বিদ্রোহীদের হামলায় পর্যুদস্ত মিয়ানমার সেনারা, ১৫০ আত্মসমর্পন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ২০ ডিসেম্বর ২০২৩, ১১:২৩

মিয়ানমারের সামরিক জান্তা সরকারের সঙ্গে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর সংঘর্ষ চলমান। ছবি: সংগৃহীত
মিয়ানমারের সামরিক জান্তা সরকারের সঙ্গে টানা চলা বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর অনবরত সংঘর্ষে অনেকটাই কোণঠাসা হয়ে পড়েছে দেশটির সুসংগঠিত সামরিক বাহিনী। এরইমধ্যে মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলীয় শান রাজ্যে বিদ্রোহীদের সঙ্গে লড়াইয়ে টিকতে না পেরে আত্মসমর্পণ করছে দেশটির শত শত সেনা। সোমবার ওই রাজ্যের বিদ্রোহী গোষ্ঠী তানাং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মির (টিএনএলএ) কাছে জান্তা বাহিনীর অন্তত ১৫০ সৈন্য আত্মসমর্পণ করেন। এর আগে বিদ্রোহীদের প্রবল হামলার মুখে সোমবার সেখান থেকে পালিয়ে যায় আরও শত শত সৈন্য।
এদিকে দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইনসহ অন্যান্য প্রদেশেও জান্তা সৈন্যরা বিদ্রোহীদের সাথে লড়াইয়ে পিছু হটতে বাধ্য হচ্ছে।ইতোমধ্যে সংঘাতে বিপর্যন্ত রাখাইন রাজ্যের নিয়ন্ত্রণ জান্তা বাহিনীর কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে সেখানকার স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে লড়াই করে আসা বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি।
শান রাজ্যের সাখান থিতকোন ঘাঁটির নেতৃত্বে ছিলেন মেজর মিন্ট কিয়াউ। নামখাম শহরের কাছের এই ঘাঁটি থেকে বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে আসছিল জান্তা সৈন্যরা। পরে টিএনএলএ যোদ্ধাদের পাল্টা হামলায় তারা পিছু হটে। এ নিয়ে গত কয়েক সপ্তাহে কেবল এই রাজ্যেই ৬৫০ জনের বেশি জান্তা সৈন্য বিদ্রোহীদের কাছে আত্মসমর্পণ করল। এ সময় মেজর মিন্ট কিয়াউসহ সেখানকার দেড় শতাধিক সৈন্য বিদ্রোহীদের কাছে আত্মসমর্পণ করে।
মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আর্মি (এমএনডিএএ), তায়াং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (টিএনএলএ) এবং আরাকান আর্মির (এএ) সমন্বয়ে গঠিত জান্তাবিরোধী জোটের চলমান অপারেশন-১০২৭ এর অংশ হিসাবে গত ২৭ অক্টোবর থেকে শান রাজ্যজুড়ে হামলা অব্যাহত রেখেছে বিদ্রোহীরা।
এদিকে বিদ্রোহীগোষ্ঠী টিএনএলএ সামরিক বাহিনীর কাছ থেকে শান রাজ্যের নমশান শহরের দখল নেওয়ার দাবি করেছে। গত ১০ থেকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত সামরিক ব্যাটালিয়ন, ঘাঁটি এবং পুলিশ স্টেশনের বিরুদ্ধে ছয় দিনের টানা আক্রমণের পর শহরটির দখল নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে টিএনএলএ।
অন্যদিকে এমএনডিএএ, টিএনএলএ এবং আরাকান আর্মির সমন্বিত আক্রমণ শুরুর পর থেকে উত্তর শান রাজ্যে অন্তত ৪৫০ জান্তা সৈন্য ও সহযোগী মিলিশিয়া সদস্য বিদ্রোহীদের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। এই রাজ্যে ২৭০টিরও বেশি জান্তা ফাঁড়ি এবং ঘাঁটি দখলে নিয়েছে জান্তাবিরোধী বিদ্রোহীদের জোট।
এ প্রসঙ্গে আরাকান আর্মি (এএ) বলেছে, তারা রাখাইন রাজ্যের ১৭টি শহরের মধ্যে অন্তত ১৫টি এবং প্রতিবেশী চিন রাজ্যের পালেতওয়া শহরের দখল সামরিক বাহিনীর কাছ থেকে পুনরুদ্ধার করেছে। এই দুই রাজ্যে সেনাবাহিনীর ১৪২টি সামরিক চৌকির দখলও নিয়েছে তারা।
সূত্র: দ্য ইরাবতি