Logo
×

Follow Us

শিল্প-সাহিত্য

সে নিজেকে অস্বীকার করতে চেয়েছিল

Icon

জাহিদ সোহাগ

প্রকাশ: ১৬ মে ২০২২, ১৪:২৭

সে নিজেকে অস্বীকার করতে চেয়েছিল

প্রতীকী ছবি

সে নিজেকে অস্বীকার করতে করতে থামে, একটি বিন্দুর জন্য, যার পর তার আর দ্বিধা নেই নিজেকে নিয়ে। যদি কখনো সে উইল করে যেতে পারে এই বিন্দু, মানে চৌঠা মার্চের পর আমার যা যা তা আমি নিশ্চিতভাবে নিজের বলে মেনে নিলাম। তাহলে তার নিজের স্বীকৃত জীবন কতটুকু হতে পারে-যদি দীর্ঘ হয় এবং তার ভাষায় অস্বীকার করার জন্য কিছু সে করে ফেলে তাহলে সেই বিন্দুটি আকাশের দূরতম তারার মতো তার সঙ্গে কোনো অর্থবহ সম্পর্ক তৈরি করে না।

সে নিজেকে চারটি এক্সিবিশনের সুযোগ দিয়েছে। এখন সে কথাটা এভাবেই বলছে; কিন্তু সেই সময়গুলোতে সে মনে করতো সে তার সেরা কাজই ছুঁড়ে দিচ্ছে মানুষের চক্ষু টাটানোর জন্য যা যথেষ্টই।

সেসব সে আকড়ে ধরে থাকতে পারতো। থাকেনি। ভেবেছে, কখনো দুর্বল কোনো মুহূর্তেও মনে হবে রইলো কিছু, ধুলো ঝেড়ে দেখবে বা দেখাবে। কারো একটি মন্তব্য তাকে আন্দোলিতও করতে পারে। সে তো জানেই প্রশংসা বা প্রশস্তি, নিন্দা বা ঈর্ষা একটি ফাঁদ, যাতে বিশ্বাস করে বসলে চারপাশে অট্টহাসির ঢেউয়ে সে ভেসে যাবে কোনো কিছু বুঝতে না পেরেই। 

কোনো এক সন্ধ্যায় সে পোড়াতে শুরু করে। দাউ দাউ আগুনের পাশে বসে সে তার জীবনের চারটি মহৎ বা ব্যর্থ প্রয়াসকে পুড়িয়ে দিচ্ছিল। কোনো একটা ড্রইংও বাঁচাবে না। কাগজ কালি ইজেল তুলি সবই সহমরণের দিকে যাত্রা করেছে।

সকালে সে এক পোশাকে বাসা থেকে বের হয়ে যায়। নতুন এক সেট জামাপ্যান্টের ভেতর সে নিজেকে তড়িঘড়ি লুকিয়ে ফেলবে পুরনো শেষচিহ্ন থেকেও বাঁচতে। মাথা খালি করতে সে শহরের একটি অভিজাত বারে, যেখানে প্রস্রাবের গন্ধ উপচে ওঠে না, তাকে কেউ চিনবে না, সে মাতাল হয়ে শব্দ-নৈরাজ্যের ভেতর থির বসে নতুন একটি ড্রইং নিজের নিউরনে এঁকে নিলো। সে জানে আজকের রাতে কারো ডেরায় আশ্রয়প্রার্থী হতে গেলে অনেক কথার ঢেউ ওইসব রেখাগুলোর উপর আছড়ে পড়বে। সে কয়েকজনকে ফোন করেও বলতে পারলো না কেনো ফোন করেছে বরং মধ্যরাতে নন্দনতাত্ত্বিকরা গালির লক্ষ্য হয়ে উঠলো।

সে তার বাসায় ফিরে যাবে-যদিও ফিরবে না বলে মনস্থির করে ড্রেনে চাবির গোছা ফেলতে গিয়ে মনে হলো পেছনে ছোড়া হাতে মিরণ। নিজের ছায়া পুরনো রক্তের মতো কালো স্রোতে-তার পকেটে চাবি থাকবার কথা নয়-অগত্যা ড্রেন হাতালে লাউয়ের ডগার মতো ঢেউঅলা কোরবানির ছোড়ার বান্ডেল ওঠে, কদিন থেকে এমন ফিসফাসে বাতাস রাজনৈতিক হয়ে উঠেছে।

সে চারতলায় উঠে নিজের দরোজার সামনে বমির ভেতর পরে থেকে থেকে ভাবার অবকাশ পেয়েছে, তার নতুন জীবন চৌঠা মার্চের পর থেকে শুরু করবে কিনা। বরং সকাল হোক। এখনো প্রতিবেশির জুতোর শব্দ তার কাছে এসে থামতে অনেক দেরি।   

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫