Logo
×

Follow Us

শিল্প-সাহিত্য

ইসলামি শিল্পকলা পরিচর্যায় কয়েকজন বিলিয়নেয়ার

Icon

মহিউদ্দীন মোহাম্মদ

প্রকাশ: ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৪৮

ইসলামি শিল্পকলা পরিচর্যায় কয়েকজন বিলিয়নেয়ার

ইসলামি শিল্পকলা পরিচর্যায় যুক্ত পাঁচজন বিলিয়নেয়ার। ছবি: সংগৃহীত

ইসলামি শিল্পকলা একটি সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ও আধ্যাত্মিক ঐতিহ্যের গভীর প্রতিফলন। আজকের দ্রুতগতির বিশ্বে ক্রমে এর সংরক্ষণ ও প্রচার অতি আবশ্যক হয়ে উঠছে। গ্যালারি ও জাদুঘরের সীমানা ছাড়িয়ে অনেক দূরদর্শী মুসলিম ব্যবসায়ী নেতা ইসলামি শিল্পের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে কাজ করছেন। ব্যাবসায়িক জগতে তাদের কৃতিত্বের জন্য বিখ্যাত ওই সব ব্যক্তি ইসলামি শিল্প সংরক্ষণ ও প্রচারে তাদের সম্পদ বিনিয়োগ করছেন। আসুন বিশ্বের সেই বিলিয়নেয়ার কয়েকজনকে ঘনিষ্ঠভাবে দেখে নেওয়া যাক-


আব্দুল লতিফ জামিল পরিবার

আব্দুল লতিফ জামিল পরিবার ফোর্বস দ্বারা স্বীকৃত শীর্ষ ১০০ আরব পারিবারিক ব্যবসার একটি। আবদুল লতিফ জামিল পরিবার তাদের ব্যাবসায়িক সাফল্য ও সাংস্কৃতিক সংরক্ষণের জন্য পরিচিত। এই পরিবার ইসলামি শিল্পকে রক্ষা করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। তারা এমআইটি ও হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে শক্তিশালী অংশীদারি গড়ে তুলেছে। তারা বিশ্বব্যাপী ইসলামি শিল্পকে প্রচার করে এমন উদ্যোগকে সমর্থন করে। উপরন্তু লন্ডনের ভিক্টোরিয়া ও আলবার্ট মিউজিয়ামে জামিল গ্যালারি রয়েছে, যেখানে ৪০০টিরও বেশি বস্তু প্রদর্শন করা হয়েছে। উল্লেখযোগ্যভাবে, ‘জামিল পুরস্কার’ ইসলামি ঐতিহ্য দ্বারা অনুপ্রাণিত শিল্পীদের জন্য একটি আন্তর্জাতিক পুরস্কার ও হার্ভার্ড আর্ট মিউজিয়ামের প্রগ্রামগুলোতে অবদান তাদের প্রতিশ্রুতিরই দৃষ্টান্ত মাত্র। তাদের বিনিয়োগ প্রদর্শনী ও শিক্ষামূলক উদ্যোগে ইসলামী সাংস্কৃতিক সংরক্ষণকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে এবং বিশ্বব্যাপী দৃশ্যকলাকে সমৃদ্ধ করছে।


মুরাত উলকার

ফোর্বসের তালিকায় বিশ্বের ৫৯৭তম ধনী ব্যক্তি হলেন মুরাত উলকার। তিনি বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ খাদ্য সংস্থা ইলদিজের (ণরষফরু) প্রধান হিসেবে শুধু করপোরেট জগতেই নয়, শিল্প জগতেও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করেছেন। ইসলামি শিল্পের প্রতি তার আবেগ, বিশেষ করে ঐতিহ্যবাহী রূপের সমসাময়িক ব্যাখ্যা, তাকে বিভিন্ন প্রকল্প ও প্রদর্শনীতে বিনিয়োগ করতে পরিচালিত করেছে, যা ইসলামি সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের গুরুত্বের ওপর জোর দেয়। ইলদিজের গ্যালারির মাধ্যমে ইসলামি শিল্প প্রদর্শন করে ও সাংস্কৃতিক কথোপকথনকে উৎসাহিত করে উলকার শিল্পকে সমর্থন করে চলেছেন।


সাকিপ সাবানসি ও তার পরিবার

চলতি বছরের ১০ এপ্রিল তুরস্কের ইস্তাম্বুলের সাকিপ সাবানসি যখন মারা যান তখন তার সম্পদের পরিমাণ ছিল ৩.২ বিলিয়ন ডলার। ২০০৪-এর ফোর্বসের বিলিয়নেয়ার তালিকায় তার নম্বর ছিল ১৪৭। তিনি তুরস্কের শিল্প প্রবৃদ্ধির একটি কিংবদন্তি ব্যক্তিত্ব। সাকিপ সাবানসির উত্তরাধিকার ব্যবসার বাইরে সাংস্কৃতিক সংরক্ষণ পর্যন্ত প্রসারিত। তিনি ইস্তাম্বুলের সাবাঞ্চি মিউজিয়ামের প্রতিষ্ঠাতা। এখানে ইসলামি ক্যালিগ্রাফি, পাণ্ডুলিপি ও শিল্পকর্মের একটি চিত্তাকর্ষক সংগ্রহ রয়েছে। জাদুঘরে তার বিনিয়োগগুলো নিশ্চিত করেছে যে ইসলামি শিল্প সব পটভূমির লোকের কাছে সমাদৃত। এটি সাংস্কৃতিক উপলব্ধি ও বোঝাপড়াকে উৎসাহিত করেছে।


সাইয়েদ মোখতার আল বুখারি

সাইয়েদ মোখতার আল বুখারি ফোর্বসের ২০২৪ সালের বিলিয়নেয়ার তালিকায় ২২৮৭ নম্বরে রয়েছেন। সাইয়েদ মোখতার আল বুখারি একজন বিশিষ্ট মালয়েশিয়ান টাইকুন। তিনি তার আল বুখারি ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে সক্রিয়ভাবে ইসলামি শিল্পকে সমর্থন করেন। ফাউন্ডেশনটি ইসলামি আর্টস মিউজিয়াম মালয়েশিয়ার একটি প্রধান পৃষ্ঠপোষক, যা ইসলামি বিশ্বের শিল্পকর্ম, পাণ্ডুলিপি ও আলংকারিক শিল্পের একটি বিশাল সংগ্রহ প্রদর্শন করে। উপরন্তু ফাউন্ডেশনটি ব্রিটিশ মিউজিয়ামের ইসলামি আর্ট বিভাগের অফিশিয়াল স্পন্সর। সাইয়েদ মোখতার আল বুখারি ইসলামি শিল্পকলার সংরক্ষণ ও প্রচারের লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী ও শিক্ষামূলক উদ্যোগে অবদান রেখেছেন, যাতে এর সাংস্কৃতিক তাৎপর্য বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত ও গ্রহণযোগ্য হয়।


আব্দুর রহমান আল জায়ানি

আল জায়ানি ইনভেস্টমেন্টস ফোর্বসের করা চলতি তালিকায় শীর্ষ ১০০ আরব পারিবারিক ব্যবসার একটি হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। ইসলামি শিল্পের একজন বিশিষ্ট সমর্থক হিসেবে আল জায়ানির প্রতিশ্রুতি উল্লেখযোগ্য। আল জায়ানি শিল্প সংগ্রহ ও বিক্রিতে বিনিয়োগ করে সোথেবির নিলামে ২.৯ মিলিয়ন ডলার লাভ করেছেন। এই উদাহরণটি বৈশ্বিক মঞ্চে ইসলামি শিল্পের প্রশংসা ও প্রচার উভয় ক্ষেত্রেই পরিবারের গভীর সম্পৃক্ততাকে তুলে ধরে। আর এই সাংস্কৃতিক ভাণ্ডারের মূল্য সংরক্ষণ ও উন্নীত করার ক্ষেত্রে তাদের ভূমিকাকে আরো দৃঢ়করে। স্পন্সরশিপ ও জনহিতকর কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে আল জায়ানি পরিবার আঞ্চলিক ও বিশ্বব্যাপী ইসলামি শিল্পের দৃশ্যমানতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫