Logo
×

Follow Us

বাংলাদেশ

২২ বছরেও শেষ হয়নি রমনা বটমূলে বোমা হামলার বিচার

Icon

আদালত প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৪ এপ্রিল ২০২৩, ১০:২০

২২ বছরেও শেষ হয়নি রমনা বটমূলে বোমা হামলার বিচার

২০০১ সালে রমনা বটমূলে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বোমা হামলা করা হয়। আজও মেলেনি বিচার। ছবি: সংগৃহীত

২২ বছর পেরিয়ে গেছে রমনা বটমূলে বোমা হামলা হয়েছে। তবুও কেউ জানেন না কবে এ হামলার বিচার হবে। 

বাংলা নববর্ষে ২০০১ সালের ১৪ এপ্রিল পহেলা বৈশাখের উৎসবে হঠাৎই বিকট শব্দে বিস্ফোরণ হয়। এমন শব্দে দিগ্বিদিক ছুটতে থাকে মানুষ। বোমা হামলায় ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান ৯ জন। আর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় আরও একজনের। 

ওই ঘটনায় আদালতে দুটি মামলা হয়। একটি হত্যা মামলা, অন্যটি বিস্ফোরক আইনে করা মামলা। মামলা দুটির মধ্যে বিস্ফোরক আইনের মামলাটির বিচার এখনও নিম্ন আদালতেই সম্পন্ন হয়নি। আর হত্যা মামলার বিচার নিম্ন আদালতে সম্পন্ন হলেও উচ্চ আদালতে এর ডেথ রেফারেন্স শুনানির অপেক্ষায় আছে। নিম্ন ও উচ্চ আদালতে নিষ্পত্তির অপেক্ষায় থাকা মামলা দুটি কবে নিষ্পত্তি হবে তা কেউ জানেন না।

বিচারিক আদালতে হত্যা মামলাটির রায় হয় ঘটনার ১৩ বছর পর ২০১৪ সালে। রায়ে ৮ জনের ফাঁসি ও ৬ জনের যাবজ্জীবনের আদেশ দেন নিম্ন আদালত। তবে এরপর ৯ বছর পেরিয়ে গেলেও হাইকোর্টে আসামি পক্ষের আপিল ও ডেথ রেফারেন্স শুনানি হয়নি। 

উচ্চ আদালতে শুনানির অপেক্ষায় থাকা মামলাটির বিষয়ে জানতে চাইলে অ্যাটর্নি জেনারেল আবু মোহাম্মদ (এএম) আমিন উদ্দিন বলেন, মামলাটি শুনানির অপেক্ষায় আছে। ডেথ রেফারেন্স মামলা ধারাবাহিকভাবে হাইকোর্টে শুনানির জন্য উঠছে। এটি যখন শুনানির জন্য উঠবে, তখন রাষ্ট্র পক্ষে আমরা শুনানি করব। 

তিনি আরও বলেন, স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় যখন মামলাটি শুনানির জন্য আসবে, তখনই শুনানি করা হবে। 

ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মো. আবদুল্লাহ (আবু) বলেন, মামলাটি যুক্তিতর্কের জন্য অপেক্ষমাণ আছে। কিন্তু প্রায় এক বছর যুক্তিতর্কের অপেক্ষায় থাকার বিষয়টি মনে করিয়ে দিলে তিনি বলেন, সংশ্লিষ্ট দপ্তরে খবর নেব, কেন এত সময় লাগছে।

ওই ঘটনায় করা মামলা দুটি নিষ্পত্তি কবে হবে তার কোনো ধারণা দিতে পারেননি আসামি পক্ষের আইনজীবীও। আসামি পক্ষের আইনজীবী ফারুক আহম্মেদ বলেন, এই মামলায় এখন তো আর যাই না। কেন যান না? আসামি পক্ষে অন্য আইনজীবী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে? মামলাটি ছেড়ে দিয়েছেন কি না? এসব প্রশ্নের জবাবে আইনজীবী না সূচক জবাব দিয়ে বলেন, বিস্ফোরণ আইনে করা মামলাটি নিম্ন আদালতে কোন পর্যায়ে আছে জানি না। আর হত্যা মামলায় নিম্ন আদালতের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডের রায়ের ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের অনুমোদনের জন্য) শুনানি এখনও হয়নি।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই মামলায় বারবার তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন, সম্পূরক অভিযোগপত্র দাখিল, বারবার তাগিদ দেওয়া সত্ত্বেও তদন্ত কর্মকর্তাদের আদালতে সাক্ষ্য দিতে না আসার কারণে বিচার শুরু হতেই দেরি হয়েছে। বিস্ফোরক আইনে করা মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হলেও যুক্তি উপস্থাপনের অপেক্ষায় আছে।

প্রসঙ্গত ২০১৪ সালের ২৩ জুন ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ রুহুল আমিন রমনার বটমূলে বোমা হামলার ঘটনায় করা হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায়ে ৮ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয় আরও ৬ জনকে। 

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ৮ আসামি হলেন- মুফতি আবদুল হান্নান, মাওলানা আকবর হোসেন, আরিফ হাসান সুমন, মাওলানা তাজউদ্দিন, হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম বদর, মাওলানা আবু বকর ওরফে হাফেজ সেলিম হাওলাদার, মাওলানা আবদুল হাই ও মাওলানা শফিকুর রহমান।

আর যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- শাহাদাত উল্লাহ জুয়েল, মাওলানা সাব্বির, শওকত ওসমান ওরফে শেখ ফরিদ, মাওলানা আবদুর রউফ, মাওলানা ইয়াহিয়া ও মাওলানা আবু তাহের।

উল্লেখ্য, ২০০১ সালের ১৪ এপ্রিল রমনা বটমূলে বর্ষবরণের অনুষ্ঠানে বোমা হামলার ঘটনায় নীলক্ষেত পুলিশ ফাঁড়ির সার্জেন্ট অমল চন্দ্র ওই দিনই রমনা থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে মামলা দুটি করেন। মামলার প্রায় ৮ বছর পর ১৪ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছিলেন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) পরিদর্শক আবু হেনা মো. ইউসুফ।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫