Logo
×

Follow Us

শিল্প-সাহিত্য

সিনেমা আমার শৈশবের সেই পুতুল: সমীরা মাখ্মলবফ

Icon

সুদেষ্ণা ঘোষ

প্রকাশ: ২৯ জানুয়ারি ২০২০, ১১:৪৯

সিনেমা আমার শৈশবের সেই পুতুল: সমীরা মাখ্মলবফ

ইরানি চলচ্চিত্র পরিচালক সমীরা মাখ্মলবফ।

সমীরা মাখ্মলবফ- মূলত ইরানি চলচ্চিত্র পরিচালক আর বাবা প্রভাবশালী ইরানি পরিচালক ও লেখক মোহসেন মাখ্মলবফ। সমীরা ইরানি চলচ্চিত্রের নবকল্লোল আন্দোলনের অন্যতম ব্যক্তিত্ব। লন্ডনে রয়েছে তাদের আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন- মাখ্মলবফ ফিল্ম হাউস, ছোট বোন হানা মাখ্মলবফ-ও চলচ্চিত্র পরিচালনা করে খ্যাতি অর্জন করেছেন। সমীরা পরিচালিত চলচ্চিত্রগুলো- দ্য অ্যাপল, ব্ল্যাকবোর্ড, অ্যাট ফাইভ ইন দি আফটারনুন, সেপ্টেম্বর ইলেভেন, টু-লেগ্ড হর্স। সমীরার এই সাক্ষাৎকারটি প্রকাশিত হয়েছে তাদের মাখ্মলবফ পারিবারিক ওয়েবসাইটে। সাক্ষাৎকারটি ভাষান্তর করেছেন সুদেষ্ণা ঘোষ।

‘টু- লেগড হর্স’ চলচ্চিত্রাটি তৈরি করাকালীন আপনার দিকে বোমা ছোড়া হয়েছিল...

হ্যাঁ, আমরা তখন উত্তর আফগানিস্তানের শরপোল নামের একটি শহরে শুটিং করছিলাম। সেটা ছিল আমাদের শুটিং-এর ৪০তম দিন। দৃশ্যটি ঘটেছিল পুরনো বাজারের মধ্যে। আমরা আবার শুটিং করতে শুরু করি ভোর ৭টা পর্যন্ত। অতিরিক্ত অনেক মানুষ আমাদের সঙ্গে কাজ করেছিল। যেমন- ছোট বালকরা গাধা আরোহন করে ফ্রেমের পাশ থেকে যাচ্ছিল অথবা মানুষরা ঘোড়ার পিঠে অথবা গরুর গাড়িতে চেপে যাচ্ছিল বাজারের মধ্যে দিয়ে। ব্যস্ত বাজারটির মধ্যেই আমাদের ক্যামেরার সামনেই একটি হাতবোমা নিক্ষেপ করা হয়েছিল।

তিনি বলেন, পরবর্তীকালে, ক্যামেরাবন্দি করা দৃশ্যের সম্পূর্ণ কাঠামোটি পুনরায় দেখার মাধ্যমে স্পষ্ট হয়েছিলাম- আক্রমণাত্মক হাতবোমাটি গণহত্যার উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়। ফলে, দৃশ্যে উপস্থিত অতিরিক্ত ব্যক্তিবর্গ, বিশেষত শিশুরা, দর্শকরা এবং আমার সহকর্মীরা যারা অতিরিক্তদের নিমন্ত্রণ করেছিলেন- তারা একদল মানুষ আহত হয়েছিলেন। 

বিস্ফোরণ পরবর্তী সময়ে আপনার প্রতিক্রিয়া ঠিক কি রকম হয়েছিল?

আমি প্রথমত হতবাক হয়ে গিয়েছিলাম। কয়েক মিনিটের জন্য আমি কিছু অনুধাবন করতে পারছিলাম না। এমনকি আমার চিত্রগ্রাহক যিনি দৃশ্যগুলোকে ক্যামেরা বন্দি করছিলেন, তিনিও হতবাক হয়ে গিয়েছিলেন এবং বিষ্ফোরণটি ঘটেছিল তার পাশেই। কিছু মুহূর্ত পর আহতরা চিৎকার করতে শুরু করেছিল এবং একের পর এক মাটিতে পড়ে যেতে থাকল। জায়গাটি রক্তাক্ত হয়ে গিয়েছিল এবং আহতরা সাহায্য চাইছিলেন। ফরিদ নামক আমার একজন সহকর্মী গুরুতরভাবে আহত হয়েছিল, তিনি একটি আইনি খসড়া তৈরি করছিলেন এবং তার মাকে নিয়ে আতঙ্কে ছিলেন।

আমরা তাকে কৃত্তিম প্রশ্বাস সরবরাহ করছিলাম এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে হাসপাতালের ঠিকানা জিজ্ঞাসা করেছিলাম। কিন্তু সেখানে কোনো রকম সার্জারির ইউনিটের ব্যবস্থা ছিল না। কয়েকজন আমাদের সামনেই মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেছিল। কেবল এই অভিযোগে যে, তারা সিনেমায় প্রদর্শিত হয়েছিল এবং আমাদের সঙ্গ দিয়েছিল। বিস্ফোরণের পরেই দুর্ভাগ্যবশত আমাদের ক্যামেরা অফ হয়ে গিয়েছিল এবং আমরা যা দেখেছিলাম তার কোনো কিছুই ক্যামেরা বন্দি করতে পারিনি।

সেই হাতবোমাটি বিস্ফোরিত হয়েছিল ৮০টি খন্ডে, প্রতিটি খন্ড ছিল গুলির মতো যা আমাদের গ্রুপ এবং অতিরিক্ত লোকেদের নিশানা করে নিক্ষেপ করা হয়েছিল। পরে আমি দেখেছিলাম ক্যামেরার ওপরের ছাতাটিজুড়ে বহুসংখ্যক ছিদ্র তৈরি হয়েছিল এবং যদিও বোমা-কণা শোষণ না করেই ঘোড়াটি দুঃখজনক ভাবে তার প্রাণ হারায়। সেখানে আরো ভয়ানক দুর্ঘটনা ঘটতে পারতো। একটি নিষ্পাপ ঘোড়া মানুষদের নৃশংসতার শিকার হয়েছিল।

বোমাটি কে নিক্ষেপ করেছিল?

বিষয়টি এখনো পর্যন্ত আমার কাছে প্রশ্ন হিসাবেই রয়ে গিয়েছে। কে এবং কেন? আমি নিজেকে প্রশ্ন করেছি কেন তারা আমাদের নিজেদের দেশে সিনেমা বানাতে দেয় না? কেন তারা আফগানিস্তানে আমাদের সিনেমাকে উদ্দেশ্য করে বোমা ছোড়ে? কেন তারা ইতালির উৎসব প্রধানকে অর্থ প্রদান করে আমার বাবার চলচ্চিত্র স্ক্রিনিং-এর ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে? এইসব এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক ঘটনাগুলোকে কি আমি লোক সম্মুখে ব্যক্ত করতে পারব না? এই বিষয়টা একেবারেই স্পষ্ট যে- বোমা নিক্ষেপের উদ্দেশ্য ছিল আতঙ্ক ছড়ানো। আমরা চলচ্চিত্র নির্মাণের মাধ্যমে কাদের সুবিধাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছি?

আপনার বাবা কি সেই দৃশ্যে উপস্থিত ছিলেন?

ভাগ্যের পরিহাস, এটা সেইদিনেই ঘটেছিল যেদিন আমার বাবা দৃশ্যের জন্য এসেছিলেন। তার অনুপস্থিতিতে পূর্ববর্তী দিনগুলোতে এটা কেন ঘটেনি? একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্যকে উদ্দেশ্য করে বোমাটিকে নিক্ষেপ করা হয়েছিল। প্রাণঘাতী বোমাটি ছিল ৫ মিটার ব্যাসার্ধ যুক্ত। এই বোমা শুধু ধ্বংসের উদ্দেশ্যেই ব্যবহার করা হয়নি।

বিস্ফোরণকালে আপনি কোথায় দাঁড়িয়ে ছিলেন?

ক্যামেরার পেছনে।

আপনি কী বোমারুকে দেখেছিলেন?

আমি তাকে বোমা নিক্ষেপ করতে দেখিনি- কিন্তু অতিরিক্ত আহত কর্মীরা তাকে ছাদের ওপরে উঠতে দেখেছিলেন, সে নিরাপত্তা পিনটি খুললো এবং আমাদের দিকে নিক্ষেপ করেই পালিয়ে গিয়েছিল। সে- সেই ব্যক্তি, যে আমাদের অতিরিক্ত কর্মীদের মতোই ২ ঘণ্টা যাবৎ আমাদের চারপাশে ঘোরাঘুরি করছিল।

বিস্ফোরণের পর কী আপনি শুটিং এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন?

প্রথমত, আমরা আহতদের অন্য শহরের একটি হাসপাতালে পাঠিয়েছিলাম, যেটি ছিল শরপোল থেকে ১ ঘণ্টার পথ। তারপর ঘটনাস্থলে সুইডিশ ইউ এন ফোর্স এসে পৌঁছেছিল এবং তারা উপদেশ দেন- আরেকটা আক্রমণ হবার পূর্বেই কাউকে না জানিয়ে আমাদের শহর ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য এবং আরও দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। আমরা অন্য শহরে চলে গিয়েছিলাম। পুরো গোষ্ঠীটি শুটিং এগিয়ে নিয়ে যেতে চাইল, যাতে বোমা নিক্ষেপকারীরা তাদের লক্ষ্য পূরণে ব্যর্থ হয়। আমরা আরও কিছুদিন শুটিং করেছিলাম, কিন্তু আমরা পুনরায় ভয় পেয়েছিলাম। যদিও ৮৫ শতাংশ কাজ সমাপ্ত হয়েছিল কিন্তু আমরা তা সেখানেই স্থগিত করি।

বাকি চলচ্চিত্রটির কী হবে?

চলচ্চিত্রটি তৈরি হবে কিন্তু কখন এবং কোথায় এই প্রশ্নটি জিজ্ঞাসা করবেন না।

আফগানিস্তানের পরিস্থিতি কী বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে? এটা কী বলা যায় যে তালেবানরা ফিরে আসছে?

একটি বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা একটি দেশের বিপজ্জনকতাকে ব্যক্ত করতে পারে না। এই ঘটনার পর দেশের নিরাপত্তার সম্পর্কে বিচার করা সম্ভব নয়। পাশাপাশি আমি আফগান আইনের বিশেষজ্ঞ নই কিন্তু অতীতের কয়েক বছর যাবৎ আমি ঘুরেছিলাম- তাই প্রায়ঃশই আমি পরিবর্তন দেখতে পেতাম। হাজারটির মতো নতুন রাস্তা নির্মাণ হয়েছে।

অভিবাসীদের ফিরে আসার জন্য বড়ো শহরগুলোর ধ্বংসপ্রাপ্ত বাড়িগুলো পুনঃনির্মাণ করা হয়েছে কিন্তু এটা সাক্ষী আছে- যে দেশগুলো আফগানিস্তানে আধিপত্য স্থাপন করেছে তারা সংস্করণ সংক্রান্ত উল্লেখযোগ্যভাবে কোনো কাজ করেনি। যেমন- ইরান এবং পাকিস্তান ফেরত লক্ষ লক্ষ অভিবাসী পুনরায় কর্মক্ষেত্র থেকে ছুটি নেয়ার চেষ্টা করছে।

অন্যদিকে আফগানিস্তানের ওপর পশ্চিমা রাজনীতির প্রভাব দ্বিগুণ- যে আফগানবাসীরা বিশ্বাস করেন তালেবান- আমেরিকান সৈনিক দল ছাড়া আর কেউই নয়। তাদের ইচ্ছে মতো তারা আফগানদের ধ্বংস এবং সক্রিয় করে এবং এইভাবেই প্রদেশে তারা তাদের অস্তিত্বকে সমর্থন করে। তালেবানদের আগমন সম্পর্কে- প্রশ্ন হলো জ্বালানি ছাড়া কীভাবে একটি গাড়িকে চালনা করা সম্ভব? ভালো, কারা এই তালেবান এবং আল-কায়দা ইঞ্জিনকে সক্রিয়করণের জন্য এই জ্বালানি যোগাচ্ছে?

তালেবান এবং আল-কায়েদা হলো জাতির মধ্যে সংঘটিত গুপ্ত যুদ্ধের আরেক নাম। আমার দৃষ্টিকোণ থেকে তালেবান হলো প্রতিদিনের পরিবর্তনশীল ভিন্ন অর্থযুক্ত নাম। স্বল্প বাজেট যুক্ত শৈল্পিক চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য দেশগুলো থেকে আমাদের অনুমতি এবং সুবিধা নিতে হয়। কিছু দেশের সাহায্য ছাড়া তালেবানেরা কীভাবে তাদের কার্যক্রমকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে?

আপনি কেন আফগানিস্তানেই চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করেছিলেন?

দুটি কারণে। প্রথমত, তারা আমাকে নিজ দেশে চলচ্চিত্র তৈরি করে দেয়নি। দ্বিতীয়ত, আফগানিস্তানে আমার মাতৃভাষার প্রচলন আছে এবং আমাদের মূল একই। আমি অভিনেতাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারি নয়ত মানব জীবনের গল্প ‘টু-লেগড হর্স’ অন্য যে কোনো জায়গায় হতে পারত।

আপনার চলচ্চিত্রের গল্প সম্পর্কে কিছু বলুন

আমি চলচ্চিত্রের গল্প সম্পূর্ণভাবে বলতে সক্ষম নই, কারণ- ১৫ শতাংশ কাজ অসম্পূর্ণ রয়ে গিয়েছে এবং যদি আমি বিস্তারিত বলি তবে তা সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। আমি এইটুকুই বলতে পারি- এখানে আমি মানুষের সম্পর্ককে খুঁজেছি, যা পর্দায় ফুটিয়ে তুলতে চেষ্টা করেছি। আমি এই বাক্যের সঙ্গে সহমত পোষণ করি, সবজায়গাতেই দুই শ্রেণির মানুষ আছে- এক শাসক শ্রেণি এবং অন্যদিকে যারা তাদের মান্য করে। এই চলচ্চিত্রটি আমার জন্য দুটি মানুষের সম্পর্কের আবিষ্কার।

চলচ্চিত্রটি নির্মাণের ক্ষেত্রে আপনার বাবা কী আপনাকে সহায়তা করেছিলেন?

স্ক্রিপ্টটি আমার বাবা লিখেছিলেন। তিনি আমাকে তাঁর শ্রেষ্ঠ গল্পগুলো দিয়েছিলেন। এটা তাঁর পিতৃত্বের একটা দিক।

আপনার শেষ চলচ্চিত্র ‘অ্যাট ফাইভ ইন দ্য আফটারনুন’ তৈরি হওয়ার পর পাঁচ বছর কেটে গিয়েছে। আপনি ওই সময়কালে কী করছিলেন?

বিষয়বস্তু খুঁজছিলাম যা আমাকে চলচ্চিত্র বানাতে আগ্রহী করে তোলে, যা আমার পক্ষে ছিল কঠিন এবং সময় সাপেক্ষ।

আপনি এই চলচ্চিত্রটি ডিজিটাল ফরম্যাটে তৈরি করেননি কেন?

আমি অনুভব করেছিলাম- বিষয়টি নেতিবাচক দিকটিকে দাবি করে।

ইরানে আপনার চলচ্চিত্র নির্মাণের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি আছে। এখন আপনি কোথায় বসবাস করেন?

ইরানে। আমি সেখানেই বসবাস করছি। আমার শিকড়, সংস্কৃতি সেখানেই। কিন্তু আমার বাবা বলেন- তিনি একজন চলচ্চিত্র জগতের নাগরিক এবং তার দেশ সেটাই, যেখানে তিনি চলচ্চিত্র তৈরি করেন।

তিনি বলেন- মার্কোপোলো যখন পৃথিবীর সর্বত্র ভ্রমণ করে এসেছিলেন তার চেয়েও বেশি উত্তেজিত ছিলেন যখন তিনি নিজের বাসভূমি ভেনিসে পৌঁছেছিলেন। কিন্তু যখন তিনি শহরে পৌঁছালেন তখন তিনি বুঝতে পেরেছিলেন, তিনি পথের নাগরিক- দেশের নন। আমার হৃদয় ইরানের অন্তর্গত এবং আমার বাবার হৃদয় পথের। হয়তো, আমি তার অতীত এবং তিনি আমার ভবিষ্যৎ। কিছুদিনের জন্য হয়তো তিনি ইরানে ফিরতে পারেন। পৃথিবীতে শুধু আমার বাবাই স্বনির্বাসিত ব্যক্তি নন।

আপনি কী পুনরায় আফগানিস্তান যেতে চান?

হ্যাঁ।

আপনি কী আশঙ্কিত নন?

আমি আশঙ্কিত, কিন্তু আমি ভয় থেকে পালিয়ে বেড়াই না। প্রতিটি চলচ্চিত্র নির্মাণের মাধ্যমেই ভয়কে স্বাগত জানাচ্ছি। এইভাবেই চলচ্চিত্র জগতে ভয়ের সৃষ্টি হয় এবং আমি জানি না এটা অপমানের নাকি সম্মানের। আমি চাই না যে- আমার চলচ্চিত্রের কাজ করতে গিয়ে তাতে কেউ মৃত্যু বরণ করুক। এমনকি কোনো পতঙ্গও নয়। আমার চলচ্চিত্রে আহতদের এবং মৃত ঘোড়াটির জন্য আমি এখন দুঃখ প্রকাশ করি।

ইরান কী আজ স্বাধীন?

তেহরানের দূষিত বাতাসের জন্য আমার দাদিমা হাঁপানি রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। যখনই তিনি শ্বাসরুদ্ধ হতেন- তখনই তিনি তেহরানের দূষিত বায়ুকে দোষারোপ করতেন। তেহরানের স্বাধীনতার পরিমাণের জন্য আমার একটি নিজস্ব দাঁড়িপাল্লা আছে। যেটা একমাত্র সম্ভব চলচ্চিত্র নির্মাণের মাধ্যমেই। তারা আমাকে আমার নিজ দেশে চলচ্চিত্র নির্মাণের অনুমতি দেয়নি। যদি বাতিল স্ক্রিপ্টকে স্বাধীনতা বলে মনে করা হয়, তবে তা আমাদের কাছে অনেক আছে।

আপনি কেন চলচ্চিত্র তৈরি করেন?

আমি আমার চলচ্চিত্রের মাধ্যমে মানুষের দুঃখ এবং ভোগান্তিকে ফুটিয়ে তুলতে চাই। আমি বিশ্বাস করি মানুষের চিন্তাভাবনা থেকেই বেশিরভাগ ভোগান্তির সৃষ্টি তৈরি হয়। চলচ্চিত্রই একমাত্র চিন্তাভাবনাকে পরিবর্তন করতে পারে। এই কারণেই আমি চলচ্চিত্রের সঙ্গে যুক্ত। এইটাই হলো এ বিষয়ের মানবিক এবং সামাজিক দিক। কিন্তু এর কোনো ব্যক্তিগত মাত্রা নেই। আমি মনে করি জীবন হলো শূন্যগর্ভ এবং প্রত্যেকেরই নিজের মতো করে তা পূর্ণ করার অধিকার আছে। আমি চলচ্চিত্রে এটাই করি। ছেলেবেলা থেকেই এটি আমার কাছে কৌতূহল জাগানো এক পুতুল।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫