শিল্পী হামিদুর রহমান বাংলাদেশের প্রথিতযশা চিত্রশিল্পী ও ভাস্কর। জাতীয় শহীদ মিনারের স্থপতি হিসেবে যিনি সমধিক পরিচিত। যে স্মৃতির মিনারের সঙ্গে তিনি অমর হয়ে থাকবেন এই বাংলায় প্রজন্মের পর প্রজন্ম। তার পিতা মির্জা ফকির মোহাম্মদ ও মাতা জামিলা খাতুন এবং চাচা ঢাকার শেষ বাইশ পঞ্চায়েতের নেতা মির্জা আবদুল কাদের সরদার। তার বড় ভাই আবু নাসের আহমদ ছিলেন পূর্ববঙ্গ চলচ্চিত্র সমিতির ব্যক্তিত্ব, মেজো ভাই নাজির আহমেদ ছিলেন পূর্ববঙ্গের চলচ্চিত্র বিকাশের উদ্যোক্তা, ছোট ভাই সাঈদ আহমদ ছিলেন নাট্যব্যক্তিত্ব ও লেখক।
তিনি ছিলেন শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের প্রতিষ্ঠিত ঢাকা আর্ট ইনস্টিটিউটের প্রথম ব্যাচের ছাত্র। শিল্পী আমিনুল ইসলাম ও শিল্পী ইমদাদ হোসেনের সহপাঠী। জাতীয় শহীদ মিনারের জন্য খ্যাতি ও পরিচিতি পেলেও তিনি ছিলেন একজন চিত্রশিল্পী। যদিও তাঁর শিল্পকর্ম ও তাঁকে নিয়ে খুব একটা আলোচনা চোখে পড়ে না। তাঁকে নিয়ে লেখালেখি ও রেফারেন্সের যথেষ্ট ঘাটতি রয়েছে।
একমাত্র চিত্রশিল্পী ও শিক্ষক রফিক হোসেনের লেখা ছাড়া তেমন কোনো লেখা চোখে পড়ার মতো নেই। শিল্পী হামিদুর রহমান চিত্রশিল্পী হিসেবে তৎকালীন পাকিস্তান আমলে পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে বেশ কিছু দেয়ালচিত্রের ওপর কাজ করেন। তার কাজগুলোতে নদীমাতৃক বাংলাদেশ ও তাদের জীবনচিত্র ফুটে উঠেছে। তিনি ছিলেন বস্তুনিষ্ঠ ও জীবনঘনিষ্ঠ চিত্রশিল্পী। ষাট-সত্তরের দশকে বিশ্বে বিভিন্ন ধারার চিত্রচর্চা হলেও তিনি সেসবে প্রভাবিত না হয়ে নিজ দেশ এখানকার মানুষের রুচি ও বুদ্ধির মাত্রাকে বিবেচনায় রেখে ছবি এঁকেছেন। তাই তার চিত্রভাষা সহজ-সরল। রং ব্যবহারে পরিমিতি ও অনাড়ম্বতা লক্ষণীয়। তার ছবিতে প্রাকৃতিক দুর্যোগ-দুর্বিপাক যেমন উঠে এসেছে তেমন এখানকার সাধারণ মানুষের জীবনযাপন ও সৌন্দর্য স্থান পেয়েছে নিবিড়ভাবে। তিনি ছিলেন মনেপ্রাণে বাঙালি ও দেশপ্রেমিক।
শিল্পী হামিদুর রহমানের জন্ম ১৯২৮ পুরান ঢাকার ইসলামপুরে। মৃত্যু ১৯৮৮ সালের ১৯ নভেম্বর কানাডার মন্ট্রিলে।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
বিষয় : শিল্পী হামিদুর রহমান শহীদ মিনার সাহিত্য
© 2025 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh