Logo
×

Follow Us

শিক্ষা

ইবির স্মৃতিসৌধে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের হাতাহাতি

Icon

ইবি প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৬ মার্চ ২০২২, ১৪:৫০

ইবির স্মৃতিসৌধে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের হাতাহাতি

আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের মধ্যে হাতাহাতি

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্মৃতিসৌধে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করাকে কেন্দ্র করে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। এতে ক্যাম্পাসের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও  শিক্ষকদের মধ্যে বিব্রতকর অবস্থা সৃষ্টি হয়।

আজ শনিবার (২৬ মার্চ) সকাল ১০ টায় তিন দফায় এ ঘটনা ঘটে। এতে বঙ্গবন্ধু পরিষদ শিক্ষক ইউনিটের শ্রদ্ধাঞ্জলি বেদীতেই ভাংচুর করা হয়। ঘটনাস্থলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ থাকলেও সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। এর প্রতিবাদে বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব ম্যুরালের পাদদেশে মানববন্ধন করে বঙ্গবন্ধু পরিষদ শিক্ষক ইউনিট।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে সকাল ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। 

এসময় উপস্থিত ছিলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেন ভূঁইয়া। 

পরে শিক্ষক সংগঠন, ছাত্র সংগঠন, হলসমূহ, বিভাগসমূহ একে একে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানায়। শ্রদ্ধা নিবেদনের এক পর্যায়ে বঙ্গবন্ধু পরিষদ শিক্ষক ইউনিটের নাম ঘোষণা না করায় তারা বেদীতে উঠতে চেষ্টা করে। এসময় সহকারী প্রক্টর ড. শফিকুল ইসলাম তাদের বাধা দেয়। এতে বঙ্গবন্ধু পরিষদ শিক্ষক ইউনিটের শিক্ষক শহিদুল ইসলামের সাথে সহকারী প্রক্টরের বাকবিতণ্ডা হয়। 

এসময় বঙ্গবন্ধু পরিষদ শিক্ষক ইউনিটের সভাপতি অধ্যাপক ড. কাজী আখতার, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. তপন কুমার জোদ্দারসহ অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান, অধ্যাপক ড. আহসান উল আম্বিয়া, অধ্যাপক ড. পরেশ চন্দ্র বর্মণ, সহকারী অধ্যাপক আরিফুল ইসলাম, নাহিদ হাসান, হাফিজুল ইসলামসহ প্রায় প্রায় ২৫ জন শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন। 

বাকবিতণ্ডার পরে বঙ্গবন্ধু পরিষদ শিক্ষক ইউনিটের শিক্ষকরা বেদীতে ওঠার চেষ্টা করলে অপর পক্ষ তাদের বাধার সৃষ্টি করলে অন্য গ্রুপের শিক্ষকদের সাথে তাদের হাতাহাতি হয়। এতে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন শাপলা ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন, বঙ্গবন্ধু পরিষদ কেন্দ্র ঘোষিত অংশের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মাহবুবুল আরফিন, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মামুনুর রহমান, অধ্যাপক দেবাশীষ শর্মা, অধ্যাপক মিজানুর রহমান, সহযোগী অধ্যাপক বাকি বিল্লাহ বিকুল, সাজ্জাদ হোসেন, সহকারী প্রক্টর শফিকুল ইসলামসহ প্রায় ১৫ জন শিক্ষক তাদের উপরে চড়াও হয়। 

এক পর্যায়ে শিক্ষক ইউনিটের ফুলের তোড়া ভেঙে ফেলে তারা। এরপর দুই গ্রুপের প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষক মূল বেদীতে সবার সামনে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে। প্রায় ২০ মিনিটের এ ঘটনায় তিন দফায় হাতাহাতি করে শিক্ষকরা। এসময় শিক্ষক ইউনিটের নেতাকর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুবর রহমান, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক আলমগীর হোসেন ভূঁইয়ার কাছে অভিযোগ জানাতে গেলে ফের বাধা দেয় অন্যপক্ষ। 

পরে তাদের সামনে ধাক্কা দিয়ে শিক্ষক ইউনিটের শিক্ষকদের বেদী থেকে নামিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে তারা। এসময় প্রক্টর পরিবেশ শান্ত করার চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হয়। একপর্যায়ে শিক্ষক ইউনিটের শিক্ষকরা বেদী থেকে নেমে যায়।

এ বিষয়ে বঙ্গবন্ধু পরিষদ কেন্দ্র ঘোষিত অংশের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মাহবুবুল আরফিন বলেন, তাদের জুনিয়র শিক্ষকরা আমাদের সিনিয়রদের সাথে বেয়াদবি করায় এমন পরিস্থিতি তৈরী হয়েছে। এটি পূর্বপরিকল্পিত ঘটনা। আমরা কেন্দ্রকে জানিয়েছি।

এ ঘটনার পর মানববন্ধনে বঙ্গবন্ধু পরিষদ শিক্ষক ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. তপন কুমার জোদ্দার বলেন, শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর অধিকার সবার আছে। আমরা বঙ্গবন্ধুর কর্মী হয়ে আমাদের শ্রদ্ধা নিবেদন করতে না দিয়ে বিএনপির লোকদের সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনাটি আমরা ভিসিকে জানানোর চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু ভিসি ফোন রিসিভ না করায় আমরা বেদীতেই উপস্থিত প্রো ভিসির কাছে অভিযোগ জানিয়েছি। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য গিয়েছিলাম। এটি একটি পূর্বপরিকল্পিত ঘটনা। আমরা এর সুষ্ঠু তদন্ত করে বিচার দাবি করছি।

এ বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, আমাদের শিক্ষকরা মুখেই বলি বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী। স্মৃতিসৌধের বেদীতে যে ঘটনা ঘটেছে তা গ্রহণযোগ্য নয়। 

সহকারী প্রক্টরের ভূমিকায় তিনি বলেন, ভিডিও ফুটেজ দেখে এ বিষয়ে আমি বলতে পারবো।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫