বৈদেশিক মুদ্রা। ছবি: সংগৃহীত
২০২১-২২ অর্থবছরে মাথাপিছু বৈদেশিক ঋণ ছিল ৫৫৮ ডলার। প্রতি ডলার সমান ১০৫ টাকা ধরে এর পরিমাণ দাড়ায় প্রায় ৫৮ হাজার ৫০০ টাকা। দেশের মাথাপিছু বৈদেশিক ঋণ গত ৭ বছরে আগের তুলনায় দ্বিগুণ হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যানে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যমতে ২০২০-২১ অর্থবছরে মাথাপিছু বৈদেশিক ঋণ ছিল ৪৮২ ডলার। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে দেশের মাথাপিছু বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ ছিল ২৫৭ ডলার।
গত অর্থবছরে দেশের মোট বৈদেশিক ঋণ ছিল ৯৫ দশমিক ২৩ বিলিয়ন ডলার, যা ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ছিল ৪১ দশমিক ১৭ বিলিয়ন ডলার।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, দেশে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে সরকার রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্র, ঢাকা মেট্রোরেল, মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর ও বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং কর্ণফুলী টানেলসহ বিদেশি অর্থায়নে বেশ কয়েকটি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এর মধ্যে রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের জন্য বৈদেশিক ঋণ প্রায় ১২ বিলিয়ন ডলার। এ কারণে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ ব্যাপকভাবে বেড়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখনো আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের সরকারি খাতের ঋণ ও জিডিপি অনুপাতের সীমার নিচেই আছে। জিডিপির ৪০ শতাংশ পর্যন্ত বৈদেশিক ঋণ নেওয়ায় কোনো ঝুঁকি নেই।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১-২২ অর্থবছরে সরকারি খাতে বৈদেশিক ঋণ ও জিডিপির অনুপাত ছিল ১৪ দশমিক ৯ শতাংশ।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, কর আদায় করতে না পারায় সরকারকে বেশি ঋণের আশ্রয় নিতে হচ্ছে। আর এ অবস্থা চলতে থাকলে আগামী ৪ থেকে ৫ বছরের মধ্যে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে।
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, বাজেট মেটাতে অর্থায়নের বড় অংশই দেশীয় ঋণ। বিদেশি সহায়তা বাড়ানোর ওপর জোর দেন তিনি।
তিনি বলেন, ঋণ নির্ভরতা কমানোর জন্য রাজস্ব আয় বাড়াতে হবে। এক্ষেত্রে রাজস্ব খাতে বিভিন্ন সংস্কার জরুরি।
পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুরের মতে, সরকার ঠিকমতো ঋণ ব্যবস্থাপনা করতে পারছে না বলেই এর দায় নিতে হচ্ছে জনগণকে। তুলনামূলকভাবে বিদেশি ঋণ অনেক সাশ্রয়ী। কিন্তু সরকার সহজ পথ হিসাবে বেছে নেয় বেশি সুদের অভ্যন্তরীণ উৎসকে। এতে আর্থিক খাতে চাপ বেড়ে যায়।