
ইরানে বাড়ছে মৃত্যুদণ্ড, এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে মানবাধিকারকর্মীরা। ছবি: সংগৃহীত
বিদায়ী বছরে ইরানে ৯০০-এর বেশি মানুষের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। শুধু ডিসেম্বর মাসের এক সপ্তাহেই প্রায় ৪০ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক প্রধান ভলকার তুর্ক এসব তথ্য জানান।
২০২৪ সালে অন্তত ৯০১ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে জানিয়ে তুর্ক বলেন, ‘ইরানে প্রতিবছর মৃত্যুদণ্ডের সংখ্যা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাওয়াটা গভীর উদ্বেগজনক। ইরানের এই ক্রমবর্ধমান মৃত্যুদণ্ডের স্রোত বন্ধ করার এখনই সময়।’
ইরানে হত্যাকাণ্ড, মাদক চোরাচালান, ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নের মতো বড় অপরাধে মৃত্যুদণ্ডের বিধান রয়েছে। মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ অন্যান্য সংগঠন বলছে, চীনের পর ইরানই প্রতিবছর সবচেয়ে বেশিসংখ্যক মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে। যদিও চীনের মৃত্যুদণ্ডের নির্ভরযোগ্য তথ্য পাওয়া যায় না।
অ্যাক্টিভিস্টদের অভিযোগ, ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির শাসনাধীন সরকার ২০২২-২৩ সালে দেশব্যাপী বিক্ষোভের পর সমাজে ভীতি ছড়ানোর অস্ত্র হিসেবে মৃত্যুদণ্ডকে ব্যবহার করছে। ইরানে মৃত্যুদণ্ডের ক্রমবর্ধমান এ প্রবনতা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তারা।
জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, গত বছরের বেশির ভাগ মৃত্যুদণ্ডই মাদকসংশ্লিষ্ট অপরাধে কার্যকর করা হয়েছে। তবে ‘২০২২ সালের বিক্ষোভের সঙ্গে জড়িত সন্দেহভাজন ও ভিন্নমতাবলম্বীদেরও মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। বৃদ্ধি পেয়েছে নারীদের মৃত্যুদণ্ডের সংখ্যাও ।’
নরওয়েভিত্তিক ইরান হিউম্যান রাইটস (আইএইচআর) জানিয়েছে, ২০২৪ সালে অন্তত ৩১ জন নারীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।
তুর্ক বলেন, ‘আমরা সব ধরনের পরিস্থিতিতে মৃত্যুদণ্ডের বিরোধিতা করি। এটি জীবনের মৌলিক অধিকারের সঙ্গে অসংগত এবং এতে নিরপরাধ ব্যক্তিদের মৃত্যুদণ্ডের ঝুঁকি বাড়ে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক প্রধান ইরানি কর্তৃপক্ষের প্রতি সব ধরনের মৃত্যুদণ্ড স্থগিত করার ও মৃত্যুদণ্ড বিলুপ্তির লক্ষ্যে একটি স্থগিতাদেশ জারি করার আহ্বান জানান।
সূত্র : এএফপি