ফিলিপাইনের উপকূলে আঘাত হেনেছে সুপার টাইফুন মান-ই। টাইফুনের প্রভাবে উপকূলে ১৪ মিটার (৪৬ ফুট) উচ্চতার ঢেউ আছড়ে পড়ছে। এর প্রভাবে ‘বিপর্যয়কর এবং প্রাণঘাতী’ পরিস্থিতির আশঙ্কা করা হচ্ছে বলে সতর্ক করেছে দেশটির জাতীয় আবহাওয়া দপ্তর।
গতকাল শনিবার (১৬ নভেম্বর) স্থানীয় সময় রাত ৯টা ৪০ মিনিটে শক্তিশালী টাইফুনটি কাটানডুয়ানেস দ্বীপে আছড়ে পড়ে। এ সময় তার বাতাসের স্থায়ী গতি ছিল ১৯৫ কিলোমিটার (১২১ মাইল)।
টাইফুন মান-ই’র আঘাতে কাটানডুয়ানেস উপকূলে ঢেউয়ের উচ্চতা ১৪ মিটার ছাড়িয়ে গেছে। পাশাপাশি, ম্যানিলা এবং অন্যান্য ঝুঁকিপূর্ণ উপকূলীয় অঞ্চলে আগামী ৪৮ ঘণ্টায় তিন মিটার (১০ ফুট) উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আজ রবিবার দুপুর নাগাদ ঝড়টি লুজন দ্বীপে আঘাত হানতে পারে, যা ফিলিপাইনের সবচেয়ে জনবহুল এবং অর্থনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল। পরে ঝড়টি ম্যানিলার উত্তরে প্রবাহিত হয়ে সোমবার দক্ষিণ চীন সাগরের দিকে অগ্রসর হতে পারে।
টাইফুনের কারণে এরই মধ্যে লাখ লাখ মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বাতিল করা হয়েছে বেশ কিছু ফ্লাইট। মাছ ধরার নৌকা থেকে শুরু করে বড় ট্যাংকারসহ সব ধরনের নৌযানকে বন্দরে ফেরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ঝুঁকিপূর্ণ বাইকল অঞ্চলের জন্য ‘বিপর্যয়কর পরিস্থিতি’র সতর্কতা জারি করেছে ফিলিপাইনের আবহাওয়া দপ্তর (পিএজিএসএ)। অঞ্চলটি থেকে প্রায় ১ লাখ ৮০ হাজার মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
কাটানডুয়ানেস এবং কামারিনেস সুর প্রদেশ এখনো অক্টোবরের শেষের দিকে আঘাত হানা প্রাণঘাতী ঘূর্ণিঝড় ট্রামির প্রভাব কাটিয়ে উঠতে পারেনি। কামারিনেস সুরের নগা শহরের মেয়র শনিবার দুপুর থেকে কারফিউ জারি করেছেন, যাতে বাসিন্দারা নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে পারেন।
দেশটির সিভিল ডিফেন্স প্রশাসক আরিয়েল নেপোমুসেনো জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মার্কোস জুনিয়র নির্দেশ দিয়েছেন যেন টাইফুন মান-ই’র সম্ভাব্য আঘাতপ্রাপ্ত অঞ্চলগুলোতে সব সরকারি সংস্থা ‘সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত’ থাকে।
ফিলিপাইনে প্রতিবছর গড়ে ২০টি ঝড় আঘাত হানে, যা প্রাকৃতিক দুর্যোগের পাশাপাশি ভয়াবহ ভূমিধসেরও কারণ হয়। দেশটিতে গত অক্টোবরে টাইফুন কং-রেই এবং ট্রামির আঘাতে সৃষ্ট বন্যা ও ভূমিধসে ১৬২ জনের মৃত্যু হয় এবং আরও ২২ জন এখনো নিখোঁজ রয়েছেন।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
বিষয় : টাইফুন জলবায়ু পরিবর্তন
© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh