Logo
×

Follow Us

এশিয়া

দ্বিতীয় রাউন্ডে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন

মালদ্বীপ আসলে কার?

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ২৩:৪৯

মালদ্বীপ আসলে কার?

মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন দ্বিতীয় রাউন্ডে গড়িয়েছে। ছবি- সংগৃহীত

ব্রিটিশ উপনিবেশ থেকে মুক্তির পরও গোলক ধাঁধাতেই আটকে আছে মালদ্বীপ। দ্বীপাঞ্চলটিতে বছরজুড়েই চলে চীন-ভারতের হস্তক্ষেপ। বিনিয়োগ থেকে শুরু করে কূটনৈতিক সিদ্ধান্তগুলোও নির্ভর করে দুই আঞ্চলিক শক্তির মর্জির ওপর। আর  নির্বাচন আসলেই শুরু হয় চীন-ভারতের নিয়ন্ত্রণে সরকার গঠনের দ্বৈরথ। স্বাধীনতার পর পঞ্চমবারের মতো প্রেসিডেন্ট নির্বাচনেও সেই দৌড়ঝাঁপ দেখছে মালদ্বীপ। যেকারণে স্বভাবতই প্রশ্ন এসে যায়, মালদ্বীপ আসলে কার? চীনের নাকি ভারতের?

মালদ্বীপে গতকাল শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) শুরু হয়েছে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। তবে ভোট গড়িয়েছে দ্বিতীয় রাউন্ডে।

নির্বাচনে ৪৬ শতাংস ভোটে এগিয়ে আছেন পিপলস ন্যাশনাল কংগ্রেস দলের প্রধান চীনপন্থি নেতা মোহাম্মদ মুইজু (৪৫)। জনপ্রিয়তায় এগিয়ে থাকলেও দেশটির ভারতপন্থি প্রেসিডেন্ট মালদ্বীপ ডেমোক্রেটিক পার্টির ইব্রাহিম মোহাম্মদ সোলিহ (৬১) পেয়েছেন মাত্র ৩৯ শতাংশ ভোট। প্রেসিডেন্ট পদের শীর্ষ দুই প্রার্থীর কেউই প্রথম রাউন্ডে ৫০ শতাংশ ভোট অতিক্রম করতে পারেননি। যার ফলে পুনরায় ভোটগ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। 

আজ রবিবার (১০ সেপ্টেম্বর) দেশটির নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, দ্বিতীয় রাউন্ডে ভোটাভুটি অনুষ্ঠিত হবে ৩০ সেপ্টেম্বর। 

ভারত নাকি চীন, প্রকৃতপক্ষে কোন আঞ্চলিক শক্তি এ অঞ্চলটিতে প্রভাব বিস্তার করবে দ্বিতীয় রাউন্ডের ভোটের পর তা বোঝা যাবে। তবে আপাতদৃষ্টিতে মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এগিয়ে আছে চীন। পিছিয়ে ভারত। 

কারণ বর্তমান প্রেসিডেন্ট সোলিহ মূলত ভারতপন্থি। মালদ্বীপে ভারতের অনিয়ন্ত্রিত সেনা উপস্থিতির অনুমতি দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে সোলিহের বিরুদ্ধে। অন্যদিকে কট্টর চীনপন্থি তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী মুইজ। ২০১৩ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকা ন্যাশনাল কংগ্রেস দলের আবদুল্লাহ ইয়ামিন মালদ্বীপকে চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের একটি অংশ করেছিলেন। 

নির্বাচনি ফলাফলে অসাধারণ কৃতিত্ব দেখিয়েছেন মুইজ। ইউনিভার্সিটি অব ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কের প্রভাষক আজিম জাহির বলেন, আমি আশা করিনি যে মুইজ ইবুর (ইব্রাহিম মোহাম্মদ সোলিহ) বিরুদ্ধে এই ধরনের নেতৃত্ব দেবেন। এটি সোলিহের জন্য একটি বড় আঘাত। নির্বাচনের এই ফলাফলকে কেউ কেউ তার সরকারের প্রত্যাখান হিসাবেও দেখতে পারেন। মালদ্বীপে ভারতীয় সেনা উপস্থিতির বিরুদ্ধে মুইজের দৃঢ় অবস্থান নির্বাচনের এমন ফলাফলের একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হতে পারে বলে মনে করেন তিনি। 

নির্বাচনি ইশতেহারে মুইজ বলেছিলেন, জয়ী হলে মালদ্বীপে অবস্থানরত ভারতীয় সৈন্যদের সরিয়ে দেবেন। তবে বাণিজ্য সম্পর্কের ভারসাম্য বজায় রাখবেন। মালদ্বীপের নিকটতম প্রতিবেশীদের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ ও ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তিনি।

মুইজের দলের একজন জৈষ্ঠ্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ শরীফ বলেন, ভারতীয় সামরিক বাহিনীর সদস্যদের অপসারণে মুইজের দলের ছিল কঠোর অবস্থান। ভারতীয় সৈন্যের সংখ্যা ও তাদের কার্যকলাপ মালদ্বীপবাসীর কাছ থেকে লুকিয়ে রাখা হয়েছে বলে সোলিহ সরকারের প্রতি অভিযোগ জানান তিনি। 

ভারত মহাসাগরে প্রায় ১২০০ প্রবাল দ্বীপ নিয়ে গঠিত ছোট দেশ মালদ্বীপ। আকারে ছোট হলেও দেশটিতে প্রভাব বিস্তারে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে প্রতিবেশী দেশ ভারত ও চীন। আর তার প্রধান কারণ মালদ্বীপের ভৌগোলিক অবস্থান।

পূর্ব এবং পশ্চিমের মধ্যে প্রধান শিপিং রুটে এই দেশের অবস্থান। চীনের সঙ্গে ইউরোপ ও আফ্রিকার জাহাজ যোগাযোগের প্রাচীন সমুদ্রপথের অবস্থান মালদ্বীপের পাশে। এছাড়া এই পথ দিয়ে আমদানিকৃত অপরিশোধিত তেলের প্রায় ৬২ শতাংশের পরিবহণ করে চীন। অন্যদিকে মালদ্বীপের পাশ দিয়েই পরিবহণ করা হয় সাগরপথে ভারতের বৈদেশিক বাণিজ্যের অর্ধেক ও জ্বালানি আমদানির প্রায় ৮০ শতাংশ। 

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫