মরমী কবি ও আধ্যাত্মিক সাধক দেওয়ান হাসন রাজার ১৬৫তম জন্মবার্ষিকী আজ।

১৮৫৪ সালের এই দিনে সুনামগঞ্জের লক্ষণশ্রীর ধনাঢ্য জমিদার পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। সারা জীবন কাটিয়েছেন গান ও সাধনায়।

তার গানে সহজ সরল স্বাভাবিক ভাষায় মানবতার চিরন্তন বাণী উচ্চারিত হয়েছিল। সেই সাথে সকল ধর্মের বিভেদ অতিক্রম করে তিনি গেয়েছেন মাটি ও মানুষের গান। তাই তিনি এখনো বেঁচে আছেন সুনামগঞ্জের মাটি ও মানুষের মাঝে। 

লোভ লালসার বাইরে থেকে সহজ সরল জীবন যাপন করেও তিনি রচনা করে গেছেন অসংখ্য লোকগান। মরমী এই সাধকের জন্ম-মৃত্যুতে বরাবরই খুব একটা আয়োজন থাকে না সুনামগঞ্জে। তবে এবছর জন্ম ও মৃত্যু বার্ষিকী একসঙ্গে পালন করবে জেলা শিল্পকলা একাডেমী ও হাসনরাজা ট্রাষ্ট।

মরমী সাধক হাসন রাজা জীবদ্দশায় প্রায় ২শ গান রচনা করেছেন। ১৯২২ সালের ৬ ডিসেম্বর মৃত্যুবরণ করেন তিনি। তার স্মৃতি ধরে রাখা হাসনরাজা মিউজিয়ামে অনেকেই আসেন দূর-দুরান্ত থেকে।

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরও ১৯২৫ সালে কলকাতায় এবং ১৯৩৩ সালে লন্ডনে এক বক্তৃতায় হাসন রাজার দুটি গানের প্রশংসা করেছিলেন। কিন্তু প্রখ্যাত এই মরমী সাধকের জীবন-দর্শন ও গানের চর্চা এখন আর প্রাতিষ্ঠানিক ভাবে হয় না বললেই চলে। কিন্তু মরমী এই সাধকের জীবন ও দর্শন কিংবা তার গানের চর্চা প্রাতিষ্ঠানিকভাবে এখানে হয় না বললেই চলে। 

মরমী সাধক হাসন রাজার জীবন দর্শন নিয়ে গবেষণা করার সুযোগ করার দাবি জানান সংস্কৃতিকর্মী আশরাফুল ইসলাম, সুমন, সাকুরা আক্তার সুমাসহ অনেকই। 

তারা জানান,মরমী সাধকের রাজধানী সুনামগঞ্জ। কিন্তু দুঃখের বিষয় মরমী কবিদের সৃষ্টিকর্ম জীবনদর্শন নিয়ে গবেষণা করার সুযোগ সুনামগঞ্জে নেই। তাই গবেষণা ও চর্চার ব্যবস্থা করা দরকার।

সাংস্কৃতিক ব্যাক্তিত্ব অনিশ তালুকদার বাপ্পু বলেন, হাসনরাজা একজন জমিদার হয়েও সাধারণ জীবনযাপন করে সাধারণ মানুষের জন্য গান লিখেছেন। এখনো হাসন রাজার গান নিয়ে সুনামগঞ্জে তেমন কোনো চর্চা হচ্ছে না। ফলে হাসনরাজা সর্ম্পকে বর্তমান যুগে অনেকেই অনেক কথা জানে না। 

হাসনরাজা ট্রাষ্টের উদ্যোগে জন্ম ও মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজনের কথা জানান হাসনরাজা জন্মবার্ষিকী উদযাপন পরিষদের আহবায়ক দেওয়ান গিয়াস চৌধুরী।

তিনি বলেন আমরা জন্ম ও মৃত্যু দিবস উপলক্ষ্যে সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা,হাসনরাজার ছবি আকাঁ প্রতিযোগিতাসহ নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছি।

মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ বলেন, হাসনরাজাসহ সুনামগঞ্জের মরমী সাদকদের জীবনদর্শন নিয়ে আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। জেলা শিল্পকলার উদ্যোগে ২১ ডিসেম্বর শিল্পকলা একাডেমিতে এ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে।