তথ্য ফাঁস
নিরাপরাধ আফগানদের হত্যা করে অস্ট্রেলীয় সেনা

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১৯ নভেম্বর ২০২০, ১০:৩৭

দীর্ঘদিন পর সত্য সামনে এলো। আফগানিস্তানের নিরাপরাধ নাগরিকদের হত্যা করেছে অস্ট্রেলিয়ার সেনা। অস্ট্রেলিয়ার এলিট আর্মির আফগান ফাইলে রয়েছে এমন ৩৯টি ঘটনার তথ্য।
যুদ্ধে নয়, ঠান্ডা মাথায় সাধারণ আফগান ও যুদ্ধবন্দিদের হত্যা করেছিল অস্ট্রেলিয়ার এলিট আর্মি। সম্প্রতি সে কথা স্বীকার করেছে অস্ট্রেলিয়ার সেনা। সেনাবাহিনীর উচ্চপদস্থ এক কর্মকর্তা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ঘটনার জন্য তারা অত্যন্ত দুঃখিত। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে ও দোষীরা শাস্তি পাবেন।
২০০২ সালে অস্ট্রেলিয়ার সেনা আফগানিস্তানে গিয়েছিল। ন্যাটো বাহিনীর হয়ে আফগানিস্তানে দীর্ঘ দিন লড়াই করেছে তারা। যে ঘটনার কথা বলা হচ্ছে, ২০০৫ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে সেই ঘটনাগুলো ঘটেছে বলে সেনাবাহিনী সূত্রে জানানো হয়েছে।
বস্তুত ঘটনাগুলো কোনোদিন জনসমক্ষে আসতোই না। বছরকয়েক আগে অস্ট্রেলিয়া সেনাবাহিনীর সদর দফতর থেকে কিছু ফাইল ফাঁস হয়ে যায়। আফগান ফাইল নামে সংবাদমাধ্যমে উঠে আসে তার তথ্য। তাতেই দেখা যায়, সাধারণ মানুষের উপর কীভাবে অত্যাচার চালিয়েছিল অস্ট্রেলিয়ার এলিট ফোর্সের কিছু সেনা। তারপরেই তদন্ত শুরু হয় এবং সত্য প্রকাশ্যে আসে।
অস্ট্রেলিয়া এলিট আর্মির উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জেনারেল অ্যাঙ্গুস ক্যাম্পবেল জানিয়েছেন, অন্তত ৩৯ জন সাধারণ আফগানকে হত্যা করেছিল সেনাবাহিনী। নিহতদের কেউ সাধারণ চাষী, কেউ শিক্ষক। যুদ্ধের সাথে তাদের কোনো সম্পর্কই ছিল না। অস্ট্রেলিয়া পুলিশের ইনস্পেক্টর জেনারেল এই ঘটনার তদন্ত করেছেন।
তিনি জানিয়েছেন, ২০০৫ সাল থেকে ২০০৯ পর্যন্ত লাগাতার এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে অস্ট্রেলিয়ার সেনা। এত বড় নীতিহীনতার অভিযোগ এর আগে অস্ট্রেলিয়ার সেনার বিরুদ্ধে ওঠেনি। দোষীদের কঠোর শাস্তি দেয়া হবে।
তদন্তে জানা গেছে, দোষী সেনা অফিসাররা একাধিক যুদ্ধবন্দির উপরেও অত্যাচার চালিয়েছেন। বন্দিদের উপর অত্যাচার চালিয়ে খুন করে ভুয়া রিপোর্ট লেখা হয়েছে। সেখানে দেখানো হয়েছে, যুদ্ধক্ষেত্রে মৃত্যু হয়েছে ওই ব্যক্তিদের। যুদ্ধক্ষেত্রই নয়, এমন বহু জায়গায় সাধারণ মানুষের উপর অত্যাচার চালানো হয়েছে ও খুন করা হয়েছে। মোট ২৩টি ঘটনায় ৩৯ জনকে এভাবে খুন করা হয়।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০১২ ও ১৩ সালে সব চেয়ে বেশি এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে। এখনো পর্যন্ত মোট ১৯ জন অফিসারকে এই ধরনের ঘটনার সাথে যুক্ত থাকার অভিযোগে চিহ্নিত করা হয়েছে। সম্পূর্ণ রিপোর্ট প্রকাশিত হলে তাদের বিচার পর্ব শুরু হবে।
ক্যাম্পবেল জানিয়েছেন, সকলকেই অস্ট্রেলিয়ার সেনাবাহিনীর আইন অনুযায়ী শাস্তি ভোগ করতে হবে।
শুধু অস্ট্রেলিয়ার সেনা নয়, যুক্তরাষ্ট্রসহ একাধিক দেশের সেনার বিরুদ্ধে এই ধরনের অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে একাধিক মানবাধিকার সংস্থা এই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করছে। কিন্তু কোনো সেনাই এতদিন পর্যন্ত এসব অভিযোগের গুরুত্ব দেয়নি। -ডয়চে ভেলে