
প্রতীকী ছবি
সক্রেটিস হেমলক বিষ হাতে নিয়ে বলেছিলেন, I to die and you to live. Which is better only God knows. অর্থাৎ কেবল ঈশ্বরই জানেন কোনটি ভালো আর কোনটি মন্দ। একজন লেখক হিসেবে কে সফল আর কে ব্যর্থ এ হিসেবে না গিয়ে কে লিখছে আর কে লিখছে না এই হিসাবটা করলে সহজ হয়।
কারণ আজ যাকে আপনি ব্যর্থ, পচা বলে ফেলে দিচ্ছেন কাল যে তাকে ডেকে মালা পরাবেন না তার নিশ্চয়তা নেই অথবা তার পৃথিবী ছাড়ার পর তাকেই বেশি বেশি চর্চা করবেন না এমন কথা সাহিত্যের ইতিহাসে নেই। তাই একজন লেখক শুধু লিখে যান, আগ-পিছ না ভেবে লিখে যান। সময় যদি একদিন তার প্রয়োজনবোধ করেন তবে নিশ্চয়ই তারা মূল্যায়ন হবেই। নতুবা শত শত লেখকের মতো তিনিও আড়ালেই থেকে যাবেন। তাতে অবশ্য সাহিত্যের বা পাঠকের কোনো ক্ষতি হবে না। সেই যে গানের সাথে মিলে যায় অনেক লেখকের জীবন-কোথায় কবে কোন তারা ঝরে গেছে আকাশ কি মনে রাখে! কবে কোন লেখক পাঠকের মন থেকে হারিয়ে যায় তার খোঁজ কে আর রাখে! লেখালেখি নিয়ে প্রথমেই বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের একটি উক্তি দিয়ে শুরু করি।
তিনি বলেছেন, যদি এমন মনে বুঝিতে পারেন যে, লিখিয়া দেশের বা মনুষ্যজাতির কিছু মঙ্গল সাধন করিতে পারেন, তবে অবশ্য লিখিবেন। যাঁহারা অন্য উদ্দেশ্যে লিখেন, তাঁহাদিগকে যাত্রাওয়ালা প্রভৃতি নীচ ব্যবসায়ীদিগের সঙ্গে গণ্য করা যেতে পারে। একজন লেখক কেন লেখালেখি করেন এই প্রশ্নের উত্তর হয় ভিন্ন ভিন্ন। লেখা বিভিন্ন স্তরে পৌঁছে ভিন্ন ভিন্ন মাত্রা পায়। কোনো কোনো লেখকের জন্ম পারিবারিক আবহেই তৈরি হয়। কেউ বলেন মানে মন্তব্য করেন যারা জীবনের অন্যান্য ক্ষেত্রে ব্যর্থ তারা ব্যর্থতা ঢাকতে লেখালেখি করেন। এই তথ্য বা তত্ত্ব এক বাক্যে স্বীকার করারও কোনো কারণ নেই আবার একেবারে অস্বীকার করারও কারণ নেই। কারণ লেখালেখিতে চূড়ান্তভাবে ব্যর্থ মানুষ যেমন আছেন, সেভাবেই আছেন সফল মানুষও। লেখালেখি এক ধরনের দায়বদ্ধতা। লেখকের দায়বদ্ধতা থাকতে হয়। শখের বশে লেখা শুরু করলেও একসময় দায়বদ্ধতা আসতে হয়। সেই দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে তারা লেখেন।