ষাটের দশকের শক্তিধর কথাশিল্পী আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের ২৪তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ১৯৯৭ সালের ৪ জানুয়ারি ক্যানসার হানা দিয়ে শক্তিধর এই কথাকারকে পৃথিবী থেকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়।

এর আগে, ১৯৯৬-এর জানুয়ারিতে তার পায়ে ক্যান্সার ধরা পড়ে। মার্চে কলকাতায় এক অপারেশনের মাধ্যমে ডান-পা কেটে ফেলার পরও শেষ রক্ষা হয়নি। ঢাকা কমিউনিটি হাসপাতালে শক্তিমান এই  লেখকের মহাপ্রয়াণ ঘটে।

কিংবদন্তী এই কথাশিল্পীর জন্ম গাইবান্ধা জেলার সাঘাটায় । ১৯৪৩ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি গাইবান্ধা জেলার গোট্টিয়া গ্রামে মামা বাডিতে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। পৈতৃক নিবাস বগুড়া জেলায়। বগুড়া জিলা স্কুল থেকে ম্যাট্রিক (১৯৫৮) এবং ঢাকা কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাস করেন (১৯৬০)। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় অনার্স ও মাস্টার্স পাস করেন (১৯৬৪)। এরপর কর্মজীবন শুরু হয় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক পদে যোগদানের মাধ্যমে। পরবর্তীতে ঢাকা কলেজের বাংলার প্রফেসর ও বিভাগীয় প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

তিনি একজন স্বল্পপ্রজ লেখক ছিলেন। দুইটি উপন্যাস, গোটা পাঁচেক গল্পগ্রন্থ আর একটি প্রবন্ধ সংকলন এই নিয়ে তার রচনাসম্ভার। বাস্তবতার নিপুণ চিত্রণ, ইতিহাস ও রাজনৈতিক জ্ঞান, গভীর অন্তর্দৃষ্টি ও সূক্ষ  কৌতুকবোধ তার রচনাকে দিয়েছে ব্যতিক্রমী সুষমা। বাংলা সাহিত্যে সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর পরেই সম্ভবত তিনিই সর্বাধিক প্রশংসিত বাংলাদেশি লেখক। তাকে সমাজবাস্তবতার অনন্যসাধারণ রূপকার বলা হয়েছে।

১৯৭৭ সালে তিনি হুমায়ুন কবির স্মৃতি পুরস্কারে ভূষিত হন ৷ ১৯৮৩ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন৷ ১৯৮৭ সালে আলাওল সাহিত্য পুরস্কার অর্জন করেন। ১৯৯৬ সালে খোয়াবনামার জন্য পান প্রফুল্ল কুমার সরকার স্মৃতি আনন্দ পুরস্কার এবং সাদাত আলী আকন্দ পুরস্কার ।