Logo
×

Follow Us

বাংলাদেশ

বাংলাদেশের প্রশংসা করে মার্কিন কংগ্রেসে প্রস্তাব

Icon

কূটনৈতিক প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৫ এপ্রিল ২০২৩, ০৮:১০

বাংলাদেশের প্রশংসা করে মার্কিন কংগ্রেসে প্রস্তাব

মার্কিন কংগ্রেস। ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন কংগ্রেসে বাংলাদেশের প্রশংসা করে একটি প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছে। প্রস্তাবে বাংলাদেশের অভ্যুদয় থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত গত পাঁচ দশকে আর্থসামাজিক নানা অগ্রগতির কথা তুলে ধরা হয়েছে।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫২তম বার্ষিকী উপলক্ষে সম্প্রতি প্রস্তাবটি মার্কিন কংগ্রেসে তোলা হয়। কংগ্রেসনাল বাংলাদেশ ককাসের কো-চেয়ার হিসেবে প্রস্তাবটি উপস্থাপন করেন সাউথ ক্যারোলিনার রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যান জো উইলসন।

জো উইলসন ২০০১ সাল থেকে সাউথ ক্যারোলিনা রাজ্যের দ্বিতীয় কংগ্রেসনাল ডিস্ট্রিক্ট থেকে প্রতিনিধি পরিষদের একজন আইনপ্রণেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এর আগে ১৯৮৫ থেকে ২০০১ পর্যন্ত একই রাজ্যের ২৩তম ডিস্ট্রিক্ট থেকে প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য ছিলেন তিনি।

জো উইলসনের উত্থাপিত প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের উন্নয়ন ও আর্থসামাজিক অগ্রগতির প্রশংসা করা হয়েছে। প্রস্তাবটি উত্থাপনকালে কংগ্রেসম্যান উইলসন এখন থেকে ৫১ বছর আগে ১৯৭২ সালের ৪ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়ার দিনটির কথা স্মরণ করেন।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে দীর্ঘ নয় মাসব্যাপী মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে পাক হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসরদের নারকীয় হত্যাযজ্ঞের কথা প্রস্তাবে উল্লেখ করা হয়। সেই সঙ্গে বলা হয়, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ ছিল গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার সংগ্রাম।

এতে আরও উল্লেখ করা হয়, স্বাধীনতার পর গত পাঁচ দশকে বাংলাদেশ বিভিন্ন খাতে ব্যাপক উন্নয়ন ও অগ্রগতি সাধন করেছে। বিশ্বের দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ একটি। ২০২১ সালে যার মাথাপিছু জিডিপি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৪৫৭ মার্কিন ডলারে, যা এর প্রতিবেশী দেশগুলোর চেয়ে অনেক বেশি। 

প্রস্তাবে আরও উল্লেখ করা হয়, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশের অর্থনীতি ৯ বিলিয়ন থেকে ৪৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে। গড় আয়ু ৪৭ বছর থেকে বেড়ে ৭৩ বছর হয়েছে এবং সাক্ষরতার হার ৭৫ শতাংশের বেশি।

আরও বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ খাদ্য উৎপাদন, দারিদ্র্য হ্রাস, উন্নত স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, শিক্ষা, নারীর ক্ষমতায়ন, দুর্যোগ প্রশমনসহ নানা আর্থসামাজিক খাতে তাৎপর্যপূর্ণ অগ্রগতি করেছে।

প্রস্তাবে বলা হয়, বাংলাদেশ সফলভাবে একটি মধ্যপন্থী মুসলিম সমাজ ব্যবস্থা বজায় রেখেছে, উগ্রবাদ দমন করেছে ও দেশটির জনগণ কর্তৃত্ববাদী শাসনের পরিবর্তে গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের প্রতি সমর্থন বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছে। 

প্রস্তাবে আরও বলা হয়, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক নিরাপত্তা, সন্ত্রাসবাদ দমন ও জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে ব্যাপক সহযোগিতার ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের জন্য বৃহত্তম রফতানি বাজার ও বাংলাদেশে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগের একটি বৃহত্তম উৎস। বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক, বাণিজ্যিক ও আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা সহযোগিতার মাধ্যমে মার্কিন অর্থনীতিতেও অবদান রেখে চলছে। 

রেজুল্যুশনে বলা হয়, প্রতিবেশী মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সংঘটিত গণহত্যার মুখে পালিয়ে আসা ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় প্রদানের মাধ্যমে বাংলাদেশ যে উদারতার পরিচয় দিয়েছে, মার্কিন জনগণ সেটাকে শ্রদ্ধা জানায়। মিয়ানমারসৃষ্ট এই সংকট মোকাবিলায় মানবিক সহায়তা বাবদ সবচেয়ে বেশি অর্থ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যা প্রায় ২ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি।

এতে আরও বলা হয়, বিশ্বব্যাপী শান্তি প্রতিষ্ঠায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম প্রধান সেনা প্রেরণকারী দেশ যা আমেরিকার জনগণের কাছে সর্বদা প্রশংসা অর্জন করেছে। উভয় দেশই অর্জিত সমৃদ্ধি বিনিময়ের জন্য তাদের জনগণের সাথে জনগণ ও সরকারের সাথে সরকারের সম্পর্ক আরও উন্নত করতে চায়। 

প্রস্তাবমতে, ১০ কোটি ডোজেরও বেশি করোনা ভ্যাকসিন প্রদানের জন্য বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে। এতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশের জনগণ যখন স্বাধীনতার ৫১ বছর উদযাপন করছে, তখন আমেরিকার জনগণ বাঙালি জাতির ভূয়সী প্রশংসা ও স্বীকৃতি  প্রদান করে।

বর্তমান ও ভবিষ্যতে পারস্পরিক অর্থনৈতিক, সামাজিক ও জাতীয় নিরাপত্তার লক্ষ্য অর্জনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের গঠনমূলক অংশীদার থাকার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে বলেও রেজুল্যুশনে মন্তব্য করা হয়েছে।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫