাম বৃক্ষের তলে আশ্রয় গ্রহণ করে পরশুরামের হাত থেকে রক্ষা পায় তারা যার ফলে ভাদ্র মাসের সংক্রান্তিতে কারাম গাছের পূজা করেন এই সম্প্রদায়ের লোক অন্যদিকে কারাম পূজাকে বিশ্বকর্মা পূজা নামেও বলা হয় উল্লেখ্য যে একই দিনে হিন্দু সম্প্রদায়ের বিশ্বকর্মা পূজা অনুষ্ঠিত হয় কারমা এবং ধারমা দুই ভাইয়ের গল্পেও কারামের ইতিহাস পাওয়া যায় কর্ম ধর্মের মধ্যে কে বড় এই দ্বন্দ্ব থেকে ধারণা করা যায় যে কর্ম ধর্ম উভয়ের সমান গুরুত্বের ব্যাপারটি বিশ্বকর্মা পূজার সাথে আর্য-অনার্য মিশ্র রীতির ফল যে যাই হোক মূল গল্পটি হলো- কারমা ধারমা সর্বমোট সাত ভাই


একসময় তারা বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে নৌকা নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায় কেবল কনিষ্ঠ ভাই বাড়িতে থেকে যায় সকলে বাড়ি থেকে বের হয়ে গেলে দেখা দেয় অর্থের সংকট ফলে কনিষ্ঠ ভাই বৌদিরা মিলে শুরু করে কারাম বৃক্ষের পূজা যেহেতু কারাম তাদের ত্রাণকর্তা একটানা তিনদিন চলে অনুষ্ঠান কিন্তু অন্য ভাইরা ফিরে আসে যখন নদীর ঘাটে বাকি ছয় ভাই ফিরে আসে তখন তারা দূর থেকে ঘণ্টা বাজায় বাড়িতে উৎসব আমোদের কারণে কেউ শুনতে না পেলে ছোট ভাই দেখতে আসে এসে সে নিজেও মাদল বাজাতে শুরু করে


একে একে সবাই এসে অনুষ্ঠানে বিভোর হয়ে পড়ে সব শেষে কারমা এসে এই অনুষ্ঠান দেখে রাগে ক্ষোভে কারাম বৃক্ষের ডাল নদীতে নিক্ষেপ করে এরপর সকলে ভাত খেতে বসলে বড়ো ভাই কারমার ভাতে পোকা দেখা দেয় তখন ধারমা বলে দাদা তুমি ডাল অবহেলা করেছো তাই এমন এবার কারমা ধারমা দুজন মিলে ডাল খুঁজতে বের হয় অনেক দূর গিয়ে তাদের খিদে পেলে বরই গাছের বরই খেতে গিয়ে দেখে কারমার বরইগুলো পোকায় ভরা কারমা ধারমা মনেকরে কারাম বৃক্ষকে অপমান করার জন্য এমনটা হয়েছে আবার দুজনে না খেয়ে হাঁটতে থাকে কোথাও সেই ভেসে যাওয়া ডাল দেখা যায় না


আবার খিদে পেলে তারা ডুমুর খেতে গিয়ে দেখে সেখানেও পোকা, আম খেতে গিয়ে দেখে তাতেও পোকা কারমা নদীর জল খেতে গিয়ে দেখে তা রক্তে লাল হয়ে গেছে শুধু কারমার ক্ষেত্রে এসব ঘটতে থাকে ধারমার খাবারে পোকা থাকে না এরপর তারা নদীতে কারাম ডাল ভেসে যেতে দেখে সেই ডাল তুলে নেয়ার পর আর কোনো খাবারে ধারমা পোকা দেখতে পায় না এবার বাড়িতে ডাল এনে পুঁতে মাদল বাজিয়ে কারাম পূজা শুরু হয় অতপর কারমা পাপ থেকে মুক্তি পায় এভাবে কারাম পূজা জনপ্রিয় হয়ে ওঠে


বাংলাদেশে ওরাওঁদের সবচেয়ে বড়ো সংকট হচ্ছে অর্থনীতি অধিক সারল্য ব্রাত্য জীবনের অংশীদার হওয়ায় ওরাওঁরা করতে পারেনি জায়গাজমি জঙ্গলাকীর্ণ বনভূমিতে বসবাসের কারণে আধুনিক প্রশাসনিক প্রতিষ্ঠানের সাথে ছিল তাদের দূরত্ব আর অন্যান্য সামাজিক জাতিগোষ্ঠী পরিশ্রমী ওরাওঁদের শ্রমের সুবিধা গ্রহণ করে একরকম তাদের শুধুই ব্যবহার করেছে হিন্দু-মুসলমানদের তুলনায় শ্রমে, আতিথেয়তায়, সারল্যে, নৈতিকতায় ওরাওঁ সমাজে কোনো অংশেই পিছিয়ে নেই

তারপরও দেশের ওরাওঁ সমাজকে রাষ্ট্রীয় জীবনের সাথে তাল মিলিয়ে চলার জন্য যে সমস্ত উদ্যোগ নেয়া উচিত তা আশাব্যঞ্জক নয় এই অবহেলার কারণে ওরাওঁ সমাজে ধর্মান্তরকরণ বেড়ে যাচ্ছে উত্তরবাংলার ওরাওঁরা বিভিন্ন সময় অর্থনৈতিক নিশ্চিয়তার সুযোগ নিতে গিয়ে অধিক হারে খ্রিস্টান ধর্মে ধর্মান্তরিত হচ্ছে যদিও অধিকাংশ ওরাওঁ নিজেদের হিন্দু বলে পরিচয় দেয় কিন্তু হিন্দুধর্মের সাথে তাদের অনেক পার্বণের মিল থাকলেও পার্থক্য বিস্তর


বহু ভাষা বহু সংস্কৃতি একটি রাষ্ট্রের অন্যতম সম্পদ জীবনাচরণে পৃথক জনগোষ্ঠীর পারস্পরিক মেলবন্ধন একটি রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে অধিক বৈচিত্র্যময় করে তোলে ভিন্ন চিন্তা রুচির প্রতি সেই রাষ্ট্রের মানুষের শ্রদ্ধা সম্মানের ভিত্তি হয় দৃঢ় সংখ্যাগুরুর প্রতিষ্ঠিত জাতিসত্তার বিমাতাসুলভ মনোভাব অনেক সময় ক্ষুদ্র জাতিসত্তা বিলুপ্তির অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়ায় ফলে সমতলের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ওরাওঁদের জন্য কি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কি নিত্যদিনের জীবনে বাঙালি জনগোষ্ঠীর বন্ধুসুলভ আচরণ অত্যন্ত জরুরী


যদিও ওরাওঁ জনগোষ্ঠী কিছু কিছু ক্ষেত্রে বিশেষ করে শিক্ষায় খুব কম হলেও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে পাঠ নিচ্ছে তারপরও সে সংখ্যায় খুবই নগণ্য বাংলাদেশের মূলধারার মানুষের সহযোগিতা ছাড়া তাদের জীবনমানের সঠিক পরিবর্তন অসম্ভব রাষ্ট্রীয় আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর নাচ গান পরিবেশন করে আমরা যেনো শুধু প্রদর্শনগত সহমর্মিতা না দেখাই আদিবাসী জনগোষ্ঠীর এই সংস্কৃতি যেমন আমাদের রাষ্ট্রীয় সম্পদ তেমনি তাদের আর্থ-সামাজিক অবস্থানের পরিবর্তন করাও আমাদের নৈতিক দায়িত্ব

 

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫