
ফাইল ছবি
পশ্চিমবঙ্গ সিপিএমের নতুন রাজ্য সম্পাদক হয়েছেন সাবেক মন্ত্রী ও বর্তমানে পলিটব্যুরো সদস্য মুহাম্মদ সেলিম। এতে বাদ পড়েছেন সূর্যকান্ত মিশ্র, রবীন দেব, গৌতম দেবের মতো হেভিওয়েট নেতারা। এছাড়া স্বেচ্ছায় সরে দাঁড়িয়েছেন বিমান বসু।
কমিটিতে নতুন মুখ হিসেবে তরুণরা প্রাধান্য পেলেন। রাজ্য কমিটিতে স্থান পেয়েছেন মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়, শতরূপ ঘোষ, ময়ূখ বিশ্বাস, আত্রেয়ী গুহ, পার্থ মুখোপাধ্যায়, সুদীপ সেনগুপ্তরা।
সিপিএম পলিটব্যুরো জানিয়ে দিয়েছিল, রাজ্য কমিটিতে ৭৫ বছর বয়সের বেশি কেউ স্থান পাবেন না। সর্বোচ্চ বয়সসীমা কমিয়ে ৬২ করায় অনেক প্রবীণ সিপিএম নেতাই রাজ্য কমিটি থেকে বাদ পড়েছেন।
মুহাম্মদ সেলিম পশ্চিমবঙ্গের প্রথম সারির একজন রাজনীতিবিদ। খুব অল্প বয়স থেকেই রাজনীতির প্রতি গভীর উৎসাহ ছিল তার। মৌলানা আজাদ কলেজের ছাত্র থাকাকালীন তিনি ভারতের ছাত্র ফেডারেশনের সক্রিয় সদস্য হন। তিনি দাবি করেন, দেশের জরুরি অবস্থা তার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল। এই ঘটনা তাকে রাজনীতির ময়দানে নিয়ে এসেছিল।
১৯৯১ সালে তিনি রাজ্যসভায় নির্বাচিত হন, পরপর দুই বার তিনি রাজ্যসভার সাংসদ হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর ২০০১ সালে এন্টালি কেন্দ্র থেকে বিধানসভা নির্বাচনে জয় পান। ২০০৪ সালে কলকাতা উত্তর পূর্ব কেন্দ্র থেকে লোকসভা ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন ও জয়ী হন। এই কেন্দ্রে সাংসদ হিসেবে পুরো মেয়াদ সম্পূর্ণ করেন। তবে ২০০৯ সালে লোকসভা নির্বাচনে এই সাফল্যের ধারা বজায় রাখতে পারেননি। যদিও সপ্তদশ লোকসভা ভোটে রায়গঞ্জ কেন্দ্র থেকে জয়ী হন।
সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মুখ সেলিম বাংলার পাশাপাশি হিন্দি-ইংরেজি ভাষায় পারদর্শী। তিন ভাষাতেই ভালো বক্তব্য দিতে পারেন। সংবাদমাধ্যমে যথেষ্ট পরিচিত মুখ ও তার সম্পর্ক তুলনামূলক সহজ। এই সব বিষয়েই তাকে নেতৃত্বের দিক থেকে এগিয়ে রেখেছিল বলেই সিপিএমের ভেতরের খবর।
সিপিএমের ক্ষেত্রে সাধারণভাবে কেরালা, ত্রিপুরা বা পশ্চিমবঙ্গে যারা রাজ্য সম্পাদক হন তারা পলিটব্যুরোর সদস্য হন। সেলিমও পলিটব্যুরোর সদস্য। ফলে বাকি যাদের নাম নিয়ে জল্পনা শোনা যাচ্ছিল, সবাইকেই এ জায়গায় কিছুটা পিছনে ফেলে দিয়েছেন তিনি।
বয়সসীমার কারণে বাদ পড়েছেন বাংলায় বামপন্থী রাজনীতির অন্যতম পরিচিত দুই মুখ বিমান বসু ও সূর্যকান্ত মিশ্র। বাদ পড়ছেন রবীন দেব। মৃদুল দে, নেপালদেব ভট্টাচার্য, সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের মতো শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গে দীর্ঘদিন যুক্ত নেতারা। নতুন কমিটিতে এসেছেন শতরূপ ঘোষ। তিনি প্রথমবার এই কমিটিতে এলেন।
এবার রাজ্য কমিটিতে সুশান্ত ঘোষের উঠে আসা বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। বেনাচাপড়া কঙ্কালকাণ্ডের পর হাজতবাস, দীর্ঘদিন প্রত্যক্ষ রাজনীতি থেকে দূরে থাকা, এরপর ফের ফিরে এসে ভোটে দাঁড়ানো, পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা সম্পাদক হওয়া সুশান্ত ঘোষ এবার সিপিএমের রাজ্য কমিটিতে এলেন।