Logo
×

Follow Us

বাংলাদেশ

অভিভাবকহীন শেরপুরের মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভ!

Icon

শেরপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৫ মার্চ ২০২০, ১০:৩৪

অভিভাবকহীন শেরপুরের মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভ!

শুধুমাত্র বিশেষ সময়েই স্মরণ করা হয় শেরপুরের মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভটি। এছাড়া পুরো বছর জুড়ে থাকে অনেকটা অযত্ব-অবহেলায়। 

চলছে স্বাধীনতার মাস। আর এ সময়েও ওই স্মৃতিস্তম্ভে চলছে নানা অসামাজিক কর্যকলাপ। যেন দেখার কেই নেই। নানা বিভাগের সাথে কথা বলে প্রকৃত দেখভাল করার দায়িত্ব কার বা অভিভাবককে তা খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

২০০৪ সালের ২ ডিসেম্বর গণপুর্ত বিভাগ স্মৃতিস্তম্ভটি নির্মার্ণের পর তৎকালীন মুক্তিযোদ্ধা বিষয়কমন্ত্রী অধ্যাপক রেজাউর করিম উদ্বোধন করেন। এরপর থেকে প্রতি বছর স্বাধীনতা ও বিজয় দিবসে শহীদদের স্মরণে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয় এই মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভে। এতে একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় জেলার শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের নামের তালিকাও রয়েছে। 

জাতীয় দিবস ছাড়াও এ স্মৃতিস্তম্ভের বেদিতে চৈত্র সংক্রান্তিসহ বিভিন্ন সামাজিক সংস্কৃতি সংগঠনের আয়োজনে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। স্মৃতিস্তম্ভের পাশেই রয়েছে জেলা শিল্পকলা একাডেমী। স্মৃতিস্তম্ভ সংলগ্ন পৌর শিশু কর্নারের ওয়াইফাই ফ্রি জোন তৈরি করে দেয়া হয়েছে। ফলে ওই এলাকায় বসে ফ্রি ওয়াইফাই ব্যবহারের সুযোগ পাওয়া যায়। স্তম্ভের সোজা সামনে রয়েছে মাইক্রোবাসস্ট্যান্ড। ফলে এখানে সকাল থেকে মধ্য রাত পর্যন্ত চলে নানা বয়সের মানুষের আড্ডা।

এ আড্ডার ফাঁকে সম্প্রতি শুরু হয়েছে নানা অসাজিক কর্মকাণ্ড। স্মৃতিস্তম্ভের সাথেই অবৈধভাবে স্থানীয় এক ব্যক্তি ঘর নির্মাণ করে পান-বিড়ির দোকান গড়ে তুলেছে। ফলে সারাদিন ও মধ্যরাত পর্যন্ত এসব আড্ডা আরো জমে উঠেছে। এর পাশাপাশি স্মৃতিস্তম্ভের উপর সারদিন তার দোকানের আগুন জ্বালানোর লাকড়ি ও গাছের পাতা শুকানোর জন্য ব্যবহার করে স্মৃতিস্তম্ভটিকে ময়লার ভাগাড়ে পরিণত করছে। 

এরফাঁকে এক শ্রেণীর যুবক সিগারেট ও গাজার আসর ও কেরাম বোর্ড খেলার নাম করে জুয়ার আসর বসিয়েছে। উঠতি বয়সের যুবকরা ফ্রি ওয়াইফাই জোন পেয়ে বাড়ি যেন আর যেতে চায় না তারা। ফ্রি ইন্টারনেট এর নেশায় বুদ হয়ে পড়ে থাকে সকাল-সন্ধ্যা এমনকি মধ্যরাত পর্যন্ত। ফলে শহীদ বেদির সম্মানহানি ঘটাচ্ছে বলে স্থানীয় সচেতন মহল মনে করেন।

ওই দোকানি জানান, পৌরসভার অনুমতি নিয়ে স্মৃতিস্তম্ভের দেখাশোনা করি আর আমার দোকান চলাই। 

তবে এ বিষয়ে পৌরমেয়র গোলাম কিবরিয়া লিটন বলেন, ওই দোকনি মিথ্যা কথা বলেছে, আসলে ওই স্মৃতিস্তম্ভের দায়িত্ব কেন্দ্রীয় সরকারের। ওই নির্মাণ করেছে গণপূর্ত বিভাগ। বিভিন্ন দিবসের সময় জেলা প্রশাসন থেকে আমাদের চিঠি দিয়ে জানানো হলে আমরা পরিস্কার করে দেই মাত্র। ওই স্মৃতিস্তম্ভের মালিকানা বা দেখাশোনার দায়িত্ব আমাদের নয়, তাই ওখানে অবৈধ দোকান বসানোর বিষয়টি দেখারও আমাদের দায়িত্বে নয়।

এ বিষয়ে গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, স্মৃতিস্তম্ভ আমরা নির্মাণ করেছি এটা ঠিক, তবে এর দেখাশোনা সম্ভবত পৌরসভা করেন। কারণ আমি দেখেছি বিভিন্ন জাতীয় দিবসে ধোয়া-মোছার কাজ তারাই করে থাকে। আর আনুষ্ঠানিকভাবে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের পর হস্তান্তর হয়েছে কিনা তাও আমি বলতে পারছি না। তবে জমির মালিক যদি জেলা প্রশাসন হয় তবে তারা এ বিষয়ে বলতে পারবে।  

এ স্মৃতিস্তম্ভের প্রকৃত অভিভাবক কে এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক আনারকলি মাহবুব বলেন, কাগজে কলমে স্মৃতিস্তম্ভের মালিকানা বা দেখভাল করার দায়িত্ব কার বিষয়টি জেনে পরে জানাবো।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫