-6809a7e0e9fb6.jpg)
প্রতীকী ছবি
রঞ্জনার মা চাইত না অঙ্কন কোনোভাবে তার মেয়ের জীবনে আসুক। মেধাবী অঙ্কনকে নীলঞ্জনা এনেছিল গৃহশিক্ষক হিসেবে।
ভিন্নঘরে ভিন্ন ঠিকানায় তাদের দুজনের বিয়ে হয়। বিয়ের দেড়যুগ বাদে সাক্ষাৎ দুজনার।
একটা পার্কে বিকেলবেলা বসে ছিল অঙ্কন। স্ত্রীর কাছ থেকে পালিয়ে এসে বেঞ্চে বসে আছে আনমনে। দৈবক্রমে রঞ্জনা ঘুরতে আসে সেখানে। অকস্মাৎ সাক্ষাতে দুজন বিস্ফারিত চোখে দুজনকে দেখে। একজন আরেকজনের ভেতর হুড়মুড় করে মেঘের মতো ভেঙে পড়ে। কিছুক্ষণ বাদে পার্কের পাশঘেঁষা রাস্তায় তারা হাঁটতে বেরোয়।
-তুমি কি সুখী? জিজ্ঞেস করে অঙ্কন।
-সুখ বলতে এই- কন্যার বাবার সঙ্গে মিলতে গেলে তোমার শরীরটা ভেসে ওঠে, উত্তেজিত হই- রঞ্জনা হাসতে হাসতে বলে। অঙ্কন বলে তুমি দেখছি সেই আগের মতো অসভ্য আছ!
-সে কি, সত্যটা স্বীকার করলাম মাত্র। আমি কি লজ্জাবতী, এক ছোঁয়াতেই বুজে যাব? বলে রঞ্জনা।
অঙ্কনেরও তো একই সমস্যা। সে জন্য মনোচিকিৎসকের শরণ নিয়েছেন অনেক দিন। ছায়াময় অশরীরি হয়ে তার চারপাশ ঘুরছে দেড় যুগ ধরে রঞ্জনা। ভরা পূর্ণিমার রাতে কিংবা সৈকতে অবগাহন করতে যাওয়ার কালে-সবখানেই তার অস্তিত্ব।
দুজনই লোকচক্ষুকে পরোয়া করে না, বাহুর মধ্যে বাহু নিয়ে আনমনে হাঁটছে। এভাবে দুই ক্রোশ পেরিয়ে তারা পশ্চিম দিকের নদীটার সেতুতে পৌঁছয়। তারপর-
রঞ্জনা বলে, আমার জন্য তুমি জলে ঝাঁপ দিতে পারবে?
অঙ্কন অমনি ঝাঁপ দেয়। হতবিহ্বল রঞ্জনাও পরক্ষণে ঝাঁপ দেয়। সাধারণ আর বন্যার জল মিলে নদীতে তখন তীব্র স্রোত। আকাশ থেকে নামছে সূর্যটা, ডুব দেবে বলে। যারা জল দেখছিল তারা দুজনকে ভেসে যেতে দেখল। আর যারা আকাশ দেখছিল, তারা দেখল সূর্যটা অন্যদিনের পারে পাড়ি জমিয়েছে।