
‘বেশ্যা ও বিদুষীর গল্প’ বইয়ের প্রচ্ছদ। ফাইল ছবি
আফরোজা সোমা প্রণীত ‘বেশ্যা ও বিদুষীর গল্প’ গ্রন্থটি বৈষম্যের গল্প বলছে। নারীর চোখে দেখা সেই বৈষম্য, যা পুরুষ তার অধিকারে রেখেছে শত শত বছর। পুরুষ-শাসক এবং শোষক আর নারী শোষিত হতে থাকা বহু বহু কাল ধরে একটি সমাজ। গত বিশ শতকের চতুর্থ দশক থেকে একবিংশ শতকের দ্বিতীয় দশক।
পৌনে এক শতাব্দীজুড়ে ছড়িয়ে আছেন লেখক, লেখকের মা এবং লেখকের নানি- এই তিন প্রজন্মের নারীর জীবন। ‘অধিকার’ ও নারীজীবনের ‘নিয়তি’ প্রশ্নে তিন প্রজন্মের দৃষ্টিভঙ্গি ভিন্ন হয়ে উঠে এসেছে এ গ্রন্থে। পৌনে এক শতকে বাস্তবতা পাল্টেছে। পাল্টেছে রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক-সামাজিক মানচিত্র; কিন্তু নারীর স্বাধীনতার মানচিত্রে বদল কতটুকু এসেছে?
‘বেশ্যা ও বিদুষীর গল্প’ বইটি সেই প্রশ্নকেই খতিয়ে দেখেছে। সমাজে নারীর প্রতি জারি থাকা অন্যায় ও অসংগতিগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে। পাশাপাশি খুঁজে দেখা হয়েছে সংকট মোচনের উপায়গুলো। প্রবন্ধগুলোতে বিধৃত হয়েছে মহাভারতের কাল থেকে একবিংশ শতকের নারীর বঞ্চনা-বিষাদ, নিপীড়ন-নির্যাতন দ্রোহ-প্রতিবাদ ও মুক্তি-আন্দোলনের সামাজিক ইতিহাস। ১৯৭১-এ এসেছে নতুন দেশ। বাংলাদেশে জন্ম নিয়েছেন লেখক, নানি-মা এবং তিনি মিলে পেয়েছেন তিন মানচিত্র, তিন প্রজন্ম।
সামাজিক ব্যাধির মতোই যেমন নারীবাদ জেঁকেছে, তীব্রতরভাবে এর ভুল চর্চাও রয়েছে, আবার প্রতিনিয়ত তেমনি নারী অধিকার হননও হচ্ছে সমান্তরালে; কিন্তু চিরকাল নারীকেই দাঁড় করানো হয়েছে কৈফিয়তের মুখোমুখি! ‘বেশ্যা ও বিদুষীর গল্প’ বইয়ের রচনাগুলো বিবিসি বাংলা, চ্যানেল আই ও দেশ রূপান্তরসহ দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিগত কয়েক বছর যাবৎ প্রকাশ হয়েছে। মোট ২৭টি রচনায় সমৃদ্ধ গ্রন্থটি ধারণ করে আছে নারীর প্রতি চলা জুলুম-নির্যাতন এবং নারীর ক্রন্দনের কথকতা। পাশাপাশি মানুষ হিসেবে নারীর পূর্ণ মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করতে হলে রাষ্ট্র, প্রশাসন ও নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে কোন ধরনের পদক্ষেপ নিতে হবে, সেই বিষয়েও নির্দিষ্ট কিছু বিষয় নির্দেশ করছে প্রবন্ধগুলো।
বেশ্যা ও বিদুষীর গল্প
লেখক : আফরোজা সোমা
প্রচ্ছদের নামলিপি: রহমান মুফিজ
প্রকাশন: হাসান’স
দাম: ৪৫০ টাকা