Logo
×

Follow Us

অন্যান্য

আনিস-সালমান-শাজাহানসহ ৫ জন রিমান্ডে, তাজুল-সরওয়ার ফের গ্রেপ্তার

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৩ জুন ২০২৫, ১৩:৩৪

আনিস-সালমান-শাজাহানসহ ৫ জন রিমান্ডে, তাজুল-সরওয়ার ফের গ্রেপ্তার

আদালতে আনিসুল ইসলাম ও সালমান এফ রহমান।

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের সময় রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে সাজেদুর রহমান ওমর নিহতের মামলায় সাবেক মন্ত্রী আনিসুল হক, শাজাহান খান, শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। 

একই থানাধীন এলাকায় রিটন উদ্দিন নামে আরেক ব্যক্তি নিহতের মামলায় ঢাকা-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য কাজী মনিরুল ইসলাম মনুকে এক দিনের রিমান্ড দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও,পল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশে গণঅধিকার পরিষদের কর্মী বদরুল ইসলাম সায়মনকে হত্যাচেষ্টা মামলায় চট্টগ্রাম বন্দরের অবসরপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান  রিয়ার অ্যাডমিরাল সোহাইলের তিন দিনের রিমান্ডে পাঠানো হয়েছে।

সোমবার (২৩ জুন) সকালে শুনানি শেষে ঢাকার মহানগর হাকিম মাহবুব আলমের আদালত  এ আদেশ দেন। 

আনিসুল হক, শাজাহান খান, সালমান এফ রহমানের ৫ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) এসআই আমিরুল ইসলাম মীর। মনিরুল ইমলাম মনুর বিরুদ্ধে দুই মামলায় পাঁচ দিন করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে তদন্ত সংস্থা পিবিআই। সোহাইলের ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পল্টন থানার এসআই বিমান তরফদার। 

অপরদিকে পল্টন থানায় করা রমজান মিয়া জীবন হত্যা মামলায় সাবেক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী তাজুল ইসলামকে এবং মোহাম্মদপুর থানার হত্যা মামলায় কুষ্টিয়া-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) আ. কা. ম. সরওয়ার জাহান (বাদশা) কে গ্রেপ্তার দেখানোর (শ্যেন অ্যারেস্ট) আবেদন করা হয়। শুনানিকালে আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

প্রথমে আ. কা. ম. সরওয়ার জাহান (বাদশা) কে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন আদালত। এরপর তাজুল ইসলামকে গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দেয়া হয় পরে সোহাইলের রিমান্ড শুনানি হয়। 

রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ডের পক্ষে শুনানি করেন। শুনানিতে তিনি বলেন, “পল্টনে বিএনপির শান্তিপূর্ণ সমাবেশ ছিল। পুলিশের অনুমতি নিয়ে সমাবেশ করা হয়। কিন্তু আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, সরকারের বিভিন্ন এজেন্সি সমাবেশ পণ্ড করে দেয়। তাদের হামলায় কয়েকজন মারা যায়। পুলিশও মারা যায়। অনেকে মারাত্মক আহত হয়। ঢাকা বারের শতাধিক আইনজীবীও আহত হয়। আসামির ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে। সর্বোচ্চ রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থনা করছি।”

আদালতে সোহাইলের পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না। তার কিছু বলা আছে কি না জানতে চান আদালত। তখন আদালতকে সোহাইল বলেন, “ঘটনার সময় তো আমি চট্টগ্রাম বন্দরে ছিলাম, ঢাকায় ছিলাম না।”

পরে আদালত তার তিনদিনের রিমান্ডের আদেশ দেন। 

এরপর ওমর হত্যা মামলায় আনিসুল হক, শাজাহান খান, সালমান এফ রহমানের রিমান্ডের বিষয়ে শুনানি হয়।

শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষে ওমর ফারুক বলেন, “আন্দোলনের সময় পুলিশের গুলিতে সবচেয়ে বেশি লোক যেসব জায়গায় নিহত হয়েছে তার মধ্যে যাত্রাবাড়ী  অন্যতম। আন্দোলনের পর যখন যাত্রবাড়ী থানা অবমুক্ত করা হয়, সেখানে ১৮টি লাশের স্তূপ দেখা যায়। আসামিরা ফ্যাসিস্টের অন্যতম সহযোগী। তাদের রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থনা করছি।”

শাজাহান খানের পক্ষে তার আইনজীবী আরিফ তালুকদার রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। তবে আনিসুল হক এবং সালমান এফ রহমানের পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না। পরে আদালত প্রত্যেকের দুইদিনের রিমান্ড আদেশ দেন। এরপর ঢাকা-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মনিরুল ইসলাম মনুর দুই মামলায় ১০ দিনের রিমান্ডের বিষয়ে শুনানি হয়। 

রাষ্ট্রপক্ষে ওমর ফারুক ফারুকী সর্বোচ্চ রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থনা করেন। মনুর পক্ষে তার আইনজীবী বলেন, “তিনি অসুস্থ। ২০২৪ সালের তার ওপেন হার্ট সার্জারি হয়। ২০২৫ সালে চোখের অপারেশন করেন। প্রয়োজনে তাকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ করা হোক।”

এ সময় মনিরুল ইসলাম মনু তার ওপেন হার্ট সার্জারির জায়গা দেখান। আসামির অসুস্থতার কথা আদালতকে জানান। পরে আদালত রিটন হত্যা মামলায় আদালত তার একদিনের রিমান্ডের আদেশ দেন। তবে রাসেল হত্যা মামলায় তার রিমান্ড আবেদন নামঞ্জুর করেন।

সাজেদুর রহমান ওমর হত্যা মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত ২১ জুলাই দুপুর আড়াইটার দিকে যাত্রাবাড়ী থানাধীন কাজলা ফুটওভার ব্রিজের নিচে ছাত্র-জনতার সঙ্গে আন্দোলনে অংশ নেন সাজেদুর রহমান ওমর। বিকেলে আসামিদের আক্রমণে মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৪ আগস্ট মারা যান তিনি। এ ঘটনায় ৩ জানুয়ারি যাত্রাবাড়ী থানায় সৈয়দ তানভীর আহমেদ সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৮১ জনকে আসামি করে মামলা করেন।

বদরুল ইসলাম সায়মনকে হত্যাচেষ্টার মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর শেখ হাসিনা সরকারের গুম, খুন, নিপীড়ন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে সমাবেশ আয়োজন করা হয়। এতে দেশের সব রাজনৈতিক দলের ঐকমত্যের ভিত্তিতে বিএনপি ও গণ অধিকার পরিষদসহ অন্যান্য সমমনা রাজনৈতিক দল মহাসমাবেশের ডাক দেয়। ভুক্তভোগী গণ অধিকার পরিষদের কর্মী বদরুল ইসলাম সায়মনও সমাবেশে অংশ নেন। শান্তিপূর্ণ সমাবেশে আসামিরা অতর্কিতভাবে হামলা করে। এ সময় আসামিদের ছোড়া এলোপাতাড়ি গুলিতে সায়মন গুলিবিদ্ধ হন। তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়। দীর্ঘদিন চিকিৎসা নেন তিনি। এ ঘটনায় গত ২৯ এপ্রিল ভুক্তভোগী বদরুল ইসলাম সায়মন বাদী হয়ে রাজধানীর পল্টন মডেল থানা হত্যাচেষ্টা মামলা করেন। মামলায় শেখ হাসিনাসহ ২৪৫ জনকে আসামি করা হয়।

রিটন উদ্দিন ও রাসেল হত্যা মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত ৫ আগস্ট যাত্রাবাড়ী থানার সামনে গুলিবিদ্ধ হন রিটন উদ্দিন। হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। একইদিন সকাল ৮ টার দিকে যাত্রাবাড়ী ফুটওভার ব্রিজের নিচে গুলিবিদ্ধ হন রাসেল। পরে তিনিও মারা যান।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫