
প্রতীকী ছবি
আমাদের জীবনে দুটি বিষয় লেপ্টে আছে। ধর্ম ও সংস্কৃতি। ‘ধর্ম’কে ভিত্তি করে আমরা ভাগ হয়ে যাই সাতচল্লিশে। ব্রিটিশ ভারত থেকে মুক্ত হয়ে পাকিস্তান রাষ্ট্রের অধিবাসী হই। আর মুখ্যত সংস্কৃতিকে ভিত্তি করে বাঙালি জাতিসত্তাভিত্তিক বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হয় একাত্তর সালে। এই দুই রাষ্ট্রের উৎপত্তি ও উদ্ভাসন নির্ধারিত হয় রোরুদ্যমান পুঁজিবাদী ব্যবস্থার ভেতরে।
এই ব্যবস্থার সূত্র কী, এর উদ্দেশ্যইবা কী কিংবা কীভাবে একুশ বাঙালিত্ব ও বাংলা ভাষার সঙ্গে যুক্ত হয়ে গেল এবং এটি আরও বিবেচ্য হয়ে ওঠে যখন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্ম এই একুশের বীজমন্ত্র থেকেই। তবে একুশ কী দিতে চেয়েছিল? তার চেতনার মর্মমূলে আছে কী? দেশ যে আমরা পেয়েছি, তারই বা জনস্বীকৃতি কী ছিল ইত্যাদি অনেক প্রশ্ন এখনকার এই বাংলাদেশে অনেকের কাছে গুরুত্বহীন নয়।
বলতে চাই শুধু সাংস্কৃতিক শক্তি নয়, সংস্কৃতির সঙ্গে পুঁজি এবং রাজনীতিও ছিল; কিন্তু ভাষার বিষয়টি ছিল আধাররূপে। ফলত যেটি বলার, বাংলা ভাষা ও বাঙালিত্ব অভিন্ন। ভাষা এক হলেই দেশ এক হবে এমন কথা নেই। আবার ধর্ম এক হলেও দেশ এক হবে তাও নয়। উদাহরণ তো অনেক আছে- মুসলিম বিশ্বে আরব আর ইরান এক নয়, কিংবা জর্দান আর মিসরও এক নয়; ধর্মীয় ঐক্য আছে কিন্তু কৃষ্টিগত কারণেই তারা আলাদা। আবার বাঙালি কৃষ্টি একই হলেও পশ্চিমবঙ্গ আমাদের থেকে আলাদা, রাষ্ট্রও আলাদা। কারণ কী? পাকিস্তান থেকে আমাদের বেরিয়ে আসার ক্ষেত্রে কিছু বিষয় কাজ করেছে। ইতিহাসের দিকে চোখ ফেরালে দেখা যায় ‘কংগ্রেস’ নামক যে দলটি তৈরি হয়েছিল ব্রিটিশ বিরোধিতা বা জাতীয়তাবাদী শক্তির ঐক্যের প্রয়োজনে সেটি আসলে ‘দেশীয় জাতীয়তাবাদ’ প্রতিষ্ঠার জন্য। বস্তুত তা সর্বৈব ঘটেনি। ঔপনিবেশিক পুঁজির সঙ্গে কংগ্রেস নেতৃবৃন্দ বা কংগ্রেস এক পর্যায়ে একাট্টা হয়ে যায়। বিদ্যমান পুঁজি আর উদীয়মান পুঁজির সংস্রবটি এখানে লক্ষ্যণীয়।
সুতরাং ভারতের টাটা-বিড়ালারা যে পুঁজিপতি হলেন কিংবা ভারতের আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থায় পুঁজির সঞ্চালনের সঙ্গে তারা যেভাবে যুক্ত হলেন এবং অনেক দেশি-বিদেশি পুঁজিপতি যে পর্যায়ে তৈরি হলো তাতে মুসলমানরাও একটি দল ছাড়া হীনম্মন্যতায় পড়ে- বুঝি তার বিকল্পও কিছু ছিল না। এখানে স্মরণীয়, রাজনীতি ও অর্থনীতি কোনোটাই পরস্পর বিচ্ছিন্ন নয়। উভয়ের সংশ্লেষ থেকেই ব্যবস্থাটা গড়ে ওঠে। বুর্জোয়া দলাদলিতে তাতে বঞ্চিত হয় শ্রমিক-কৃষক-শ্রমজীবী জনতা। ফলে বুর্জোয়া রাজনীতিটা কখনো বিত্তহীনদের স্বার্থে নয়, হয়ও না। যা হোক, দেশভাগ অনিবার্য করেছিল এরকম ব্যবস্থাই। উর্দুভাষী বুর্জোয়া মুসলমানরা পূর্ব-বাংলার দৃষ্টান্ত তুলে ধরেই ইংরেজদের বোঝাতে সক্ষম হয় যে, হিন্দু জমিদাররা কীভাবে মুসলিম ছোট জমিদার বা মুসলিম কৃষক প্রজাদের মাত্রাতিরিক্ত শোষণ করেছে। এ ছাড়া স্বাধীন বাংলা প্রস্তাবও ভেস্তে যায় নির্ধারিত পুঁজির আনুকূল্য না পাওয়ায়। সেখানে পাঞ্জাবি বা উর্দুভাষী সামন্ত মুসলমানরা একটা ‘ডিভাইড রুল’ ষড়যন্ত্র তো করেছিল, বুর্জোয়া স্বার্থকে টিকিয়ে রাখার জন্য; কিন্তু পাকিস্তান হওয়ার পরও এই ধারা অব্যাহত থাকে। তারা ভাষার ওপর নিয়ন্ত্রণ চায়। তাদের পুঁজিবাদী স্বার্থেই এদেশীই অনুচর মোহাম্মদ আলীর মতো লোকদের পয়দা করে। ফলে ভাষা আন্দোলনের যে আপামর সরল-নিরীহ-বাঙালি জনতার ঐক্য সেটি পুঁজির সর্বরকম শক্তিকে ছাপিয়ে নির্ধারিত লক্ষ্যে পৌঁছতে সক্ষম হয়। এটা ফাঁটল ধরানো সম্ভব হয়নি। ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত যা বলেছিলেন সেটি পাঞ্জাবি জান্তারা আমলে নেয়নি। বরং ফতোয়া দেয় সংখ্যাসাম্য করা কিংবা পাকিস্তানের ঐক্যের জন্য কিছু করা যায় কি-না! কিন্তু বিপরীতে বঞ্চনার একশেষ হিসেবে তারা ভাষার ওপর চড়াও হয়।
পরবর্তীতে ১৯৫৬-তে যে সংবিধান হলো তাতে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার কথা বলা হলো, সংসদীয় গণতন্ত্রের কথাও এলো। যেটি আমাদের একাত্তরের সংবিধানেও ছিল; কিন্তু যুক্তফ্রন্ট গঠিত হলে তার ভাঙনও অত্যাসন্ন হয়ে পড়েছিল। সোহরাওয়ার্দী প্রধানমন্ত্রী হন। ১৯৫৭-তে ভাসানীর অনুপস্থিতিতে শেরে বাংলা ও সোহরাওয়ার্দীর মধ্যে ভাঙন ধরে। সেখানে সোহরাওয়ার্দী বলে ফেলেন যে, পূর্ব-বাংলার মানুষের পঁচানব্বই ভাগ সমস্যার সমাধান হয়েছে। এটা ছিল চরম মিথ্যাচার। ওই লেনদেন বুর্জোয়া পুঁজিপতিদের, সেই ক্ষমতার ধারাতেই তিনি এসব বলেন।
ভাসানী আলাদা করে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি গঠন করলেন। অনেকবার বলেছেন তিনি, পূর্ব-বাংলা আর পাকিস্তানের সঙ্গে থাকবে না। এভাবে আপামর জনতার যে আশা-আকাঙ্ক্ষা সেটি বারবার বুর্জোয়া রাজনীতিতে পদদলিত হলেও, সামষ্টিক ঐক্যের কাছে কখনো পরাস্তও হয়েছে। সুতরাং ভাষা আন্দোলনের যে সাফল্যগাথা সেটি কোনো শ্রেণি বা অংশের নয়। মূলে ছিল, কৃষক-শ্রমিক-জনতার আর্থনীতিক মুক্তি। সেরূপে আর্থ-সমাজ কাঠামো সৃজন যেখানে সেটি অক্ষুণ্ণ থাকবে। সুতরাং ভাষার দাবিটি এ পর্যায়ে প্রতীকী মাত্র। বঙ্গবন্ধু আপামর জনতার পক্ষে ছিলেন; কিন্তু ছয়দফা যে ‘জাতীয় সনদ’ সেখানেও কৃষক-শ্রমিক জনতার কথা ছিল না। অথচ স্বাধীন বাংলাদেশে বাকশাল প্রবর্তনের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু তা করতে চেয়েছিলেন; কিন্তু বিপরীতে গণতন্ত্রকে আবার একদলীয় ব্যবস্থার বাক্সেও ঢুকিয়ে দেন। আরও পরে বহুদলীয় ব্যবস্থার নামে যা হয় তা আমরা সকলেই জানি। এখন প্রশ্ন ধান ভানতে এতো শিবের গীত কেন? যেটি বলার ভাষা আন্দোলন একটি জাতিগত উত্থানের ও সর্বস্তরের মানুষের অধিকারের স্বীকৃতি, এটি মনে রাখতে হবে। বিশেষ করে, আমাদের বাংলা ভাষা কোনো সময়ই রাজকদর পায়নি, রাজাও তৈরি হয়নি। সেটি ছিল ব্রাত্য ও নিম্নবর্গের মানুষের ভাষা। উর্দুভাষীরা বাঙালিদের ঘৃণা করেছে। ইংরেজদের কাছেও সমাদর পায়নি। ফোর্ট উইলিয়াম কলেজে বাংলা শেখাটা তো ছিল পূর্ণ একপ্রকার রাজনৈতিক কৌশলমাত্র।
ঔপনিবেশ আর বুর্জোয়া চরিত্ররা এক হলে তার ক্ষমতায়ন ঘটে নানা উপায়ে। রাজনীতি যাদের হাতে থাকে তারা সে লোভ বা আরাম আয়েশ অগ্রাহ্য করতেও পারেন না, দমনও করতে পারেন না। এর ভেতর কৃষক-শ্রমিক জনতার অধিকার প্রতিষ্ঠা, বাঙালিত্ব বা জাতীয়তাবাদী স্বপ্ন পূরণ বহুদূর পিছিয়ে ছিল। মুসলমানরা তো আরবি-ফারসি-উর্দুর চক্রে পড়ে নিজের ভাষা কোনটা, কোন ভাষায় সে কবিতা লিখবে তা ভুলেই গিয়েছিল। বিভ্রান্তিও কম সৃষ্টি হয়নি। বোধ করি এখনও তা কাটেনি এবং অবলুপ্তও হয়নি। এই ঢাকা শহরেও অনেক পরিবার আছে মুসলমান হিসেবে পূর্ণ ভোগবাদী এবং ভাষা হিসেবে প্রথমে ইংরেজি (যা বেদাত মনে করেছিল এক সময়) পরে আরবি বা ফারসি-উর্দুর দিকে ঝুঁকে পড়ে। এটা এখনো যায়নি। এর পেছনেও আমাদের সমাজ-কাঠামোতে পুঁজির যে উদীয়মান রূপ পরিলক্ষিত হচ্ছে সেটাই দায়ী। এখন তো ঢাকা শহরে যত সাইনবোর্ড, বিলবোর্ড, ব্যানার সব ইংরেজিতে। গ্লোবাল বিশ্ব বুঝি এই ‘সুযোগ’টুকু করে দিয়েছে। ফলে বাংলা ভাষার যে লড়াই সেটি এখনও শেষ হয়নি। ভাষাকে আমরা ঠিক কাজে লাগাতে পারিনি। ভাষা আন্দোলন থেকে মুক্তিযুদ্ধ পর্বে নানা সময়ে পাকিস্তানি রাষ্ট্রশাসকরা বাংলা ভাষাকে নানাভাবে পদদলিত করেছে। অপমানিত করেছে। বাংলা হিন্দুর ভাষা, রবীন্দ্রনাথ হিন্দু, নজরুল মুসলমান এসব করেছে। কারণ, ভাষাকে অবদমিত করে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি কিংবা দেশাত্মবোধ-জাতীয়তাবোধ সেটি নস্যাৎ করা সম্ভব হবে বলে তারা মনে করেছে। সেজন্য বারবার হক-সোহরাওয়ার্দী-ভাসানীর মধ্যে ভাঙ্গন ও দ্বিধা-সংশয় সৃষ্টি করা হয়েছে। সিয়াটো সেন্টো চুক্তি নিয়েও কালিমালেপনের চেষ্টা হয়েছে; কিন্তু বঙ্গবন্ধু আপাদমস্তক আপসহীন ছিলেন। তার যুক্তি ও বিশ্বাসে কোটি জনতার ভেতরে একপ্রকার প্রেরণা পেয়েছিলেন তিনি।
মুক্তিযুদ্ধটিও সেই লক্ষ্যেই সম্পৃক্তি পায়। ভাষার ঐক্য, বাঙালির ঐক্য ঐক্যসূত্রে পৌঁছায়। সেখানে বুর্জোয়া ষড়যন্ত্রও বিন্দুমাত্র টলেনি। সত্তরের নির্বাচনে যে জনসমর্থন সেটি ঠিক ভাষা-সংগ্রামে আপামর জনতার ঐক্যেরই স্মারক প্রতিফলন বলা যায়। এই জাতীয়তাবাদী রাষ্ট্রের ভেতর দিয়ে বাংলা ভাষার রাজাসনও প্রতিষ্ঠিত হয়। সেটি হাজার বছরের ইতিহাসে প্রথম; কিন্তু স্বাধীনতার পর তা মুক্তির আস্বাদে পর্যবসিত হয়নি। ঠিক বুর্জোয়া ব্যবস্থার ভেতরেই শাসন ব্যবস্থা বন্দি হয়ে পড়ে। নতুন রাষ্ট্রে ঐক্য পরাভূত হয়। নতুন শ্রেণি তৈরি হয়। সংসদীয় গণতন্ত্রে যারা সংসদ হন তারা জনপ্রতিনিধি হলেও জনতার দাবি উপেক্ষা করেন। ক্ষমতা আর শাসনের অপব্যবহার রাষ্ট্রের নানা স্তরে কায়েম হলে পুঁজির উচ্ছিষ্ট হননের চেষ্টায় অনেকেই সক্রিয় হয়ে ওঠেন। পেশিশক্তির হাতে চলে যায় পুরো ক্ষমতা-ব্যবস্থা। সন্ত্রাস, দুর্নীতি কায়েম হয়। যেখানে দেশপ্রেম ও সংখ্যাগরিষ্ঠের শাসন বা অধিকার হয় পদদলিত।
দেশপ্রেম যেমন প্রতিষ্ঠা পায় না তেমনি সুবিধা ও ভোগের অনলে দগ্ধ হয় প্রগতি বা সাম্যের পথ। এসব ঘটতে থাকে নানা নামে, প্রয়োজনে কিংবা সুবিধাবাদী শ্রেণির স্বার্থাদ্ধোরের লক্ষ্য থেকে। ফলে ভাষার অধিকার, ভাষাচেতনার স্বপ্নও পরাস্ত হয়। সমাজতন্ত্র ও গণতন্ত্র কায়েম হয় না। ফলে ঘনিয়ে আসে জাতির জনকের মর্মান্তিক মৃত্যু। আর এই ঘাতক দলের হাত দিয়ে যারা বেনিফিসিয়ারি হন তারা ভাষাভিত্তিক জনতার চেতনার শক্তিকে পদদলিত করে পূর্বের অধঃপতিত ভূস্বামীদের মতো পেটিবুর্জোয়া ব্যবস্থার দিকে নিয়ে যায়। কার্যত, এর ইঙ্গিতটি ছিল ওই পাকিস্তানি স্বার্থের অনুকূলেই। ঘাতকরা কার্যত কোনো দর্শনই দিতে পারেনি। বিপরীতে তাদের কু-দর্শন ছিল, মুসলমানিত্বের নামে উর্দুভাষী পাকিস্তান রাষ্ট্রধারা কায়েমের চেষ্টা। সরলমনা সংখ্যাগরিষ্ঠ কৃষক-জনতাকে ধর্মের নামে ব্যবহার করে তাদের অমূলক স্বপ্ন বা আশ্বাস দেখানো। যেখানে তারা ব্যর্থতার পথে নিমজ্জিত হয়। একপ্রকার ‘আত্মহত্যার’ দিকে সরে যায় রাষ্ট্রের অনেককিছু। ভাষা-দেশ-জাতি-জাতীয়তার নামে সবকিছু পেছনগামী হয়ে পড়ে। ভাষা আন্দোলন থেকে যতো অর্জন সবটাই দুর্বল হয়ে পড়ে। উর্দিশাসকের আর বিভিন্ন সুযোগসন্ধানী শ্রেণির কবলে পড়ে দেশ। শুধু নাম টিকে থাকে জাতীয় বিধিবিধান।
কিন্তু ভাষা আন্দোলনের শক্তিই তো বাঙালি ও বাংলাদেশের রক্ষাকবজ। এই রক্ষাকবজই বাংলাদেশ রাষ্ট্রকে এক উদ্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছে দিয়েছিল। সেই শক্তিই আবার যেন পুনরুদ্ধার করল। আবার দীর্ঘ সময় পরে নতুন প্রজন্মের হাতে উঠলো ঐতিহ্যিক চেতনার মশাল। সেখানে একটি ব্যাপার এখন মনে হচ্ছে, নতুন পুঁজি ব্যবস্থা যতোই অক্টোপাসের ন্যায় গিলে খাক অনেককিছু, যতই আগ্রাসন নামিয়ে আনুক জাতীয় জীবনে তবুও ঐক্যশক্তির জয় হবেই। এ ঐক্য বর্তমান উদীয়মান তরুণরাই টিকে রাখবে। তাদের ভেতর থেকেই এর শাখা-প্রশাখা বিস্তার করবে। পাদপীঠও রচনা করবে।
একুশের মাসব্যাপী বইমেলা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাশক্তির প্রতি অদম্য আনুগত্য, বাংলা বর্ষবরণ উৎসব, বর্ষা-বসন্ত উৎসব প্রভৃতির ভেতরে যতোই কর্পোরেট রঙ থাক; তার একটা ঐক্যশক্তি আছে- যা এ ভূখণ্ডের গোটা জাতিকে লক্ষ্যনির্দিষ্ট করে তুলবে। তাতে অপশক্তিরাও ইতিবাচক পথে ঘুরে দাঁড়াবে। শোধনরূপ হয়ে উঠবে। আরও গর্বিত জাতি হিসেবে তখন আমরা মাথা তুলে দাঁড়াব। এটা শত প্রতিকূলতার মধ্যে দাঁড়িয়েও মনে হয়। সেজন্য একুশের শক্তি, ভাষা আন্দোলনের অভ্যন্তরীণ শক্তি অনেক অদম্য ও তীক্ষ্ণ প্রেরণাসংকুল, একে পরাস্ত করা যায় না, পরাস্ত হয় না বরং সকলকে উৎসবের রঙে রাঙায়, প্রাণোচ্ছল করে তোলে।