
ইরাকের প্রধানমন্ত্রী আদেল আব্দুল-মাহদি
সরকারবিরোধী বিক্ষোভের মুখে অবশেষে পদত্যাগের ঘোষণা দিলেন ইরাকের প্রধানমন্ত্রী আদেল আব্দুল-মাহদি।
দেশটির পার্লামেন্টের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেবেন বলে গতকাল শুক্রবার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে এই ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
ইরাকে সরকারবিরোধী আন্দোলনের জেরে এ পর্যন্ত চার শতাধিক মানুষ নিহত ও ১৫ হাজার আহত হয়েছেন। গত অক্টোবরে দেশটিতে দুর্নীতি বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের পাশাপাশি সরকারি সেবার মান বাড়ানো ও কর্মসংস্থানের সংকট দূর করার দাবিতে এই আন্দোলন শুরু হয়।
এদিকে শুক্রবারের খুতবায় প্রধানমন্ত্রী পরিবর্তনের বিষয়ে বিবেচনা করার জন্য পার্লামেন্টের প্রতি আহবান জানান দেশটির শিয়াদের ধর্মীয় গুরু আয়াতুল্লাহ আলি আল সিসতানি। সরকার পরিবর্তন না হলে এই পরিস্থিতি গৃহযুদ্ধে রূপ নেবে বলে খুতবায় সতর্ক করে দেন তিনি।
এর এক ঘণ্টার মধ্যেই পদত্যাগের কথা জানান মাহদি। ইরাকি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়, এমপিরা যেন নতুন একটি সরকার গঠন করতে পারেন এবং সেজন্যই পদত্যাগপত্র জমা দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মাহদি। তবে তিনি কবে নাগাদ পদত্যাগ করবেন সে বিষয়ে কিছু জানাননি।
এদিকে শুক্রবার আরেকটি রক্তক্ষয়ী দিন পার করেছে ইরাক। এদিন অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছে। এর আগের দিন বৃহস্পতিবার নাসিরিয়ায় অন্তত ২৫, নাজাফে ১০ ও বাগদাদে অন্তত ৪ জনের নিহত হওয়ার খবর মিলেছিল।
মাহদির পদত্যাগের ঘোষণাকে দাবি আদায়ের ‘প্রধম ধাপ’ হিসেবেও অ্যাখ্যা দিয়েছে বিক্ষোভকারীরা। ঘোষণার পর রাজধানী বাগদাদের ঐতিহাসিক তাহরির স্কয়ারে একত্র হয়ে উল্লাস করেছেন আন্দোলনকারীরা। প্রায় দুই মাস ধরে চলা এই আন্দোলনে তাহরির স্কয়ারই ছিল মূল কেন্দ্রবিন্দু।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে এএফপি জানিয়েছে, বিক্ষোভকারীরা দাঙ্গা পুলিশের দিকে পাথর ছুড়ে মারার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। কিন্তু মাহদির পদত্যাগের ঘোষণা পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তারা পাথর ফেলে দিয়ে নাচ-গান করে উল্লাস প্রকাশ করতে শুরু করেন।
৭৭ বছর বয়সী মাহদি ২০১৮ সালের অক্টোবরে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন। ক্ষমতায় আসার এক বছরের মাথায়ই বেকারত্ব, দুর্নীতি ও সরকারি সেবার দুরবস্থার কারণে জনঅসন্তোষে পড়তে হয় তার সরকারকে। দেশজুড়ে শুরু হয় সরকারবিরোধী আন্দোলন, যা পরে সহিংসতায় রূপ নেয়। -ডয়চে ভেলে ও বিবিসি