Logo
×

Follow Us

শিল্প-সাহিত্য

আব্রুকন্যার তৃতীয় অধ্যায়

Icon

শফিক হাসান

প্রকাশ: ২৪ জুন ২০২০, ১৬:০৫

আব্রুকন্যার তৃতীয় অধ্যায়

ছবি: পিবিএ।

কারখানা কামাই করলে কামাই বন্ধ হয়ে যাবে- এমন ভয় তাড়া করেছিল সালমাকে। যে কারণে সুপারভাইজারের ফোনকল পেয়ে দেরি করেনি। তিন বছরের পুরনো স্বামীসহ রওনা দিয়েছে ঢাকার দিকে। দু’জনে এক কারখানায় কাজ করার কিছু ঝামেলা আছে, সুবিধাও আছে।

পরোক্ষভাবে বজলু তাকে অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি থেকে রক্ষা করে। বিয়ের আগে নোয়াখাইল্যা জামাল নানাভাবে মনোযোগ আকর্ষণ করতে চাইতো সালমার। বজলু ভাইয়ের সঙ্গে বিয়ের পর চুপসে গেছে। সুপারভাইজার রমজান তুচ্ছ ত্রুটিতেও খানকি মাগি বলে গালি দিত। সেটাও থেমেছে অনেকটা। 

লকডাউনের কারণে বাস বন্ধ। যে কারণে কিছুক্ষণ ছোট গাড়িতে আবার থেমে থেমে হাঁটতে হয়েছে দু’জনকে। ভরসা ছিল সঙ্গে থাকা বিভিন্ন কারখানার শ্রমিক ভাই-বোনদের উপস্থিতি। মনোবল জোগালেও গাড়ি নিয়ে টানা-হিঁচড়ার সময় এরাই হয়ে উঠেছিল প্রতিদ্বন্দ্বী।

মধুবাগ বস্তি থেকে সকালে দু’জন একত্রে কারখানায় আসে ব্যথা-বিদীর্ণ পায়ে। দূর থেকে জটলা দেখে ধক করে ওঠে বুক। আগুন-টাগুন লাগল নাকি! কাছে এসে দেখে গুপ্ত-আগুনের শিখা। বকেয়া বেতনের দাবিতে একাট্টা হয়েছে শ্রমিকদের একাংশ। কর্মে যোগদানেচ্ছুদের ঠেকিয়ে রেখেছে তারা। ম্যানেজারকে কল দিলে জানালেন, এখন কোনোভাবেই টাকা দেওয়া সম্ভব নয়। বিদেশি বায়ারদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না।

এমন ভাষ্যে উন্মত্ত শ্রমিকরা কয়েকটি রিকশা ভাংচুর করে। ঢিল ছোড়ে দূরের অটোরিকশাকে লক্ষ্য করে। স্লোগানে মুখরিত পিচঢালা পথের বাঁক। ‘মালিকপক্ষের দালালরা/হুঁশিয়ার সাবধান’ অনুরণন তোলে। কেঁপে ওঠে সালমার ভেতরটা। বর্তমান পরিস্থিতিতে আন্দোলনের যৌক্তিকতা খুঁজে পায় না। মানসপটে ভেসে ওঠে পোশাকনেত্রীর সুন্দর মুখ, সঙ্গে কঠোর হুঁশিয়ারি। 

বেলা বাড়লে আন্দোলনে যোগ হয় অচেনা মুখগুলো। বজলুকে আশপাশে খুঁজে পায় না। হয়তো মিছিলে সুর তুলছে। কোত্থেকে যেন একটা আধলা উড়ে আসে সালমার কপাল বরাবর। জ্ঞান হারানোর আগে সে দেখতে পায় মুদি দোকানি মাহবুব ভাইয়ের বিরক্ত মুখ।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫