
প্রতীকী ছবি
শান্ত, স্নিগ্ধ ও শীতল ছায়ামণ্ডিত ছোট্ট গ্রাম কুসুমপুর। এই গ্রামেরই মেঠোপথ, নদ-নদী, ধানক্ষেতের আবহ পরিবেশে বেড়ে ওঠা মেয়ে আসমাউল হুসনা জোনাকি। ধানক্ষেতের পাশে এক পূর্ণিমা রাতে হতদরিদ্র কৃষক মনসুর মিয়ার কুড়িয়ে পাওয়া কন্যা।
তবে অভাবের সংসার হলেও নিঃসন্তান মনসুর মিয়া আর তার স্ত্রী আমেনার সুখের সীমা নেই ছোট্ট জোনাকিকে পেয়ে। আর তাই তাদের কুঁড়েঘর আলো করা মেয়ের নামও রাখল ‘জোনাকি’ বলে। দিন, মাস, বছর অতিবাহিত হয়। ধীরে ধীরে বড় হয় জোনাকি। স্কুল-কলেজের পাঠ চুকিয়ে মানবিক বিভাগে আজ স্নাতকোত্তর শেষ পর্যায়ে তার। তার দুই চোখে অনেক স্বপ্ন! ভবিষ্যতে সাংবাদিক হয়ে পত্রিকা অফিসে চাকরি করবে। কুসুমপুরে ছোট্ট একটা সংবাদপত্রের অফিস ‘দৈনিক জাগরণী’। মাত্র কয়েক দিন যাতায়াত করে ওখানকার প্রধান বার্তাবাহক আসিফ আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগ করে পত্রিকায় লেখালেখির ছোটখাটো একটা চাকরির ব্যবস্থাও করে ফেলে। মাস গেলে যে মাইনে হয় তাতে বেশ ভালোই হাত খরচ চলে যায় জোনাকির।
একবার কুসুমপুরের বাইরে খবরের সন্ধানের কাজে জোনাকিকে রসুলগঞ্জ যেতে হয়েছে। সেখানে বেশ কিছুদিন ধরেই কিছু অসাধু লোক গ্রামের সবার জন্য সুপেয় পানির ব্যবস্থা করার জন্য টিউবওয়েল স্থাপনের কথা থাকলেও যথাসময়ে টাকা-পয়সার ব্যবস্থা হলেও ঠিকমতো কাজ না করে উপরন্তু আরো অর্থ সাহায্য দাবি করে। এ নিয়ে কয়েকজনের আলাপ-আলোচনাও জোনাকি প্রত্যক্ষভাবে উপস্থিত থেকে জানতে পারে। এরপর যথেষ্ট ঝুঁকিপূর্ণ হলেও সবার অগোচরে গোপনে সেই আলোচনা মোবাইল ক্যামেরাবন্দি করে। পরবর্তী সময়ে সেই ভিডিও থেকে সংবাদ তৈরি করে এবং সেই খবর বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। চারদিকে জোনাকির সাহসিকতার জয়ধ্বনি শোনা যায়। পালিত কন্যা হলেও আজ জোনাকি মনসুর মিয়া আর আমেনার মুখ উজ্জ্বল করেছে।