Logo
×

Follow Us

শিল্প-সাহিত্য

এআই যেভাবে লেখকের বিকল্প হয়ে উঠছে

Icon

অলোক আচার্য

প্রকাশ: ১৭ আগস্ট ২০২৫, ১৫:৪১

এআই যেভাবে লেখকের বিকল্প হয়ে উঠছে

প্রতীকী ছাবি

এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার জয়জয়কারের দশকে এমন কোনো স্থান অবশিষ্ট থাকছে না, যেখানে এআই এর সফল ব্যবহার করা হচ্ছে না। এর প্রভাব মানবজাতিকে ভালো না খারাপ দিকে নিয়ে যাচ্ছে সেই প্রশ্নও এরই মধ্যে উঠতে শুরু করেছে। বিজ্ঞান মানুষকে একদিকে করেছে আরামপ্রিয়, অন্যদিকে চিন্তাশক্তিও ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। 

মানুষের মস্তিষ্ক যে চিন্তা করতে পারত এখন সেটি করবে এআই। বোধবুদ্ধির বিসর্জনে নতুন এক সাহিত্যের বিকাশ ঘটবে? সত্যিই এমন হবে বা হতে পারে? এআইয়ের আরো শক্তিশালী ভার্সন আসছে। এসব নাকি হবে মানুষের মস্তিষ্ক বা তার থেকেও শক্তিশালী। সেটা হলে এত কষ্ট করে না লিখে যদি গোটা উপন্যাস এআই দিয়ে লিখিয়ে নেওয়া যায় তা হবে লেখকের মৃত্যুর সমান।

সম্প্রতি মেটা জানিয়েছে তারা, মানুষের মস্তিষ্কের চেয়েও শক্তিশালী কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি, অর্থাৎ ‘সুপার ইন্টেলিজেন্স’ তৈরি করতে চায়। এ জন্য স্কেল এআইয়ের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী আলেক্সান্দ্র ওয়াংকের সহায়তায় নতুন গবেষণাগার তৈরি করতে আগ্রহী প্রতিষ্ঠানটি। সর্বাধুনিক প্রযুক্তির  গবেষণাগার চালুর জন্য কয়েকশ কোটি ডলার বিনিয়োগ করা হবে। চ্যাটজিপিটি দিয়ে লেখালেখি করায় কি ক্ষতি হতে পারে-এমন গবেষণাও হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি বা এমআইটির এক দল গবেষক ‘ইওর ব্রেন অন চ্যাটজিপিটি : অ্যাকিউম্যুলেশন অব কগনিটিভ ডেট হোয়েন ইউজিং অ্যান এআই অ্যাসিস্ট্যান্ট ফর এসে রাইটিং টাস্ক’ নামের একটি গবেষণা প্রকাশ করেন। এমআইটি গবেষকরা দাবি করেছেন, চ্যাটজিপিটি দিয়ে লেখায় মস্তিষ্কের সক্রিয়তা কমে যায়, ফলে তৈরি হয় এক ধরনের ‘কগনিটিভ ডেবথ’ বা ‘বুদ্ধিবৃত্তিক ঋণ’। তারা বলেন, এই অভ্যাস দীর্ঘ মেয়াদে শিখন ক্ষমতা কমিয়ে দিতে পারে। প্রতিষ্ঠানটির গবেষণায় ৫৪ জন প্রাপ্তবয়স্ককে চার মাস ধরে তিনটি ভিন্ন উপায়ে প্রবন্ধ লিখতে বলা হয় নিজের চিন্তা দিয়ে, সার্চ ইঞ্জিন দিয়ে, এবং এআই দিয়ে। গবেষকরা তাদের মস্তিষ্কের বৈদ্যুতিক কার্যকলাপ ও লেখার ভাষাগত বিশ্লেষণ করে দেখেন, যারা এআই ব্যবহার করেছেন তাদের ‘কগনিটিভ এনগেজমেন্ট’ বা মানসিক সম্পৃক্ততা ছিল সবচেয়ে কম। 

যারা এরই মধ্যে চ্যাটজিপিটিতে লেখার অভ্যাস করেছেন, তারা লেখার সবচেয়ে বড় ক্ষতি করেছেন। এরই মধ্যে তাদের লেখক-সত্তার মৃত্যু ঘটতে শুরু করেছে। এটা এক ধরনের নেশা অথবা নির্ভরশীলতা। আমরা যখন বিকল্প শক্তির ওপর নির্ভর করতে শুরু করি তখন সক্রিয়তা কমতে থাকে। চ্যাটজিপিটি বা চ্যাটবট যাই বলি না কেন এতে অভ্যস্ত হতে শুরু করলে ফিরে আসা বেশ কষ্টসাধ্য হবে। অতএব, সাহিত্যচর্চায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার আশ্রয়-প্রশ্রয়ে না যাওয়াই উত্তম। না হলে লেখক-সত্তার বিনাশ অনিবার্য।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫